কবিতা মালা-ভাগ-১

সংক্ষিপ্ত বর্ণনা

-ঃ উৎসর্গ ঃ- (কবিতা মালা—১)
দেশ ভাগের পর আমার পরিবার এক ছিন্নমূল ভাসমান শৈবালের ন্যায় দিশা হীন কালের ব্যবস্থার সাথে জীবনে বেঁচে থাকার উপায় অবলম্বন করে চলতে থাকে ৷ এর মধ্যে আমার শ্রদ্ধেয় ঠাকুরমা স্বর্গীয়া শ্রীমতী “অভাগী দেবী সরকার” অধুনা সভ্য সমাজের আইন তাঁকে নির্মম ভাবে মৃত্যুকে বরণ করিতে বাধ্য করে ৷ তাঁর সেই আত্মত্যাগের নিদারুণ মৃত্যু যন্ত্রণার প্রতিচ্ছবি, শিশু কাল হতে অহরহ আমাকে অন্যায়ের বিরুদ্ধে আলোড়ন সৃষ্টি করে এসেছে এবং জীবনে বাঁচা বাড়ার পাথেয় যুগিয়ে এসেছে ৷ তাঁর স্মৃতিকে হৃদয়ে রেখে আমার এই কবিতার বই, “কবিতা মালা” রচনা ৷
তাঁকে স্মরণ করে এই বইটি তাঁর শ্রীচরণে উৎসর্গ করিলাম ৷
প্রণতঃ
গোপাল চন্দ্র সরকার
(ইং-১৪-০৪-২০১৭-সোমবার)
বাংলা, প্রথম বৈশাখ-১৪২৪
স্থান-গোবিনপুরা-পিন,--৪৬২০২৩
বি,এইচ, ই, এল,-( ভেল )--ভোপাল (মঃ প্রঃ)

ভূমিকা

মা গঙ্গে
শীর্ষে শুভ্র তুষার জটা
বিস্ফারিত দিগন্ত রজত ছটা,
ভেদিয়া অজুত সে দৃঢ় বন্ধন ;
মা গঙ্গার শুভ যে আগমন ৷

অভয় দাত্রী হে মা, গঙ্গে-
তুমি যৌবনা, অপরূপ তব অঙ্গে
নামো, ধরণীতে খরকরো বেগে ,
উপোসী রয়ে কত রাত জেগে !

শোভে, রংধনুর বিকিরণ নানা ,
শ্বেত-সহস্র রজত বারি কণা ;
রিনিঝিনি ঝংকার তুলিয়া সঙ্গে-
নৃত্যে মাতো, নিত্য নব তরঙ্গে ৷

তোমার অসীম প্রগাঢ় মায়া-
আদি অন্ত ভরা তব কায়া ,
তুমি অমৃতা মা ! অতি নির্মলা ;
শীতলা, কোমলা, তুষার-ধবলা ৷

তুমি সু-মধুর কল্লোলিনী, কিঙ্কিণী ;
ধ্বণিত, জাগ্রত, সদা নির্ঝরিণী-
তুমি যে তেজস্বিনী মা ! মাতঙ্গিনী ,
তব চপল চলন পুলকিত চাহনি !

জীবে তুমি যে , অভয় দায়িনী
তৃষ্ণায় তুমি যে- হে মা,সঞ্জীবনী !
চকিত চরণে, চঞ্চলা প্রবাহিণী ,
প্রফুল্ল নয়না, ভূবন মোহিনী !

তুমি যে মা ! অবলা, সচলা ,
তব করুণায় ধরণী উজ্বালা ৷
পতিত সবের চির উদ্ধারিণী ;
তুমি যে মা ,পবিত্র পাবনী !

নানা ধারায় স্বচ্ছ সলীলা ,
তুমি মা, করো কত খেলা !
কত মুনি ঋষি সাধু জনে-
জ্যোতি দেখাও ওদের প্রাণে ;
সদা ত্রাণে, থাক মা, তুমি লীন ,
তাই তো মা, হও না, কভু মলীন !

যুগযুগ ধরে পাপির পাপ হরে
তুমি বিরাজো মা-, ধরার ’পরে ,
অপার করুণা, ভরা তব বুকে-
সবে, অযাচিত তাহা লভিছে সুখে ৷

(ইং-০৪-০৪-২০১৬)- গোপাল চন্দ্র সরকার