জন্ম
-----
দুইশত ছিয়াত্তর দিন ছিলো রক্ত মাংসের এক থলে ,
তারপর বিষাক্ত দুনিয়ায় স্থান পায় নার্সের কোলে,
কোলস্ট্রামের গন্ধ পেয়ে মিটছে খিদে , থামছে কান্না
ও জানেনা তখনো, ক্ষুধা মেটাতে কতো লাগে খাজনা !
শৈশব
------
হাঁটতে- দৌড়াতে তো শিখলে বাপু,
এবার হবে শুরু নিজের পা-এ দাড়ানোর দীক্ষা।
কাঁধে ব্যাগ , ব্যাগে পুঁথি , পুঁথিতে বিদ্দ্যা
শিক্ষকের ছড়ি পড়বে পিঠে, গোগ্রাসে গিলবে শিক্ষা!
কৈশোর
--------
শয়ে গেছে তখন বড়দের চোঁখ রাঙানি আর মা-র ঠেঙ্গানি,
স্তব্ধ দুপুরে, একটু সাহসে, বাড়ির বাইরে - মাঠটা দিচ্ছে হাতছানি।
সাঝবাতি জ্বলে-শঙ্খ বাজে,ছেলে ঘরে ফেরে-পা মোড়া ব্যান্ডেজে
মায়ের হাত গণ্ডদেশ স্পর্শ করে, ফের মন বসে কলমে কাগজে!
যৌবন
-------
হরমোনের ক্ষরণ, অঙ্গের শিহরণ, শরীরে ভালোবাসার ক্ষত ছাপ,
দায়িত্ব কাঁধে , ব্যাগটাও আছে, রোজ অফিস ফিরে ছাড়ছে হাঁফ !
ক্লান্ত শরীর, ছড়ানো দেহ,এরই ফাঁকে ইনবক্সে কেউ দিচ্ছে ডাক,
কীবোর্ডে আঙ্গুল নাচে, ইমোজি যায় আসে, প্রেমটা পূর্ণতা পাক !
প্রৌঢ়
-----
সংসারের টানপোড়ান, বউ এর অভিমান, লেগে আছে রঙ্গ ব্যঙ্গ
রাতে ঘুমানোর আগে একটা সিগারেট আর লাভ-ক্ষতির অঙ্ক।
টেস্ট ইনিংসের চতুর্থ দিন, একটা দুটো পাকা চুল খসছে প্রতিদিন
নিজের ক্যানভাসের রং দিয়ে অন্য কারুর জীবন করছো রঙিন।
বৃদ্ধ
-----
চামড়ার ভাঁজ থেকে স্মৃতিরা উকি মারে,
রন্ধ্রে রন্ধে কারা পথ অবরোধ করে
ক্যানভাসটা হচ্ছে দিনে দিনে ফ্যাকাসে,
পুরানো সবকিছু আজ দেয়ালের কোলাজে!
মৃত্যু
-----
শরীর ঢেকেছে সাদা কাফনে, নাকে গোঁজা সাদা তুলো
চার কাধে তোমাকে ওরা শেষ ঠিকানায় পৌঁছে দিলো,
পাটিগণিতের শেষ অধ্যায় , হিসেব তখন পাপ পুণ্যের
ফুলমালা আর ধুপ ধুনোতে , সঙ্গী তুমি ফাঁকা ফ্রেমের !