নামতে নামতে নাকের সামনে হোঁচট খাওয়া ঘ্রাণ শুঁকেই জেনেছি
"আজ শুক্রবার" নিশ্চয় নিচ তলায় আসছে মেহমান
অথবা নিজেরাই করবে পোলাও কোরমায় ভূরিভোজন।
আমি আমার বৃত্ত ছেড়ে ধীরে ধীরে নামতে থাকি
অন্ধকার কুপের মতো গলি বেয়ে অন্ধের মতো হাতড়ে হাতড়ে
মাঝে মাঝে দাড়িয়ে শুনে নিই কারো গোঙানির আওয়াজ
দেয়ালের ভেতর থেকে বেড়িয়ে আসে স্বামী স্ত্রীর পাশবিকতার ছন্দ
শহুরে প্রাচীর ভেদে উড়ে আসে গেয়ো কান্নার আওয়াজ।
আমি নামতে থাকি আরো অন্ধকার সাগরে
মৌমাছির গুন গুনের মতো কারো কন্ঠ নিসৃত গান
ভেসে আসে কারো দরজার ফাঁক গলে,
ভেসে আসে কারো কক্ষ হতে রক মিউজিকের আর্তনাদ।
বেলকনিতে দাড়ানো কারো মিষ্টি কন্ঠের কথামালা
প্রবেশ করে আমার কর্ণগহবরে,
মোবাইল ফোনের ওপাশে থাকা ছেলেটির মনের আবেগ
ধরা দেয় আমার ভেতর আমি থেমে থাকিনা।
আমি হেটে হেটে পাড়ি দিতে থাকি অন্ধকার সাগর,
এই সাগরে সাঁতরানো নিষেধ।
তবুও আমি ডুবে যাই ভাসি না আর,
ডুবতে থাকি; ডুবতে থাকি নতুন ভাবনায়,
"বাড়িওয়ালা বলেছিল লিফটটিকে
যাদুঘরের সম্পত্তি না বানিয়ে মেরামত করবে,
কিন্তু কোথাই কি? কোন কেরামত আলী এসে
আজো তা মেরামত করল না।"
"চকচকে স্টিলের রেলিং দেওয়া অন্ধকার সিঁড়িতেও
আলো মশাল বসানোর কথা ছিল কিন্তু
সে মশালে আগুন আজো কেউ জ্বালালো না।"
হঠাৎ নিচ থেকে টর্চ নামক মশাল জ্বেলে দেয়
নির্ঘুম চোখের অধিকারী বাড়ির নিরাপত্তা প্রহরী
আর পাঠ করে যায় অতি পরিচিত সংলাপ
"মামা আজ পানি পাইবেন না, মটর লিক করছে"
আরো জানিয়ে দেয় "জেনারেটরের তেল শেষ টাকা দিয়েন"।
অন্ধকার সিড়ি ঘর সাতরে সাতরে
নেমে আসি আমি গ্রাউন্ড ফ্লোরে প্রাকৃতিক আলোয়।
পিছনে এক বুক অন্ধকার নিয়ে আমার ফেরার অপেক্ষায় থাকে
আলোহীন অন্ধকার সিঁড়ি ঘরটি।