একদিন বকুল বলেছিলো
এসো আমরা হাত ধরে নাফ নদী পার হই
আর ফিরে আসবো না
আমরা ঘর বাঁধবো-ওপারে ঘন সবুজের কোলে।
আমি বলেছিলাম ওপারে রাক্ষস আছে
ওরা মানুষ ধরে-কেটে কেটে খায়
হালুম হালুম বলে রক্ত শোষে খায়
সেদিন বকুল ভয় পেয়ে
আমার বুকে মুখ গুজেছিলো।
কে জানতো-অনুমান এতো সত্য হবে
রাক্ষসের তারা খেয়ে রক্তাক্ত মানুষগুলো
শ্রাবনের ঢলের মতো সুনামীর মতো হাহাকার নিয়ে
ধেয়ে আসবে এই কোলে
যেখানে বকুল আর আমার পথ আলাদা হয়ে গেছে।
বকুল এখন নাফ নদী রাক্ষুসে দ্যাশ পেরিয়ে বহুদূর
আমি আছি বার্মিস রাক্ষসগুলোর তাড়া খাওয়া
মানুষদের নিয়ে।
বকুলকে একটিবার ডেকে জিজ্ঞেস করতে ইচ্ছে করছে
এসো বকুল দেখে যাও
রাক্ষুসে দেশের মানুষগুলোর উন্মত্ততা
কিভাবে তাঁরা মানবতাকে ধুলোয় লুটিয়ে
মনুষ্যত্বকে করেছে রুগ্ন-বিকারগ্রস্ত-কলেবরহীন।
কিভাবে তাঁরা রক্তগঙ্গা বইয়ে দিয়েছে বার্মার জমিনে +
নাফনদীর শীতল স্রোতে ভাসছে লাশের পরে লাশ
এ যেনো আরেক কারবালা কহর দরিয়া রক্ত-রক্ত-রক্ত।
সেদিন আমি ওপারে না গিয়ে ভুল করিনি
আমারও সুখের স্বর্গ হতে পারতো ধূলোয় লুন্ঠিত
হয়তোবা আমাকেও হতে হতো ভাসমান কোন লাশ
তুমিও হতে পারতে বাস্তচ্যুত কিংবা কোন ধর্ষিত নারী
আমাদের বৃত্তসীমার ব্যাসার্ধ ভেঙ্গে আমায় করেছো ঋণী।
দেখে যাও আমি বেশ ভালো আছি
বাস্তুহারা মানুষগুলো শশ্রুষা করে কেটে যাচ্ছে বেলা
কোথা যাবো আর সুখের স্বর্গ এই বাংলা ফেলে।