মাটি ভুলে গেছে, তার বুকে কৃষকের কোলাহল,
হারিয়ে গেছে সে রোদ্দুরের আলিঙ্গন,
কখনো বৃষ্টির ফোঁটার নরম পরশ,
আর ধানের শীষে ঝলমলে সেই উৎসব।

মাটি ভুলে গেছে, তার বুকের সবুজের চাদর,
যেখানে ছোটাছুটি করত শিশুদের পায়ের ছাপ,
জমির ফসলের মিষ্টি গন্ধে ভরপুর বাতাস,
আর রাত্রির নীল আকাশে তারার ঝিকিমিকি।

মাটি ভুলে গেছে, তার বুকের সুখের কাহিনী,
যেখানে প্রেমের বাঁধনে বাঁধা হতো দুটি মন,
কৃষাণীর হাসির রেশ, আর গানের সুর,
আনন্দে ভরে উঠত সব বসুন্ধরা।

কিন্তু মাটি জানে, একদিন ফিরে পাবে সব,
যখন মানুষ ভুলবে না তার শিকড়ের মমতা,
তখনই মাটি আবার হবে জীবনের প্রেরণা,
নতুন করে গড়ে উঠবে তার চিরন্তন সাধনা।

মাটি ভুলে গেছে, সে যে সৃষ্টির মূল, তার প্রাণের অক্ষর লেখা হয়ে যায় ধূল। শিশির ভেজা ভোরে, আলো যখন ম্লান, মাটির বুক জুড়ে জেগে ওঠে এক স্বপ্নবান।

আকাশের নীলিমা, ঝরনার জল, সব মিলেমিশে রচনা করে নতুন এক ছল। বাতাসে ভেসে বেড়ায় মাটির গল্প, মনে করিয়ে দেয় তাকে, তার সৃষ্টির জল্প।

রৌদ্রের তাপ, বৃষ্টির সুর, সবাই মিলে গড়ে তোলে মাটির মহারুর। সে যে সৃষ্টির মূল, ভুলে গেছে নিজেই, তার প্রাণের অক্ষর লেখা থাকে ধূলের কুঞ্জে।

তবু, মাটির মাঝে লুকিয়ে থাকে এক অনন্ত সুর, তার মাঝে খুঁজে পাওয়া যায় সৃষ্টির মূলাধারার দূর। জীবনের পাতা, মাটির কোল, সবাই মিলে গড়ে তোলে পৃথিবীর মঙ্গলময় রোল।