কবি পরিচয় > কবি সুভাষ দাস , শিক্ষায়- স্নাতক, দু’মাস হয় আসরে এসেছেন, ৬৭ টি কবিতা আসরে প্রকাশ করেছেন । নিবাসী-বাংলাদেশ -ঢাকা , পেশায় চাকরি । ।সমাজ, রাজনীতি, ধর্ম , মানব উত্থান , মানবতাকে নিয়ে তাঁর কাব্যসংসার ।
কাব্য “ধর্মান্ধ পৃথিবী” সে কাব্যকে নিয়ে কিছু কথা বলা ।
এক বড় ধরণের মানবতাবাদী কাব্য কথা । সমস্তটা আলোচনা করলে অনেক জায়গা নেবে , পাঠনে পাঠকের সময়কে ধ্যান রাখা দরকার তাই সংক্ষেপে বলা ।
মূল বিষয়, আজ সভ্য যুগে বিশ্বমানব- দু’ধারায় বিভক্ত-- এক দক্ষিণপন্থী আর এক বামপন্থী , এই দু’য়ের মধ্যে মতবাদে অনেক পার্থক্য বিদ্যমান ।
কোনটা ঠিক আর কোনটা বেঠিক তার বিচার মানুষের উপর । কবি এখানে দু’টোকে নিয়ে অপূর্ব কাব্য প্রকাশ করেছেন । কার মধ্যে কি জ্ঞান বিরাজমান তাঁর সম্পর্কে না গেলে আমরা জানব কেমন করে ?
কোন বিষয়ে হয়তো বুঝতে কঠিন হতে পারে কিন্তু হয় তো তার ভিতরেই সত্য লুকিয়ে আছে ! যতক্ষণ না জানব ,ততক্ষণ জ্ঞান অপূর্ণ রয়ে যাবে ।
ধর্ম কী ? তার ব্যাখ্যা দুনিয়ার মহামানব কত কত বছর ধরে মানুষকে দিয়ে যাচ্ছেন, কৈ ? তার শুভফল তত দ্রুতগতিতে তো আগে বাড়ে না ? যাঁরা সচেতনায় ভক্তি ভরে ধর্মের কথা মানেন তার মধ্যেও-- বিশেষ পরিবর্তন নাই ! কারণটা কি ? কেন ধর্ম মেনেও মন পবিত্র হয় না ? তবে কী ধর্মে অসাধুতার ফাঁক আছে ? আর ঐ অসাধুতাকে ধরে এক শ্রেণী অপরশ্রেণীকে শাসন ও শোষণ করছেন ? এখন সময় এসেছে বোঝার , দেখার । চিরিদিকে নানা অধর্ম দেখে তো তাই মনে হয়,-- ধর্ম মানা জনের বিচার কত কুৎসিত ! আর কি করলে তবে ধর্মে মন আরো পবিত্র হবে ? জাতে জাতে, নিজ স্বজাতে, মামুলী কথায় দ্বন্দ্ব- খুন-জীবন নাশ ! কেন হবে ধৈর্যহারা ? কেন ? এর কারণটা সঠিক ঠাণ্ডা মাথায় ভাবার আছে , নানা সুন্দর অকাট্য জোরালো উদাহরণে কবি তার কাব্য ছত্রে ছত্রে প্রমাণ সহ বলেছেন , এখানে স্পষ্টবাদীতা তার পরাকাষ্ঠা এ কাব্য বিচার । আবার এর কারণ-নিদানের অনেক উদাহরণ ও দিয়েছেন সে বাম বিচার ধারায় ।
এক মুখ্য উদাহরণ সহ "ধর্মের সাথে মিশে গেছে রাজনীতি ,মিশে গেছে ব্যবসাও" এই কথাটা বামপন্থীরা ঘোর বিরোধ করে, অন্ধবিশ্বাসের ফলে দক্ষিণ পন্থীরা এ ধারা মনে প্রাণে মেনে নেয় । অথচ এর কুফলটা দ্যাখে না ! এতই তারা ধর্মে অন্ধ ভক্ত যে আগে যেয়ে কত কত জাতি জাতি এর কারণে বিভেদ ঘটে , একে অপরের দয়ার পাত্র হয়ে গড়ে ওঠে । দেশে নিরপেক্ষ শাসন আসে না । ধর্মে ধর্মে অথ্যাচার বাড়ে ।
আরো এ ভাবে অনেক উদাহরণে বলেছেন, দেশে ছল ধার্মীকরা ধর্মের নামে সভ্য সমাজকে তারতার করে ,তারা কত কি অকথ্য ভাষায় কথাবলে ,যেন ঐ ছলদের গোটা রাজ্য, অন্য কারো সেথায় প্রবেশের অধিকার নেই । অনেক ক্ষোভে তুলনা করে বলেছেন , নাস্তিক হয় তো তারা ভাল- সে তুলনায় ধর্ম না মেনেও । তারা এতটা খারাপ নয় ,কমছে কম মানবতা তো মানে ।
এক বড় উদাহরণ দিয়ে বলেছেন ,
(গুরু নানক বলেছেন ,"মানুষ হও , হিন্দু , মুসলমান ,খ্রিষ্টান
কিছুই হওয়ার দরকার নাই।" বাস্তবে মনুষ্য ধর্মই শ্রেষ্ঠ ।)
এত সব কবির বলার অর্থ-- আমরা এখন কোনটা মানলে মানব মঙ্গল হবে, সেই পথে চলা উচিত। ধর্ম নাহলে দুনিয়া চলে না, আবার ঐ ধার্মীক ধর্ম হিংসক হলে হিংস্রতাকে তো মানা যায় না । সবার জন্য বসবাসের জন্য চাই সহ-অস্তিত্ব- বন্ধুত্ব -ভাইচারা , পরস্পর ধর্মে স্নেহ-ভালবাসা । খারাপ বর্জন ও ভালকে গ্রহণ । এমনি সব ক্রিয়া-কাণ্ডের মাধ্যমে সবার মূখ্যধারায় শান্তি সদভাবনা এলে তবেই সবার সার্থক মঙ্গল ।
পরিশিষ্টে আমার বলা ,--- কবির মানবতার মহান ভাবনাকে সাধুবাদ । মানব, সামজ, দেশ-বিশ্ব ভাবনায় কবির উঁচু আদর্শবান জ্ঞান-বিচার ভরা মন । সমাজকে কিছু ভাল কিছু করতে চান । মানব চেতনায় কবি উঁচু মনের অধিকারী । কাব্যটি বেশ বড়, একটু ছোট হলে আরো ভাল হত , কারণ কাব্য হবে শব্দে- অর্থের সমাহার । এখানে তা হয় নাই । কাব্যটি না গদ্য না পদ্য, প্রকাশ ভঙ্গিমায় সুললিত নয়, এর দিকে কবির ধ্যান আকর্ষণ করছি । আরো লিখুন, মানবতাকে নিয়ে ,শুভকামনা ।