আলোচনাটি আমার একান্তই ব্যক্তিগত চিন্তা ও মতামত। কিন্তু বলে রাখা ভালো, বাংলা কবিতা'য় কারো সাথে আমার কোন ব্যক্তিগত শত্রুতা নেই। সুতরাং ত্রুটি ক্ষমা-সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।
লক্ষণীয়, বাংলা কবিতায় বিদেশী শব্দের আধিপত্য ইদানিং কালের কবিদের মধ্যে প্রকট। আসরের অনেক গুণী কবিগণও তাদের কবিতায় নিঃসংকোচে ব্যবহার করছেন বিদেশী শব্দ। বিদেশী শব্দের ব্যবহার আমি দুষের মনে করছিনা কিন্তু কবিতায় বিদেশী শব্দের ব্যবহার আমার কাছে শব্দদূষ বা ভাষার বস্ত্র হরণ বলেই মনে হয়। বাংলা ভাষার সাহিত্যে বিদেশী শব্দের উপস্থিতি গল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ, ভ্রমণ, আলোচনাতেই মানায়। কেননা সেখানে স্থান, কাল, পাত্র ভেদে স্রষ্টার ভাব বা কাহিনীর পরিস্ফুটনের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। আমরা জানি এবং মানি করেছি এবং আজ অবধি করছি নির্দিষ্ট কয়েকটি ভাষা ছাড়া প্রত্যেকটি ভাষা ভাষীরই নিজস্ব ভাষা ছাড়া আরো দু'একটি ভাষা জানা আজকের জামানায় বাধ্যতামূলক। সেটা বহির্বিশ্বের সাথে যোগাযোগের জন্যেই হোক বা নিজের দৈনন্দিন চলার যাত্রাকে সুগম করার প্রয়াসেই হোক। যদিও শুনতে খারাপ শোনায় তারপরেও বলছি, আমরাও ওই ভাষাগুলোকে ধারণ করছি শার্ট-পাঞ্জাবির নিচে গেঞ্জি বা প্যান্ট-পায়জামার নিচের অধোবস্ত্রের মতো।
আমার জানা মতে পৃথিবীতে ভাষার জন্য আন্দোলন এই একটি মাত্র ভাষার জন্যই হয়েছে, আর তা হলো বাংলা ভাষা। যেখানে পৃথিবীর সকল বাংলাভাষীর অকৃপণ সমর্থন ছিল। যা অন্য আর কোনো ভাষার জন্য হয়নি। যে ভাষা আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় বিশ্ব মানচিত্রে একটি দেশের জন্ম হয়েছে তা হলো বাংলা ভাষা।
আমার এই আলোচনার সূত্রপাত এই কারণে যে, কবিগণ স্পষ্টভাষী, সাহসী, আপন ভাষা ও সংস্কৃতির ধারক। আর তাদের দ্বারাই যদি ভাষার বস্ত্র হরণ হয় তবে প্রজন্মান্তরে ভাষার মূল ভীতটা অটুট থাকবে বলে আমার মনে হয়না। যুগে যুগে ভাষা বিজ্ঞানীগণ গবেষণার জন্য কবিগণের অমর সৃষ্টিকে অবলম্বন করেছেন। ইতিহাস বিদগন জেনেছেন হাজারো শৌর্যবীর্যের ইতিহাস। তাই, ভাষার প্রতি কবি লেখকগণের আরো সংবেদনশীল হওয়া উচিত, জানিনা আমার সাথে আপনারা একমত হবেন কি না।