সারাজীবন অন্য মানুষের জীবন ধার করে বেঁচে আছি!
আমার হাতের রেখায় ভিন্ন ভিন্ন মানুষের রেখার ছাপ ভেসে বেড়ায়,
আমার পায়ে অচেনা কারো বেমানান জুতো.
আমার চোখে রাস্তায় কুড়িয়ে পাওয়া অপরিচিত মানুষের চশমা,
আমার সারা শরীরে অন্য কারো পছন্দের কাপড়,
আমার মতো করে আমি কখনো কথা বলা শিখিনি।
আমার মুখে দিব্যি ফিট হয়ে যায় হরেক রকম মানুষের মুখ,
তাইতো আমার চালচলন,
কথাবার্তা,
ক্ষুধা,
স্বপ্ন,
মাথার চুলের স্টাইল
এমন কি আমার এই জীবন কখনোই আমার ছিলোনা।
এই ধার করা জীবনে শুধু একটা কাজই
নিজের জন্য করি,
মাঝে মাঝে নিজেকে খুঁজে বেড়াই।
ঢাকা শহরের অলিগলিতে নিজেকে খুঁজতে খুঁজতে
ইট পাথরের উঁচু বাড়ির ছাদ থেকে কখনো এক টুকরো ভেজা আকাশ,
একটা হলুদ ঘুড়ি,
একটা নিঃসঙ্গ ডাকবাক্স,
একটা গরম রুটি,
একটা বিষণ্ণ চড়ুই পাখি,
প্রিয় মানুষ,
কিছু বন্ধু,
রাজপথ দাবড়ানো কোন স্লোগান,
অথবা রাতের আকাশের চাঁদের ফকফকা আলো বুক পকেটে লুকিয়েছি।
খুঁজতে খুঁজতে হঠাৎ হঠাৎ দেখা হয়ে যায় নিজের সাথে একঝলক।
কোন চৌরাস্তার মোড়ে,
মিছিলে,
মানুষের ভীড়ে,
বিষণ্ণ বিকেল বেলায় নির্জন কোন মাঠে
অথবা রাস্তায় ভেসে যাওয়া বৃষ্টির জলে ।
কখনোই নিজেকে আটকাতে পারিনা!
কোথায় থাকে?
কি করে?
সুখে আছে না দুঃখে?
জানা হলো না
কাঁধে হাত রেখে একবারও গল্পও করা হয়নি আজও নিজের সাথে।
নিজেকে খুঁজতে খুঁজতে প্রতিদিনই অন্য কারো মতোই আমারও বয়স বাড়ছে।
——————
র শি দ হা রু ন
১৭/১১/২০২৩
মন্ট্রিয়াল, কানাডা