পাশের গাঁয়ের সত্যকাকা কভুও মিথ্যা বলেন না কো;
তাঁর ব্যাপারে দু’চার কথা বলি--শুনতে তুমি থাকো ।
ভীষণ তিনি খাদ্যরসিক--জ্ঞানও রাখেন, খাননা শুধু;
তিনি বলেন--খাওয়া ছাড়া জীবন হল মরুভূমির ধু ধু ।
কিন্তু ভুলেও যদি একবারটি বসেছো হে তাঁর পাশে--
ঘিলু ভরে বুঝতে সকল পারবে, নিদারুণ এক উল্লাসে ।
বুঝিয়ে সবায় বলেন তিনি অবিরাম সকাল থেকে সন্ধ্যে--
কোন খাদ্যের অপূর্ব স্বাদ, আবার কোনটা খ্যাত গন্ধে ।
শুনতে শুনতে ধরবে মাথা--বিচিত্র সব তথ্যে ঠাসা;
জানবে যেমন--পূর্ণিমাতে কোন পথ্য খেতে খাসা ।
তোমার হঠাৎ যদি খিদে লাগে ঘুমের ঘোরে মধ্যরাতে--
এ কথাটি মনে রেখো, খাবে ডিগবাজিতে উল্টোহাতে ।
কিম্বা ধরো সময় নেই, তোমায় খেতেই হবে গোগ্রাসে;
বাসন সেদিন মাজতে হবে, এক নতুন কেনা টুথব্রাশে ।
পুরীর খাজায় মিশিয়ে যদি ঝরিয়ার দুগ্ধ প্যাঁড়া খাও
কোটালের দ্বিপ্রহরে--মুগ্ধ স্বাদে বলবে সুখে ‘ওয়াও !’
আরও শোন । আরও শোন, ট্যাংরা গিয়ে রেস্তোঁরায়--
ট্যাংরা নয়, দু’চারফোঁটা মধু খেও খঙ্গামাছের কালিয়ায় ।
খঙ্গা কি মাছ জানো ? আরে খোঁজখবর কি নাও না ?
খঙ্গা নাই গঙ্গায়; উড়িষ্যাতে পাবে--একবারটি যাও না ।
এ কি, উঠছো কেন ? দাদাটি আমার--ঠাণ্ডা হয়ে বোসো;
দিয়েছি বলে--খেওনা দিল্লিকা ঐ লাড্ডু, খানিক রোসো ।
তা না হলে পস্তাবে, তখন বস্তাভরে দিওনা মোরে গালি;
জেনো, আমি কেবল কাকার কথাই বলেছি একফালি ।
এরপরে ভাই সময় করে তোমায় আসতে হবে একদিন;
বলবো সেদিন-- কেন ব্যাঙের ঠ্যাং খায় বার্মা থেকে চীন ।
মেরুর দেশে পেরু-র আলুর পদ—সেও অসীম জ্ঞানের কথা;
আবার ভিরমি খেয়ে ভেবোনা যেন--কথাগুলো সব বাতুলতা ।
আজকে তুমি যাচ্ছো যাও--আসার কথা যেওনাকো ভুলে;
সেদিনও যদি ওঠো--কিছু মনে করনা, কানটি দেবো মুলে ।