প্রথমেই দুঃখ-খেদ প্রকাশ করছি বড় লেখার জন্যে, ধন্যবাদ ।
তুমি যদি খোঁড় কবর
খবর হয় জবর-জবর !
আমি যদি ইতিহাস খুঁড়ি ,
তুচ্ছ !এটা হয় পাথর নুড়ি ;
সব খবর হয় ,গুড়গোবর !
তুমি নাড়িলে চায়ের খুন্তি
তোমায় আভায় গৌরকান্তি ,
আমি যদি চাই, উদয়ে ক্রান্তি
বলো এ আশা করা উদভ্রান্তি ৷
তুমি যদি বাজাও ভাঙা ঢোল
ওঠে, মধুর সুরেলা বোল !
আমি বাড়ালে সাথে জনবল
পাকাই নাকি বড়ো গন্ডগোল ?
প্রদেশ মন্ত্রী মারলে সে লাথি
সে হয় ঐরাবত, ইন্দ্রের হাতি !
যদি বলা দেশে দুঃখের পাহাড়
অমনি ছাল তুলে ভাঙ হাড়
তুমি ঘাঁটিলে জ্যোতিষ
হয়ে ওঠ প্রভু-জগদীশ !
আমি বললে ভ্রান্ত জ্যোতিষ
দেখাও অমনি তাজা মাচিশ ?
তোমার বলা সবটা সুগন্ধীফুল
আমার বেলায় পাই মরণশূল !
এত বিচিত্র বোল, কেন বোলে ,
আমি দীন-দুঃখী তাই বলে ?
বিহারে, এক ভাষণে শোনা
“জ্যোতিষ মানি না !
না মন্ত্র-তন্ত্র জানা
মানি, লোকতন্ত্র ,
এটাই আমার মূল মন্ত্র ৷”
কে কবে কয় মানতে ?
এ সবে কে চায় জানতে
মাথা ব্যথা না এসব তাতে ।
শুধু পাই ব্যাপক শুনতে
অসহায় জনতা দূরপ্রান্তে
দিন যায় কাঁদিতে কাঁদিতে ।
সঠিক জানাও তব মান্যতে
কী বোঝাতে চাও প্রকারান্তে ?
একদা মঠের আবেশে এসে
আবেগে মঠকে ভালবেসে
যৌবন কাটাও একদা মঠে
সেথা, মঠধর্মে দিন কাটে ;
তুমিও বাদ যাওনি মোটে
শিখিয়াছ সেথায় যা জোটে ৷
পূরব পশ্চিম উত্তর দক্ষিণ
করে সম্পূর্ণ প্রদক্ষিণ
বসো গদিতে
আবার কেন যাও গাহিতে ?
চাও না জ্যোতিষ মানতে ।
তুমি মান ঈশ
হৃদয়ে জগদীশ
মানিবে না জ্যোতিষ
এ অবুঝের মত কথা ,
কেন দাও আস্থায় ব্যথা ?
মন্ত্র-তন্ত্র না জানা
আরো না মানা
নিজ বিচার ভাবনা
অতি বড়োপ্পন লক্ষণে আনা ৷
লোককে কেন করো না মানা
জ্যোতিষ নিয়ে মিছা কল্পনা ,
নিজেই যখন মান না ?
মন হতে হটাও আনাগোনা ৷
কে যেন বলে
দাড়ি চেঁচো না -
দানের পোশাক বেচ না -
একটা মানো, অপরটা- না ৷
আবার পোশাকটা
শখ করে যেটা
তোমায় ভাল মানায়
প্রিয় সাথী উপহারে দেয় ।
তোমার নাম লেখা হয়-
স্বর্ণসুতায় অজুত ধারায়
নামের মহিমা হয় অক্ষয় ,
চতুর্দিকে রব ওঠে জয়-জয় !
হঠাৎ করে কার কথায়-
ভাবনা ভর মাথায়-
নবাচার দেখি তথায় ।
তুচ্ছ নিলামে সেটা -
বেচলে পোশাকটা ?
কোটি-কোটি টাকায় !
বেচাটা কেন আসে মায়ায় ?
কেহ বলে, ধনাঢ্য চাল
মোদি নাম স্বর্ণসুতোর জাল
এ অশুভ ভাগ্য-কপাল ।
পুনঃ তব প্রিয় এক আকায় !
কিনে নিল নিলাম সভায়
যোগ্য কর্ম করে দেখাও
ভাগ্য মেনে তুমি শেখাও ,
পোশাক করে বর্জন
করলে সুনাম অর্জন ,
খ্যাতি পেলে তুমি সেথায়
জ্যোতিষ মান কী হেথায় ?
যদি না পোষাক পরবে
শুরুতে ওটা ছাড়বে
এ জামা, হবে না পরা -
থাক যাদু ঘরে, স্থায়ী পোরা ,
মাত্র পর্যটক, হয়ে উৎসুক
পোশাকটা চোখে শুধু দেখুক ,
শাম-সবেরা তোমায় তারা
কত না করবে নাম
এটাই ছিল মোক্ষম কাম ৷
পরের ঘরে তোমার জামা
ওর ঘরেই শোভে রমরমা
ইতি হল সব দাড়ি কমা ,
কেহ দেখল না আর
ঐ অদ্ভুত জামা তোমার !
ধন্য তোমার কারনামা
শূন্য হল তোমার জামা !
জ্যোতিষ বলতে পারে
বলতে পারে আগের তরে ,
জীবিত থাকতে-
আছে কী পোশাক বেচতে ?
এখনে যাও না হেরে
“পামিষ্ট” কে ধরে
তার আলয়ে যাও ,
নিজে যেচে হাত দেখাও !
পরে তুমি, পরকে শেখাও ,
জ্যোতিষ মান না-
এ কী অদ্ভূত ভাবনা !!
নিয়ে উভয় নীতি -
মেতে, করো রাজবসতি ,
হবন-পূজন মান তুমি
মন্যতে রামজন্মভূমি ,
ধর্ম মান, টুপিও টান
মানা কর দিতে মাথায় !
নাম লেখাও আবার
করতে উপকার
সাধুবাবার কর্ম খাতায় ,
সর্বদা মেলমেশ তথায় !
বাবাদের না হলে
তোমার রাজ যায় হেলে
বাবারা মোক্ষম রাজগুরু
সেই প্রথা কর পুনঃ শুরু !
সায় দেয় তোমার অন্তর ,
তাদের সাথে হয়ে একাকার-
ছবি তোল যারপর
টিভিতে আসে বারংবার ৷
এমন কাজে হও উতারু
করে না বুক দুরুদুরু ?
গুরুকে নিয়ে রাজকাজ
সেথা ছিল একটাই সাজ
এসব ছিল অতীতের রাজ
গুরু বিনে চলিত না সমাজ ৷
বারমাস তিথি-নক্ষত্র জান
সমানে, কোষ্ঠীপত্র সবই মান
কী না মানা তুচ্ছ হেন
জ্যোতিষ মান না কেন ?
জ্যোতিষ তুমি মান না
সত্য কী আছে জানা ?
যদি মান অকাট্য সত্য
জানতে হবে আসল তথ্য ,
মহান যীশুর মৃত্যু কালে
তাঁর আঁখি ভরে ছিল জলে ,
পায় না তেষ্টার জল
উপায় রাখে নি ঐ খল !
পারবে তুমি সেই পর্যায়
এমন ধারা যদি হয় ?
কক্ষনো না ! সাজে না -
তুমিনও, সাধারণ জনা
পদ তোমার অসাধারণ
জীবন মরণ করে পণ-
তুমি করেছ পদ গ্রহণ ,
এ পদ জনতা করে অর্পণ ৷
ইতিহাসের পাতায়
দেশের খাতায় জন হৃদয়
লেখা থাকবে তব নাম
সুবাসে বাতাসে ভাসে সুনাম
আবার কখনো, লোক ঠকানো-
হতে পারে এমন সব, জেন ,
পাগল পণ ,গতি মন
জনতা বলে যখন তখন ,
যেমন ছিল তুঘলক -
দেশবাসী বলে না অমূলক ।
রাজকাজে তুমি যে সমর্পিত
চিন্তা নয় বাজে; রও জাগ্রত ৷
অপার তোমার প্রিয় সাথীরা
তারা কিনা আজ আত্মহারা
জ্যোতিষ ধরে বুক ভরে
সুখে, সন্ধ্যা আরতি সারে
মস্ত হয়ে খেয়ে-- পীয়ে
বাজায় ঢোল তাল মিলিয়ে ,
বসে আলো করে তারা
প্রতিনিয়ত শাম-সবেরা ,
আরও ঘেঁসে তোমার কোল
আদরে বসাও নিকট বগল ;
আশ্চর্য ! আসল ভোল -
কথটা কেন তোল ?
তুমি তুলে নাও মাথায়
ওঠ, বসো, তাদের কথায় ।
আস্থা নিয়ে জ্যোতিষে
জনতায় আছো মিশে
সবারে বেজায় ভালবেসে ৷
মুগ্ধ ! জনতার হাল
ভোটে করে মালামাল ,
আশীর্বাদ দানে তোমায়
কেন আসে না মাথায় ?
অমূল্য দান তাদের প্রতিটি
সংখ্যায় তারা সহস্র কোটি,
তুমি কী সত্য খাটি ?
করিও না বিশ্বাসটা মাটি ৷
তুমি কর গোল
বল, বড় বোল -
সত্য না বলে ,
ভোট এনেছ ঘরে তুলে ,
জনতাকে করেছ ছল
তারা পায় না জীবন-জল ,
না চাকরি-বাকরি মঙ্গল
নিঃস্ব হল শেষ সম্বল ।
তোমার দল, খোঁজে জমি-
মাতে নিয়ে রাম জন্মভূমি !
বিরোধ করো না তুমি ,
তুমি কী অন্তর্যামি ?
বলো আবার, কাছে সবার -
মঞ্চে দাঁড়িয়ে, বারবার ;
“জ্যোতিষ মানি না আমি”
তবে কি হয় মানা
এসব দরকার নেই জানা ৷
তোমায় শুধু শুধাই -
ঠিকঠিক বলো ভাই ,
জ্যোতিষ মান না
আর, কী-কী হয় না মানা ?
স্পষ্ট করে হোক বলা ,
নয় তো মুখ না-- খোলা -
সর্বোত্তম হওয়া এটাই ভাল
সত্যের আলো কিছু জ্বালো ?
তোমার চেলা, অনেক মেলা
জ্যোতিষে আত্মভোলা ,
তার পার্বণে রাজ্যাভিষেক
এক চেলা সে ধরে ভেক্
ভাল মত করে দেখ্-রেখ্
মেনে উচিত শুভদিন ক্ষণ
ত্রিপতিতে, সারে মুণ্ডণ !
তা’ আবার হেলিকাপ্টারে
যাবে আসবে অতি সত্বরে
মহিমা মণ্ডিত করে মন্থন
গ্যাঁট হয়ে বসে সিংহাসন !
যেমন তেমন নয় আসন
তার মধ্যপ্রদেশে রাজ্যাসন !
একবার এক বৃদ্ধ সাথী
উদাসী কাটিয়ে অতি
পত্রকারকে বলে,
“লেখা ছিল মোর কপালে,
মনো কামনা পূরণে
পদ মুখ্যমন্ত্রীত্ব বরণে
কী যে হয়েছি ধন্য
এটাই ছিল মনেতে কাম্য।”
ভাগ্য মেনে বলে বুঝিয়ে
সংবাদে তোলে বুক ফুলিয়ে ৷
তুমি তো তাদের চেলা
সূর্যনমস্কার করো মেলা
তারা চালায়, তুমি চলো
‘জ্যোতিষ মানি না’-
আবার কেন বলো ?
এক জ্ঞানী গুণী
সুনামী কর্মঠ সেবক দামী ,
নির্ভয়ে বলেন প্রকাশে
সময়ে সঠিক বলেন যে
হয়ে এক সুদক্ষ্য বিচারক
আমাদের দেশ হচ্ছে শেষ -
আছে অন্ধবিশ্বাস বিশেষ
সে “চারটা মহাকারক ।
এই চারটা আফিম
করিছে হিম
সারা দেশটা
বাজে জিনিস এটা” ৷
দেশ জুড়ে আকাশ ফাঁড়ে
অকস্মাৎ যেন বজ্রপাৎ !
সংবাদে ভরে তৎক্ষনাৎ
নিন্দা ওঠে পাতাল ফুড়ে ।
পাতায় পাতায় করিল খন্ডন
তাঁকে করেনি যদিও মুণ্ডন
প্রকৃত কার্যকর,
অন্য ভাবে অনেক কিছু
পেছনে তাঁর মিছু-মিছু
হয় ক্ষতি কুৎসা সৎকার ।
গ্যালেলিও, সক্রেটিস্
তারাও মানেনি জ্যোতিষ
কি হল হদিস-শোন নি ?
শুনবে কী তাও জানি ।
তোমরা বোঝ-ধাঁধার মান্
সত্য মানতে আস্থার টান্
সংবিধানের নিয়ম মান না
দেশ ভবিষৎ তাও অজানা ৷
দেবে প্রণামী নিজের ভুলে,
যে দল-মতে ভুল করে
তার ন্যায্য বিচারে ,
তাকে নেবে না আর দলে ৷
তাকে সাথে রাখলে
সব দোষ হয় সমূলে
যেমন প্রমাণ তুমি
সেরূপ সবার বদনামী ৷
যদি বলো বড়- বোল
এটা মুখ্য দলের গোল
জনতারা হয় গোলমেলে
অনেকে যায় নিয়ম ভুলে ৷
তোমরা ভোল না-
সত্যটা দেখ না
জনতা কি খেলো
বা আগেগোল্লায় গেল ,
কে কে মানে জ্যোতিষ
কে মানে না
এতে কিছু যায় আসে না ।
ভাত ফোটার কালে
হাড়ির একটা ভাত টিপলে
জ্ঞানে দেয় মাত
বুঝে, একটা ফোটা ভাত
সমান সবটা একই জাত
সে এক হাড়িভরা ভাত ।
এখন যদি বলো-
দলে ভুল মানে ভাল-
আমি মানি না জ্যোতিষ ;
হবে এটা ক্ষিতিজ
আশ্চর্য্য-- মজাক,
শুধু-শুধু-লোক-হবে-অবাক !
এমন কাজটি করিও না
দেশ খাতিরে অন্ততঃ মানা ,
এখানে কষ্ট আছে অশেষ
দুর্নীতিতে ভরা এ দেশ ;
তুমি শুধু এটুকু করো
জনতার মঙ্গল সারো ,
এটাতেই উত্তম- ভাল
শুদ্ধ আলো তো জ্বালো?
এক ছিলেন কার্লমার্ক্স
কষে ছক্, শুধু দু’টি কথা
হয় ব্যাপক প্রচার অযথা
বিশ্বে আসে মহাঝড়
চারিদিকে তোলপাড়
এখনো হয়নি অসাড় ;
আজো ধারা বয় খরতর ।
শুনে রাখ তার বুলি,
অনেকে দেয় অকথ্য গালি
তাঁর নিন্দুকের নেই কমি
ঘৃণা এখনো থামেনি,
স্বাদে যেন তিক্ত নিম !
শব্দ দু’টি হল“ধর্ম আফিম”৷
(ইং-০১-১১-২০১৫-সোমবার)