প্রতিবিধান (আলোচনা)
ঘুচাই আজি গহিন ব্যথা যত সর্বনাশের ধাঁধাঁ
কোন্ সে পথে আশার আলো আঁধার চূড়ায় বাঁধা ?
দেখব এবার জগৎ ফুঁড়ে বাধটা কোথায় বাধে
কাহার জন্যে মানবতা রোজ বিজন ঘরে কাঁদে ?
কোন্ মানবে গাইছে সে গান ভিন্ন মতে ঐক্য ?
বিরোধ মতের অসার কল্প বিবাদের মূল নিত্য !
গড়ছে বিভেদ জনমের পর বাহ্যিক রূপে বহে
মাথায় ঢোকায় কল্প লেপন সৃষ্টির গোড়া নহে ;
নেশায় ভরা ধরমের গান মানবতা সুর বোলে
বিস্তার তাহা হিংসার জালে বাস্তব নাহি ভালে ;
গাইছে জবর মালুকি ঢঙে নিজের নেশা সেরা
নেশার ঘোরে সব নেশাখোর বর্ষে দমাম ধারা ।
ভাঙব যতো বাধার চূড়া ঘুচবে আঁধার আলো
মানব চেতন কাটবে ঘোর ভরবে সেথা আলো ;
বিদ্বেষ ভুলে এসো একসাথে মিলি ধরণী তলে
বিজন ঘরের মানবতা আজ সকলে পরি গলে ;
সকলের তরে সকলে মোরা গাহিব একই গান
পৃথিবীর বুকে শ্রেষ্ঠ জীবের মানবতা রাখি মান ।
কাব্য, “প্রতিবিধান”, > কবি, মুকুল সরকার (ইং-১৯-১২-২০২০) ।
তাঁর কাব্য- তিন ছত্রের, আঠারো লাইলের কাব্য, প্রতিটি লাইনের ব্যাপক অর্থ-মানে দাঁড়ায় ।
সব মিলিয়ে কবি এক অশুভবিচারধারার কথা বলেছেন । কোন দল বা গোষ্টী যদি
স্বার্থপরতায় চলে এবং সে মত ষড়যন্ত্র করে মানবের কথা বলে, মানবকে ভুলাভুলাইয়া- ধাঁধাঁর মধ্যে রাখে বা ভিন্নপথে চালনা করে যা মানবতার মঙ্গলের
ভয়ানক বাঁধা ।
“কাহার জন্যে মানবতা রোজ বিজন ঘরে কাঁদে ?”
কবি, এখানে তার সুনির্দিষ্ট আভাস প্রায় সব ছত্রে স্পষ্ট ভাষায় রেখেছেন । তবে সত্য কখনো কটু হয় তাই কিছুটা গোপনও রেখেছেন । কারা এ কাজ করে আর কার উপরে ধর্মনীতির চক্রান্ত করে ,
“গাইছে জবর মালুকি ঢঙে নিজের নেশা সেরা
নেশার ঘোরে সব নেশাখোর বর্ষে দমাম ধারা ।“
একটু উপমারও অভাব আছে ,
যেমন যে কাণ্ডারী নদী-সাগর পার করে তার নাও কি ভরসা করা যায় বা তার পরিচালন শক্তির বা কতটা ভরসা করা যায় , আগে নিয়তিই ধর্মে প্রবল মান্যতা ছিল ,মানুষের দ্বারা দুর্ঘটনা হলে ঈশ্বরের দোহাই দিয়ে পার পাওয়া যেত । এ বৈজ্ঞানিক যুগে অনেক পুরনো নীতি অমান্য হচ্ছে, এখন সময়ে ‘ধোপে টেকে না’!
চক্রান্তকারীরা তবু বৈজ্ঞানিক কাজকর্মের সাথে নিয়ে ভুল ব্যাখ্যা করে চলেছে, মন ভুলানো কথায় মন জয় করতে চাইছে ।
“ভাঙব যতো বাধার চূড়া ঘুচবে আঁধার আলো
মানব চেতন কাটবে ঘোর ভরবে সেথা আলো ;”
এখানে কবির মনে বিদ্রোহ , তিনি চান এর প্রতিবিধান- যা, পরাজিত না হলে এখন বা আগেও সমাজের অকল্যাণ হবে তাই উপসংহারে শেষ কথা বলেছেন
“সকলের তরে সকলে মোরা গাহিব একই গান
পৃথিবীর বুকে শ্রেষ্ঠ জীবের মানবতা রাখি মান ।“
শিরোনাম, “প্রতিবিধান” > প্রতিকার > নিবারণ > প্রতিশোধ ।
এখানে অর্থের সাথে সুন্দর মিল কাব্যভাবের , সার্থক নামকরন । সুন্দর ছন্দে মার্জিত ভাষায় আধুনিক বিচার ধারার কাব্য যা এ যুগে সমস্যা নিবারণে একান্ত দরকার । প্রবুদ্ধ প্রিয়কবির সমাজের প্রতি গভীর মননে সাধুবাদ জানাই, আগেও আশা রাখি এমনি মৌলিক বিচার ধারার সর্বহিতে জাগরুক কাব্য তাঁর কলমে প্রকাশিত হউক । ধন্যবাদ ।