শ্রাবণ মাসের শেষে   গাঁয়ের উঠোন ঘেঁষে     ফুঁসছে নদী ভয়ঙ্করী রুপনারাণ ।
ছোট্টবেলার মত      না বুঝে আর অতশত    বলিনে-- বৃষ্টি পড়ে টাপুর টুপুর,
                                                                        নদে এল বান ।
                                  ফুঁসছে নদী রুপনারাণ । ফুঁসছে নদী রুপনারাণ ।
                                                                        
জষ্ঠিমাসের খরায়       রাখাল ধেনু চরায়       ওদিকে জেগে ওঠা ঘাসবিছানো চরে ;
এদিকেতে ছোট্ট ধারা   নিরীহ যেন গোবেচারা,    জানেই না কিছু--এমন ভঙ্গি করে ।
ডোবে না রে হাঁটুদু’টি ;     শিশুদের হুটোপুটি,      জল ছিটিয়ে শালিক পাখির চান ।
বৃষ্টি ঝরার সাথে        তালি দিয়ে দুই হাতে        বলেছি--বিষ্টি পড়ে টাপুর টুপুর,
                                                                              নদে এল বান ।
                                      ফুঁসেনি নদী রুপনারাণ । ফুঁসেনি নদী রুপনারাণ ।  
                                                          
এখন সে ফুলে ফুলে      পাড় ভাঙছে দুই কূলে,   গাঁয়ের পরে গাঁ একাই গিলে খায় ।
ছেলে-বুড়ো ভয়েতে চুপ,  দিবারাত্র ‘ঝপাস্ ঝুপ্-'    দুরুদুরু কাঁপে ছাতি আশংকায় ।
জমি-বাস্তুর সবটাই       এই আছে তো এই নাই ;  সঙ্গে রাস্তা মরাই ঠাকুর দালান ।
মনেতে আসেনা খুশি,      বৃষ্টি এলে ভাগ্য দুষি ।     বলিনে--বৃষ্টি পড়ে টাপুর টুপুর,
                                                                                নদে এল বান ।
                                          ফুঁসছে নদী রুপনারাণ । ফুঁসছে নদী রুপনারাণ ।  

বাপ-পিতামোর ভিটে--   নাই দেখা তার ফোঁটাছিটে, নাই তুলসিতলা রান্নাশালের চিহ্ণ ।
সবার মুখের সুখের হাসি  কেড়েছে নদী সর্বনাশী ;    সবাই আপন ভূমে বাস্তু হতে ছিন্ন ।
কেমনে বুঝাই শিশুটাকে, উদাস থাকে খেলার ফাঁকে--পাঠশালাটার ঘর ছিল যে ওইখান !
ঐ ছড়াটি তার অজানা,    বর্ষাতে মন মেলে না ডানা ;  বলেনা--বিষ্টি পড়ে টাপুর টুপুর,
                                                                                নদে এল বান ।
                                          ফুঁসছে নদী রুপনারাণ । ফুঁসছে নদী রুপনারাণ ।