১.
ভূতের ভয়
.......................................................
ছিলাম আমি ভূতের সাথে
শুনলো খোকা বাবু ,
অমনি ভয়ে জড়োসড়ো
হলো ভীষণ কাবু।
মায়ের কোলে মুখ লুকিয়ে
বললো-মা ভয় পাই ,
আম্মু তখন অভয় দিয়ে
বলেন-ভয় তো নাই।
এই না শুনে খোকার মুখে
ফোটে খুশির হাসি ,
আম্মুকে সে জড়িয়ে ধরে
বলে ভালোবাসি।
২.
ভূতের বাড়ি
................................................
বিলের ধারে ভূতের বাড়ি
ভূত মামাদের ঘর,
হেথায় যেতে কঠিন মানা
লাগছে বেজায় ডর ।
কিন্তু হেথায় মাতাল হাওয়া
ভাট ফুলেরই বন,
ঝিলের জলের কোমল ঢেউয়ে
উদাস করে মন।
শাপলা ফুলের পাঁপড়ি পাতায়
মৌমাছিদের মেলা,
পদ্ম ডাটার রঙের আভায়
হৃদয় করে খেলা।
যতই থাকুক ভূতের আড়া
সেথায় যাবো হেসে,
ভূতের সাথে যুদ্ধ করে
ভাঙবো বাধা শেষে।
ভূতের ভয়ে ঘরে বসে
দিন কাটিয়ে দিলে,
সোনার কাঠি রূপোর কাঠি
কখনো কি মিলে?
৩.
নগরে পাখি
..........................................
এই নগরে আজ একটি
পাখি আসবে উড়ে,
আশায় আশায় সবার চোখ
নীল আকাশে ঘুরে।
সেই পাখিটির ডানা হবে
বিশাল এত্ত বড়ো,
ডানার ছায়ায় ঠান্ডা সবাই
ব্যাপার গুরুতর ।
ডাগর চোখে স্বপ্ন ঝিলিক
মিটবে সবার আশা,
শহর হবে সোনার শহর
ধন রতনে ঠাসা।
পাখি পাগল আম জনতা
নেই আজিকে ঘরে,
পাখি এলো ঠোঁটের মধু
অঝোর ধারায় ঝরে ।
পাখির কথায় উঠেন বসেন
সাজান পুজোর থালা,
কেউবা বাঁধেন পায়ে নূপুর
কেউবা গলায় মালা।
পাখির গানে মুগ্ধ সবাই
মাথার ভেতর ছন্দ,
হঠাৎ করেই ছন্দপতন
লাগলো বেজায় দ্বন্দ্ব।
হঠাৎ পাখি নীল আকাশে
ফুরুত উড়াল দিলো,
নগর বাসীর স্বপ্ন সকল
হলো এলোমেলো ।
হঠাৎ করেই নগর বাসীর
পড়লো মাথায় বাজ,
হা করে রইলো সবাই
রাখলো ফেলে কাজ।
পাখি তাদের জানিয়ে দিলো
তাদের সবি ভুল,
নিজের কাজ নিজে নিজেই
করতে হবে ফুল।
কোন পাখি কোন কালে
করেনিকো কারো সমাধান,
আমরা বৃথাই যাই করে
পাখির গুনগান।
কারো উপর ভরসা করা
মেকি আর ফাঁকি,
পাখি আসে পাখি যায়
খুলে দিয়ে আঁখি।
নগর বাসী মনে রেখো
পাখির গুনী কথা,
এদিক সেদিক যাই করি,
কর্ম হোক যথা।
৪.
চরের কাব্য লিখি
--------------------------------------------------
জীর্ণ নদ শীর্ণ নদ ক্লান্ত নদ আহা
মরে গেলেও ডেকে বলি ব্রহ্মপূত্র তাহা।
একদিন এই নদখানি গল্প মনে হবে
বৃদ্ধ কবি নাতির সাথে নদের গল্প কবে।
নদের সাথে সখ্য আমার জনম জনম ধরে
দেহের বল চোখের খাদ্য দিয়েছে হাত ভরে।
সেই নদ এখন মরা খাল বুকে হাটু জল
হাত বাড়ালেই ছোঁয়া যায় নদীর অতল।
সে কে যে সর্বনাশী প্রাণ নিলো তার কাড়ি
আমরা কি খবর কোন রাখছি বলুন তারি।
ক্লান্ত হলেও এই নদটি যে খুবই প্রয়োজন
এই নদ যে জলের আধার যেন মায়ের স্তন।
বর্ষা এলেই প্রাণ ফিরে পায় করে কলকল
চোখের আড়া উদাস বেজায় করে ছলছল।
চশমা কাঁচের উপর দিয়ে চেয়ে চেয়ে দেখি
মাইলের পরে মাইল চর-চরের কাব্য লেখি।
৫.
সামনে পরীক্ষা
................................................।।
পরীক্ষা সামনে চোখ ছানাবড়া
কিসের খাওয়া কিসের খেলা
এসো পড়ি পড়া
পড়তে হবে লিখতে হবে
পরীক্ষা পাশ করতে হবে
হোক যতোই কড়া।
লেখা পড়া করতে হবে
সোনার জীবন গড়তে হবে
এই হবে লক্ষ
শিক্ষা দীক্ষায় বড় যারা
ভালো জীবন পায় তারা
উন্নত হয় বক্ষ।
৬.
অন্ধকারে ভূত
.............................................।
অন্ধকারে ভূত থাকে ভাই
মেলে তাদের , ডানা
মাঝে মাঝে এদিক সেদিক
চমকে দেয় হানা।
গভীর রাতে ঘরের চালে
ঘুঙ্গুর পরে নাচে ,
নেইতো ভূতের বসতবাড়ি
থাকে কদম গাছে।
দাঁত খিঁচিয়ে ভাংচি কাটে
খিলখিলিয়ে হাসে
ক্ষনেক কাঁদে গলা সাধে
খুলুর খুলুর কাশে।
কিংবা ডাকে আয়রে খোকা
মাঠে খেলতে যাই
খেলাধূলার মতন মজা
আর তো কিছু নাই।
৭.
বাবা
.......................................
বাবা তুমি বটবৃক্ষ
ভর দুপুরে ছায়া,
কভু ভুলা যাবে নাতো
তোমার আদর মায়া।
সুখে দুঃখে বাবা তোমায়
চাই যে আমার পাশে,
তোমার খুশি আল্লাহ খুশি
বেহেশত আমার হাসে।
তোমার বুকে রাখলে মাথা
খুব যে শান্তি পাই,
মায়ের মতো তুমিও আপন
আর তো কেহ নাই।
আদর্শ আর শব্দে রঙে
তোমার ছবি আঁকি,
তোমার বিহনে বল বাবা
কেমন করে থাকি।
আমার প্রতি তোমার স্নেহ
হয় না যেনো লীন,
তোমার শ্রেষ্ঠ পথে থেকে
যেন জীবন হয় বিলিন।
৮.
মা
...................................................
জন্ম নিলাম যার কোলে
সে নারী যে আমার সোনা মা
সে বৃদ্ধা হলেও ঘরের খুঁটি
তাকে ভুলা যাবে না।
কর্মক্লান্ত শ্রান্ত দেহে
ঘরে যখন ফিরি
মায়ের কথা মনে হলেই
দুঃখ যে যায় সরি।
মায়ের কোলে মাথা রাখলে
বুকে দুঃখ থাকে না
সে বড় অভাগারে
যে মাকে মা ডাকে না
মায়ের খুশি আল্লাহ খুশি
বেহেশত যে তার পায়ে
দোযকের আলো ক্ষীণ ম্লান
তার আঁচলের ছায়ে।
৯.
ক্রিকেট খেলা
....................................
ওফিস থেকে ফিরে এসে
টিভির সামনে বসি
বাংলাদেশ জিতবে কি না
মনে অংক কষি।
এক দুই তিন করে
পাঁচটি উইকেট পড়ে
মনটা তখন ভেঙ্গে চূড়ে
শূণ্য দেশে উড়ে।
ঠিক তখনই দেখি ভাগ্যে
চকচক করে আশা
দুই জোয়ানে হাত খুলে
ব্যাট করছে খাসা।
হঠাৎ দেখি ছয় বলে
লাগে শুধু তিন
দাঁত খিচিয়ে মারে জোয়ান
বাজে সুখের বীণ।
১০.
বসন্ত ছড়া
................................................।
এই বসন্ত আয় ছুঁয়ে দে
দুইটি চোখের পাতা
আজকে আমি নতুন করে
খুলছি মনের খাতা।
কুয়াশা সকাল বিদায় দিয়ে
রোদেলা অন্য হাওয়া
কত স্বপ্ন আর মধূময় প্রেম
মনে আছে ছাওয়া
হাওয়ায় হাওয়ায় প্রেম উড়ুক
শংখচিলের মতো
শুকিয়ে যাক মনের মাঝে
কষ্ট আছে যতো।
আজকে বুকে লুকিয়ে থাকা
স্বপ্নে দিলাম ফু
ওরে কোকিল যখন তখন
ডাকিস কুহু কু।
১১.
এই আমাদের ঢাকা
..........................................।।
আহা এই আমাদের দেশ
এই আমাদের ঢাকা
এইটা হলো জ্যামের শহর
ড্রেনটাও নয় ফাঁকা
রাস্তায় যার জায়গা নেই
সে ঘুমাবে কোনখানে
এই প্রশ্নের উত্তরখানি
জানে বলুন কয়জনে?
মুখে বলি টাকার শহর
টাকা উড়ে আকাশে
টাকা ধরা বড়ই কঠিন
পথখানি বাঁকা সে।
১২.
মা ডাক
..............................।।
যদিও মা ডাক শ্রুতিমধুর
মনে হয় তা কম
তাই বাঙ্গালী মাকে ডাকছে
মা বদলে মম।
এইটা বোধহয় পাশ্চাত্য নয়
ইন্ডিয়ান রীতি
মা ডাকাতে হয়তো তাই
এত শত ভীতি।
মা ডাকটি খুব যে মধূর
রাখতে হবে মনে
মা ডাক যে পূর্ণ আহা
মানে আর ধনে।
১৩.তালগাছ
তালগাছ এক পায়ে দাড়িয়ে
হাত রাখে বাড়িয়ে
উঁচু গলে চেয়ে বলে
যাবি কে আকাশটা ছাড়িয়ে।
আয় ছেলেরা আয় মেয়েরা
তালগাছ দেখতে যাইরে
তাল গাছের চিপা দিয়া
মামা বাড়ি যাই।
মামাবাড়ির তাল গাছে
আছে তালের রস
তাই খেয়ে হবো মাতাল
বলবে সবাই বস।