বিছানা থেকে খুব ভোরে উঠলাম
ঘুম হয়নি একদম
করোনা চিকিৎসার আকালে
বিনিদ্র রজনী কাটলো হাসপাতালে।
গুলশানের লেকের পারে
নামকরা নামীদামি হাসপাতালে
রোগীরা এখনো শুয়ে আছে
আমার খাট জানালার পাশে।
জানালার পাশে বসে
কিছুক্ষণ প্রকৃতি চয়ন
লেকপারের মায়াবী গাছগাছালি
অপূর্ব লাগছিল সবই তখন
কিছু যোগব্যায়াম করে
হাতমুখ ধুয়ে আবার অবলোকন
ওপারে বারিধারার অট্টালিকা
সামান্য গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি
প্রভাতের মোহময় এক আবহ সৃষ্টি
তখনও অনেকেরই নিদ্রা ভাঙেনি।
নার্সদের ব্যস্ততা বাড়তে থাকে
প্রেসার সুগার, তাপ, অক্সিজেন মেপে
তালে তালে ছন্দের সাথে
রোগীর অবস্থা ফাইলে লিখে রাখে।
আমি করোনা পজিটিভ
নিউমোনিয়া, ৩২% ড্যামেজ্ড ফুসফুস
ডাইবেটিস, কিডনী, প্রোষ্টেট ও ভাসকুলারসহ
বার্ধক্যজনিত নানা রোগে আক্রান্ত অবস্থায়
আমি করোনা পজিটিভ।
শেষ জীবনের এই বালুকাবেলায়
সব স্মৃতি আলেয়ার মত মনে হয়
অবস্থা এখন এমন ভারি
ঘরে আর ফিরতে নাও পারি।
বেশী দেরী হয়তো নেই
মানষিকভাবে শেষ প্রস্তুতি
নিয়েই ফেলেছিলাম তাই।
হাজার কোটি টাকার মালিক হয়েও
কত জন চলে গেলো পৃথিবী ছেড়ে
চোখের সামনেই
টাকায় হয়নি কোন কাজই
সেখানে আমি কোন ছাই !
পৃথিবীতে লাখে লাখে মানুষ
করোনায় আক্রান্ত হয়ে
মর্ত ছেড়ে চলে গেছে।
করোনার লক্ষণ নিয়েও
আরো কত শত মারা গেছে
যার হিসেবই নাই
যারা চিকিৎসার সুযোগ পায়নি।
এই অসংখ্য মৃত্যুর সাথে
আমি যদি যোগ হতাম
তাহলে মর্তের এমন ক্ষতি কি হতো!
করোনায় ধরেছিলো আমায়
সৃষ্টিকর্তার মহা কৃপায়
যুদ্ধ করে ফিরতে পারলাম এযাত্রায়
তাইতো আবার দেখা হবে
কথা হবে, মজা হবে অনেক
তোমাদের সাথে এ ধরায় ।
( ইউনাটেট হাসপাতাল,
গুলশান ১৯-১০-২০২০)
.