চিরকাল আমাদেরই কেন বোবা আর অন্ধ হয়ে থাকতে হবে!
শুধু আয়নার সাথেই কথা হবে কেন?
অসহায় লাগে
খুব অসহায় লাগে
যখন আয়নায় নিজেকে দেখে
থুথু দিতে ইচ্ছে করে।

জন্মের পর থেকেই
আমরা কথা বলি বন্দি তোতা পাখির শেখানো বুলির মতো,
আমরা বেঁচে থাকি মাননীয়দের উচ্ছিষ্ট কুড়িয়ে,
মাননীয়দের রাজনৈতিক দাস হবার প্রতিযোগীতায় নিজের জীবন খরচ করে ফেলি।

দৃশ্য আর অদৃশ্য রাজনৈতিক সুতোর টানে
আমরা বোবা পুতুলের মতো নাচানাচি করি।
একদল মাননীয়  আনন্দিত উল্লসিত -তাদের হাতে এখন সুতোর নাটাই;
আরেক দল মাননীয়
রাতের আঁধারে ওৎ পেতে বসে আছে
কখন সুতোর মালিকানা ছিনিয়ে নিবে।

আমাদের নিয়তির সব কলমের কালির মালিকানা
এ‌ই সকল মাননীয়দের দখলে,
তাদের যা ইচ্ছে  
আমাদের ভাগ্যের খাতায়
তাই লিখে দেয় তারা -
আমরা নাচবো আর নাচবো
নাচতে নাচতে তাদের জন্য
আমাদের জীবন খরচ করে ফেলবো
-মূল্যহীন একজীবন।

আমরা যত নাচি ততই মাননীয়দের
মন খুশিতে ভরে ওঠে,
পকেট হয় ভারী ,
তাদের হাত আর বুক ক্ষমতার উল্লাসে মেহেদির রঙের মতো রং হয়।

আজকাল কষ্ট , ‌অপমান আর ক্ষুধার বদলে
আমাদের বুকে কেন যেন আগুন জ্বলে ওঠে,
সেই আগুন বুক থেকে চোখে চলে আসে!
জলের বদলে
চোখ থেকে আগুন ঝরে পড়ে মাটিতে।
সেই আগুনের তাপে পুড়তে পুড়তে
আমাদের দিন যায়
রাত চলে যায়,
একজীবন খরচ হয়ে যায়।
মাঝে মাঝে ফায়ার সার্ভিস হর্ন বাজাতে বাজাতে চলে আসে বুকে
স্বান্তনার জল ঢেলে দেয় বুকে,
স্বান্তনার জলে আগুন বেড়ে দিনদিন দ্বিগুণ হয়ে যায়,
সেই আগুনের ছবি তুলে সাংবাদিকরা বাহাবা নেয়।

দেশ বিদেশে বসে সকল মাননীয়গণ
সেই আগুনে আমাদের মাংস ঝলসে রাজনৈতিক বারবিকিউ পার্টি করে আর বলে -
‘চিয়ার্স
আগুনটা ভালো ছিল,
মাংসটা বড়ই স্বাদের
‌অনেকটা রাজ সিংহাসনের মতোই স্বাদ”।

মাননীয়গণ,
আমাদেরকে বন্দি করে রাখার খাঁচাও
যত্নের অভাবে ভেঙে পরে ছিল ‌অনেকদিন ধরে,
আপনারা খেয়ালও করেননি?
আজকাল সব বন্দি পাখি
নিজের বুকের আগুন
তার ডানায় ধরিয়ে এখন উডছে-
নিজেও পুড়ছে আর সব পুড়িয়ে দিচ্ছে।

মাননীয়গণ,
এই আগুনডানা ঝাপটানোর শব্দ
আপনারা  কি শুনতে পান?
এই আগুনের তাপ
আপনারা কি টের পান?
————-
র শি দ  হা রু ন
০২/০৮/২০২৪
মন্ট্রিয়াল, কানাডা