কবিতা টা কোনো এক অজানা -অচেনা- অশরীরী - কাল্পনিক রমনীকে নিয়ে লেখা !
পেশায় সে শরীর বিক্রেতা।
কবিতা : হাড় কাটা গলির রমণী
ওই মেয়ে ,
শুনেছিলাম , মাতাল বাপের কামুক দৃষ্টি থেকে
বাঁচতে গিয়ে , বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে এলি।
তা এলি তো এলি এই হাড়কাটা গলিতে?
আগে জানতিস না?
এখানে ওষ্ঠ-যোনি-স্তন -নিতম্ব
মুলোর দরে বিক্রি হয়
জানতিস না , এখানে রাতের , রাস্তায় ,
ল্যাম্পপোস্ট এর তলায় দাঁড়িয়ে
নিজের বাজার দর বাড়াতে হয় ?
তারপর? কখনো বা মাতাল Taxi চালক
কখনো বা বিপত্নীক পুরুষ -
কখনো বা প্রেমিকার থেকে ধোকা খাওয়া যুবক
সবই ওই উপচে পড়া কাম এর শিকার !!
ওই মেয়ে জানিস তুই ,
তোর স্তনে শুধু রক্ত মাংসের গন্ধ
কোলেস্ট্রামের গন্ধ বেরোয় না -
ওই মেয়ে জানিস -
তুই আর মা হতে পারবি না !
তুই কোনোদিন আর লাল লেহেঙ্গা পরে
বিয়ের পিঁড়িতে বসতে পারবি না !
কারুর ঠোঁট তোর শরীরে অবাধ বিচরণ করবে না
রাস্তা পার সবার সময়
কেউ তোর নরম হাত টা আলত করে ধরবে না
আর বলবে না, "পার হবে রাস্তা সাবধানে"।
দুর্গোপূজোর রাতে কেউ তোকে নিয়ে ফানুস ওড়াবে না
জানিস মেয়ে,
তুই মুষ্টিবদ্ধ হাতে পুষ্পাঞ্জলি দিতে বসলে
কেউ তোর দিকে আড়চোখে তাকিয়ে
মুচকি হাসবে না
বরং পেছনে সস্ত্রীক বসে থাকা
তোর রোজকারের খদ্দের টা
তোকে দেখে কিঞ্চিৎ বিব্রত হয়ে বলবে
-" এই মাগি টা আবার এলো কোথা থেকে ,
এতো আমার সংসারে আগুন লাগবে "
তরপর ওই পূজকমটির কয়েকজন এসে
" ধুর হো হারামজাদি " - বলে তাড়িয়ে দেবে
ওই মেয়ে ,
জানিস আজ তুই খুব পবিত্র
তোর সারা শরীর সাদা কাফনে ঢাকা
চোখের পাতা জুড়িয়েছে আজ
নাকে সাদা তুলো
চারিদিকে ধুপ ধুনোর গন্ধ তোর অপবিত্র
শরীরর টাকে পবিত্র করে দিয়েছে
আজকে সবাই তোর চোখের দিকে তাকাচ্ছে শুধু
কেউ আর তোর ৩২-২৪-৩৬
ফিগার টার দিকে তাকিয়ে নেই !
এতো দিন হয়তো তোর চোখগুলোর দিকে তাকালে
অনেক কটা দুঃখের গল্প খুঁজে পাওয়া যেত।
থাকে সেসব কথা ,
যারা তোর শেষ নিঃশাস ত্যাগ এর সাক্ষী
তারাও আজ তোর শবদেহের সামনে দাঁড়িয়ে
আর মনে মনে বলছে
" ক্ষমা করো হে অন্তর্যামী
লাশের সামনে দাঁড়িয়ে আমি
রেপ করা আসামি "!