পড়িয়া আসিল তো আজির বেলা--
অপস্রিয়মান গোধূলিরঙের মেলা ।
গাগরি আমার হয়েছে ভরা,
বিভঙ্গ কাঁকালে রয়েছে ধরা ।
পরণে নীলাম্বরী মোর রহিল ভিজে;
জানিনে আজি কাড়িয়া ল’বে কি যে ।
কদম্ব বীথিকার সুগন্ধিত সুধা
জাগালো প্রাণে কিসের ক্ষুধা !
ঘাটেতে শেষ খেয়াটির যাত্রীগুলি
ফিরিছে নিজ ঘরে, অঙ্গেতে ধূলি ।
পথের পথিক এদিকে তাকালো;
জ্বলিল আকাশে দীপের আলো ।
বাঁশিতে সুরে কি গান গাহো যে !
সিধে নয়নে কি চাহনি চাহো যে !
থরথর কাঁপিছে তন্বীতনুলতা--
হৃদয় জুড়িয়া এ কি ব্যাকুলতা !
কেন এ তালা বাঁধিয়া দিলে পায়ে ?
হায়, খুলিব তা কোন চাবির ঘায়ে ?
সমুখে মেঠোপথ রহিয়াছে খোলা--
তবুও পা দু’খানি যায় না তোলা ।
ললাটে উদিত স্বচ্ছস্বেদবিন্দুর
আঘাতে ধ্বস্ত সীমন্তে সিন্দুর ।
অধরে ক্ষণচকিত বিদ্যুতবাণ
করিছে অতলের পূর্ণ আহ্বান ।
পথ হারাবো কি বিমূঢ় সাঁঝে ?
মরিব কি আজি পথের মাঝে ?
জ্বালায়ে রাখিলে যে অগ্নিশিখা--
পতঙ্গ-মৃত্যু সেথায় ভাগ্যলিখা ।
তাই যদি হয় হোক--হে কবি,
মহান করিওগো এ নিষিদ্ধ ছবি ।