খুব ভোরে বারান্দায় বসে মনচোরা আলোতে আকাশের দিকে তাকিয়ে
মনে হলো পৃথিবী আর আমি একই সাথে জন্মেচ্ছি
তারপর দেহ বদলে বদলে আমি বারবার ফিরে এসেছি পৃথিবীতে।

জলে নিজের চেহারা দেখে পৃথিবীতে যে পুরুষটি প্রথম হেসে উঠেছিলো সেইজন আমি
আমি সেই পুরুষ যে বুকের কথা না বলতে পেরে চাঁদে আগুন ধরা আলোর দিকে তাকিয়ে পৃথিবীতে প্রথম বিষণ্ণ হয়েছিল
সমুদ্রের জলে পা ডুবিয়ে যে পুরুষ পৃথিবীতে প্রথম বিরহে কেঁদেছে সেটাও আমি
'ভালোবাসি' বলতে পারা পৃথিবীর প্রথম পুরুষটি আমি।

যতবার দেহ বদলে পৃথিবীতে আসি
কখনো একজীবন সাদা স্বপ্নের ভারে কবি হওয়ার আশায় ছটফট করে মরি
কখনোবা কালো স্বপ্নের ভারে শরীর জুড়ে
শ্যাওলা জন্মাতে জন্মাতে মুখোশের আড়ালে দানব পালি।

প্রতিবার যেসব দেহে আশ্রয় নিয়েছিলাম
সেইসব দেহে মাটি হওয়ার আগে কিছু কান্না আর দীর্ঘশ্বাস পাহাড়ে জমা রেখে যায়
আবার যখন নতুন দেহে ফিরি সেইসব কান্না আর দীর্ঘশ্বাস নতুন পোষাকে আমার বুকে ফিরে
প্রতিবারই ভোরের মনচোরা আলোয় আকাশের দিকে তাকালে টের পাই
বুকের মাঝে জলকনার মতো উড়ে বেড়াচ্ছে আমার আসন্ন মৃত্যুদিন।

খুব ভোরে এই মনচোরা আলোতে আকাশের দিকে তাকালে
আমার মতো আপনারও বুকের ভিতরে আবোল তাবোল ফিসফিসানি শুরু হতে পারে,
এইসব আবোল তাবোল ফিসফিসানি বুক থেকে ঠিকমতো ঢালতে পারলে
এক একটা কবিতা হয়ে যায় প্রায়ই।

আপনার কবি হওয়ার ইচ্ছে না থাকলে
বুকের এইসব ফিসফিসানিতে কান দেবেন না
যদি একবার ভুলেও শুনে ফেনলেন এইসব ফিসফিসানি
তবে আপনি বারবার দেহ বদলে জন্মাতে চাইবেন
যতক্ষণ না আপনি একটা জীবন কবি জীবন পাবেন।
————-
র শি দ  হা রু ন
২১/০৩/২০২৩