সেই পুজোর দিনগুলো আর আসে না ফিরে
আমি জীবনের পথে হয়েছি যে বড়
এখন স্মৃতিগুলোই মনে পড়ে।
আজ আকাশ জুড়ে সাদা কালো
রঙ হীন রিক্ত মেঘের খেলা,
কাশের বনে মাঠের ধারে হিল্লোলে
কাটেনা আর ছুটির বেলা।
শরতের শিশির ভেজা ঘাসের আগায়
পাইনা শিউলি ফুলের গন্ধ,
আশ্বিনের আগমনী সুর ভাসেনা বাতাসে
এখন সেও হয়েছে বন্ধ।
সেই পুজোর দিনগুলো আর আসে না ফিরে
জীবন সমুদ্রে বাঁচার লড়াইয়ে
হারিয়ে গেছে ব্যস্ততার ভিড়ে।
দেখি নীল আকাশে ধোঁয়াশার রাশি
যখন যেদিকে তাকাই দূরে,
মহালয়ার গানের সাথে মা আসে ভূমে
তবুও ঠিকানাহীন মন থাকে সুদূরে।
খাল বিল বুজে হয়েছে অট্টালিকা
শাপলা পদ্ম গেছে হারিয়ে,
পুজোর মন্ত্র ভরা হিমেল বাতাস
দিয়েছিল সম্প্রীতি বোধ জাগিয়ে।
সেই পুজোর দিনগুলো আর আসে না ফিরে
ভালোবাসার স্পন্দনে মথিত, গৌরবান্বিত
পরিবারের নানান ব্যস্ততার স্তরে।
নতুন জামাকাপড় কিনতে মন হয় না
যখন দেখি পথশিশুর দল,
বিত্তবানেরা থাকে বেজায় চিত্ত সুখে
মণ্ডপেতে ফিতে কাটার ছল।
অধুনা সন্তানের ক্ষুদ্র সুখের খোঁজে
বাবা মা থাকে বৃদ্ধাশ্রমে,
নানান বাস্তবতার ভিড়ে মাকে ছেড়ে
ভুলেই যায় বিজয়ার প্রণামে।
সেই পুজোর দিনগুলো আর আসে না ফিরে
সময় হয়েছে সময়ের কাছে বন্দি
আধুনিক মুঠোফোনের হাত ধরে।
অনলাইনে অর্ডার দিয়ে মা পাওয়া যায়
হারিয়ে গেছে মৃত্তিকা প্রতিমার গন্ধ,
লাগেনা পুরুত, লাগেনা ঢাক বাদ্য
সফটওয়্যারের হাতেই সব বদ্ধ।
সেদিনের সেই শরতের নির্মল প্রেম
ভরে গেছে পোস্ট শেয়ারে,
ব্যস্ততা আর দামি সুখের নীড়ে
বাঙালির পুজো গেছে উড়ে।
সেই পুজোর দিনগুলো আর আসে না ফিরে
নব্য সমাজ আজ হয়েছে কলুষিত
নৈতিক মূল্যবোধ মানবতার তীরে।
অধুনা সকল বিশ্বে ভিন্ন দৃশ্যে
নিপীড়িত মন হয়েছে ব্যাকুল,
ধর্ম নিয়ে প্রাকৃতিক বিরূপ চিত্তে
দূর্গা মন্দিরেও তুলছে আঙুল।।