পঞ্চাশের পর থেকেই আর একা থাকা হয় না আমার।
নির্জনে অথবা বন্ধ ঘরে নিঃসঙ্গ হয়ে যখন কিছু ভাবতে শুরু করি
তখনই ফিসফিসানি শুরু হয় সেখানে।
আমার ছায়াটাও শরীর থেকে বের হয়ে এদিক- ওদিক ছুটোছুটি করে-
স্থির হয়ে বসে না।
সেই ফিসফিসানিতে পরিচিত মানুষের কন্ঠ ভেসে ওঠে-
মৃত বাবা- মা, দাদা-দাদি, চাচা আর আত্মীয় স্বজনের কত যে গল্প!
ভাতের গল্প,
গাছের গল্প,
মাছের গল্প,
টাকার গল্প,
সুখ দুঃখ আর কষ্টের গল্প।
কড়ই গাছের ছায়া-পড়া দাদার বাড়ির মরা পুকুরটার বুক চাপড়ানো কান্নার শব্দ,
অকালে চলে যাওয়া দু 'একজন বন্ধুর
ভরসার কথা,
মান অভিমানের কথা,
অর্থহীন কথা,
অপেক্ষার কথা।
ছোটবেলায় গলির মোড়ে শুয়ে থাকা কালো কুঁড়ে কুকুরটার মিছে ভয়ের ডাক,
বালকবেলার মাথায় লাল পাগড়ী পরা এক ফেরিঅলার হঠাৎ
“এই মিষ্টি কামরাঙ্গা, এই মিষ্টি কামরাঙ্গা” বলে আলসে দুপুরের ঘুম নষ্ট করা ডাক
আর চারিদিক ঘুরে বেড়ায় কিছু অপরিচিত হাহাকারের শব্দ।
আমার ছায়াটাও থেমে থেমে সবার সাথে গল্প করে,
ছায়াটাকে ফিরাতে বহু কষ্ট হয়
চলে যেতে চায় সবারই সাথে।
আমি জোর কর বুকের সাথে ধরে রাখি তাকে তখন,
আর সান্ত্বনা দিতে দিতে বলি,
“আর মাত্র কয়দিন,
আমরাও তাদের সাথেই থাকবো কিছুদিন পর থেকেই” ।
————
র সি দ হা রু ন
১৫/০৩/২০২৪
মন্ট্রিয়াল
কানাডা