বিশ্বকাপের জ্বর
//
বিশ্বকাপের চরম মাপের
জ্বর একশ চার,
টান টান উত্তেজনায়
নেই তো কোন ছাড়।

টেকনাফ হতে তেতুলিয়া
বিশ্ব কাপের জ্বরে,
ছেলে বুড়ো বৃদ্ধা শিশু
কাঁপছে থরে থরে।

কার সাপোর্টের দেশ জিতবে
তুমুল তর্কাতর্কি,
ক্রিকেটের কাল ভূত এসে
করল আবার ভর কী?

ক্রিকেট নিয়ে সকল খানে
খুশির বন্যা বইছে,
যেমন খুশি তেমন করে
চাপা কথা কইছে।

আসল কথা ক্রিকেট এখন
সবার প্রিয় খেলা,
এই খেলাটি দেখতে নিত্য
বসে দর্শক মেলা।
২.
ইস্পেশাল ঈদ
// রিয়েল আবদুল্লাহ

স্পেশাল ঈদ কিসলু মিয়ার
কাটছে বেজায় সুখে,
নতুন বউয়ের হাতের রান্না
দিচ্ছে প্রথম মুখে।

কত মানুষ বউরে নিয়ে
করতো মজার ঈদ,
সেসব দেখে হিংসে হতো
আসতো না তার নিদ।

কিসলু মিয়া বউরে নিয়া
আনন্দে তাই মাতে—
পাড়া পড়শী যাই-ই বলুক
কি আসে যায় তাতে?

কিসলু মিয়া রিকসা দিয়া
শশুর বাড়ি যায়,
মাথায় টুপি শেরওয়ানী
দামী স্যান্ডেল পায়।

গাঁয়ের জামাই হেঁটে চলে
বৃষ্টি নামে সাথে,
কিসলু মিয়া জুতো যুগল
লয় যে মুঠো হাতে।

এক হাতে তার দধির হাঁড়ি
জুতো অন্য হাতে,
বউ ছাড়ে না কিসলু মিয়া
রাখে সাথে সাথে।

বউরে বগল দাবায় করে
ঢুকলে শশুর বাড়ি,
পিছল খেয়ে ধপাস পড়ে
যায় যে ভেঙে হাঁড়ি।

হাঁড়ির ভেতর দধি ছিলো
ছিটকে মাখে গাঁয়
কাঁদা দধি মেখে কিসলু
ভুত যে হয়ে যায়।

শালা শালী দেখে তাঁরে
বলে হিপহিপ হুররে
কিসলু মিয়াও হেসে উঠে
বেজায় বাজে সুররে।

মাজা ব্যথায় কিসলু কুকায়
আসে না তাঁর নিদ
থাকবে মনে সারাজীবন
ইস্পেশিয়াল ঈদ।
৩.
ঈদের চাঁদ
       //
এতেকাফ শেষ করে
তালেব আলী মোল্লায়
বেডিং পাতি গোছ করে
ঈদ ভেবে বাড়ী যায়।

পথে দেখে টিভিস্ক্রলে
ঈদ নাকি হবে না
ব্যাপারটা আগে কেউ
কেন কিছু কবে না

এখন কিযে হবে তার
মাসালা যে দরকার
কার কাছে যাবে আর
কি যে করে সরকার?

কতগুলো গাধা গরু
চাঁদ দেখা করে শুরু
দূরবীনে চোখ রাখে
বুক করে দুরুদুরু।

দুই দিনের বাঁকা চাঁদ
চোখে নাকি দেখে না
ঘাঢ় তেড়া হয়ে তারা
বিজ্ঞানটা শেখে না।

বিজ্ঞানের কোন ছোঁয়া
তারা যদি জানতো
একখানে চাঁদ দেখলেই
ঈদ হবে মানতো।

৪.
নাড়ীর টানে
//
শহর ছেড়ে নাড়ীর টানে
ছুটছে মানুষ গ্রামে
যানবাহনে মানুষের ঢল
একটি নাহি থামে।

কী যে মায়ার আকর্ষণে
যাচ্ছে মানুষ ছুটে
লক্ষ্য তাদের একটু শান্তি
ভাগ্যে যদি জুটে।

সকল আপন জনের সাথে
জমবে মজার ঈদ,
সেই খুশিতে কষ্টটা নেই
নেই যে চোখে নিদ।

গ্রামই শেকড় সব মানুষের
কজন শহর চায়?
নাড়ীর টানে গ্রামে এলেই
দুঃখ ভোলা যায়।
৫.
বউয়ের শাড়ি
//
মিষ্টি বউটি ফেসবুক দেখে
ডেকে বলে প্রিয়,
এবার ঈদে এই শাড়িটিই
কিনে তুমি দিও।

শুনে দেখি—শাড়ির দাম
বারো মাসের ময়না
মাথা ঘুরে ধপাস পড়ি
বউ তো কথা কয় না।

মাথায় পানি ঢেলে বলে
আর ধরো না ঢং,
কিছু চাইলেই হয় যে শুরু
তোমার নানান ভং।

মুখ ফুলিয়ে বসে থাকে
দুয়ার করে বন্ধ,
বলুন দেখি—কেমন লাগে
বউয়ের সাথে দ্বন্দ্ব।

দ্বন্দ্ব থামাই–বউরে নিয়ে
শপিং মলে যাই,
অনেক কষ্টে অগত্যা সেই
শাড়ি খুঁজে পাই।

চেয়ে দেখি বউয়ের গালে
মোনালিসার হাসি,
হোক না খরচা এই হাসিটিই
দেখতে ভালোবাসি।

৬.
ধান রোপণ
//
ফান করেই ধান রোয়েছি
ফলন কি দরকার?
পুড়ুক না ধান যত্ন নিই গে
নিজেরই চরকার।
দেখুক চেয়ে বাম কি ডান
আহ্লাদি সরকার—
আমিই কৃষক পেটের অধিক
ধান রুইব না আর
আমার জোরেই সবার জোর
তাহলে ডর কার?
রইবে খালি ফসলের মাঠ
৭.
ন্যায্য দামে ধান
//
কৃষক না হয় বাদই গেল
ন্যায্য দামের থেকে,
আগামীবার ধান রুইবে
বাজার দরটি দেখে।

ধান না রুয়ে কৃষক যদি
মাঠটি দেয় রেখে  
কাটা কামলার শিক্ষা হবে
না খেয়ে থেকে।

ধানের চাইতে দাম বেশী
কাটা কামলার ভাই
তাই কৃষকের ধান চাষবার
কোন দরকার নাই।

৮.
কৃষক প্রীতি
//
উথলে উঠা কৃষক প্রীতির
চমৎকার এক খেলা
এবারই প্রথম বাংলাদেশে
বসছিল তার মেলা।

শখে হলেও ধান কেটেছে
ছাত্র পুলিশ আমলা,
যদিও তা ছিলরে ভাই
গরীব জনের মামলা।

চড়া দামে ধান কেটেছিস
ঠেলা এবার সামলা
দূর্ণীতির বাতাস পাওয়া
যতো আছিস কামলা।

৯.
ধান বেচন
//
লোক দেখাতে ধান কেটেছো
বেচো এবার ধান,
দামটা যেন সঠিকই পায়
থাকে কৃষকের মান।

কৃষক যদি বেঁচে থাকে
দুধে ভাতে সুখে,
সারা বাংলার সব মানুষের
ফুটবে হাসি মুখে।


১০.
মাথায় হাত
//
বদর মিয়া কদর করে
ধান করেছে চাষ,
গাধার মত মাঠ খেটেছে
আর কয়টি মাস।

বেজায় রকম ফলন হলে
মনে দারুন খুশি,
ধান কাটা‌নোর দাম শুনে
খুশি হলো ভূষি।

ধান কাটাতে কাঠা প্রতি
হাজার টাকা দর,
বদর মিয়ার মাথায় হাত
গাঁয়ে উঠে জ্বর।

রোদ—বৃষ্টিতে কষ্ট করে
ধান করেছে চাষ,
ধান রোয়ে করবেটা কি
কাটবে ঘোড়ার ঘাস?

ধান বেচতেও ফরিয়াদল
বাজার ভর্তি পোকা
ধানের দরে সূচক পতন
পুরাই মেকি ধোঁকা।

বদর মিয়া পণ করে তাই
রূইবে না আর ধান
পেটে–পাতা ধানের চাষে
বাঁচাবে তার প্রাণ।

১১.
ঈদের খুশি
//
খোকন সোনার ঈদের খুশি
ধরেছে সে বায়না,
জামা কিনে পরবে গায়ে
আর কিছু চায় না।

জামা কিনতে দাদুর সাথে
গঞ্জের হাঁটে যায়,
হরেক রকম জামা কেনে
পছন্দে যা পায়।

নতুন জামার গন্ধে খোকার
মন করে আনচান,
ঈদের দিনে পরবে খোকায়
নতুন জামাখান।

নতুন জামা পরবে গাঁয়ে
ঘুরবে পাড়াময়,
পড়শী বন্ধুর বাড়ি যাবে
নেই তো কোন ভয়।

ঈদের খুশি বিলিয়ে দিতে
কার্পণ্য তো নেই,
ঈদের খুশি সবচে বেশি
আনন্দ বিলাতেই।

ঈদের দিনে শহর গ্রামে
পাড়ায় পাড়ায় ঘুরবো
মুক্ত হাওয়ায় পাখনা মেলে
মন খুশিতে উড়বো।

ঈদের মেলায় যাবরে ভাই
কিনবো পুতুল গাড়ি
শ্যামাই পোলাও রান্না খেতে
ছুটবো পড়শি বাড়ি।

ঈদ আনন্দে নতুন জামা
স্বপ্ন সবার বুকে
পথ শিশুদের পরিয়ে দেবো
ফুটবে হাসি মুখে।

১২.
ঈদ আনন্দ
//
ঈদের দিনে শহর গ্রামে পাড়ায় পাড়ায় ঘুরবো,
মুক্ত হাওয়ায় পাখনা মেলে মন খুশিতে উড়বো।

ঈদের মেলায় যাব রে ভাই কিনতে পুতুল গাড়ি,
শ্যামাই পোলাও রান্না খেতে ছুটবো পড়শি বাড়ি।

ঈদ আনন্দে নতুন জামার স্বপ্ন সবার বুকে,
পথ শিশুদের পড়িয়ে দেবো ফুটবে হাসি মুখে।

নতুন জামা পরবো গাঁয়ে চশমা দেবো চোখে,
মন আনন্দে নেচে গেয়ে মাতবো মহাসুখে।

১৩.
ঈদের ভালবাসা
//
সন্ধ্যে বেলায় নীল আকাশে
উঠলে ঈদের চাঁদ,
বেজায় খুশির মনটা নিয়ে
কাটে সারা রাত।

সকাল বেলা মায়ের হাতের
শ্যামাই পোলাও খাই,
আহা কী যে স্বাদ মাখা
তার তুলনা নাই।

বাবার সাথে ঈদের মাঠে
নামাজ পড়তে যাই,
সেথায় গিয়ে পাড়া পড়শী
সবার দেখা পাই।

নামাজ শেষে সালাম করে
সবার দোয়া চাই,
আপন জনের স্নেহের দান
ঈদ সালামী পাই।

বাহারি রঙ পোষাক পরে
পড়শী বাড়ি ঘুরি,
নতুন—পুরান  বন্ধুরা সব
ডানা মেলে উড়ি।

মিলন বারতা নিয়ে আসে
ঈদের বাঁকা চাঁদ।
ঈদের ভালোবাসা ভীষণ
গভীর ও নিখাদ।

১৩.
নতুন জামা
//
খোকন সোনা মান করেছে
কিনবে নতুন জামা,
ওরে তোরা কে রে আছিস
খোকনরে কেউ থামা।

রাজপুত্রের মতন জামা
কিনে এনে দে
জামা গায়ে চুমো খেয়ে
কোলে তোলে নে।

খোকন সোনা হৃদয় কোনা
হাসুক মনটি  খুলে
ঈদ আনন্দে উঠুক নেচে
দুঃখটা যাক ভুলে।