সংলাপ শেষে আমরা বলি "ভালো থেকো"
কেন বলি? ভালো থেকো বললেই কি ভালো থাকা যায়?
যেদিন ব্রহ্মপুত্রের বুকে বাড়ছিল বানের ঢেউ,
সেদিনও বলেছিল কেউ কেউ ভালো থেকো।
মমেক হাসপাতালের করিডোরে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত,
ক্ষত বিক্ষত শরীর নিয়ে শুয়ে থাকা মুমুর্ষ যাত্রীরাও
শেষ সংলাপে শুনেছিল ভালো থেকো।
এর নামই কি ভালো থাকা?
গত হরতালে, বিস্ফোরিত ককটেলে ঝলসে গেল
যাদের দেহ, যারা হারালো চোখ, প্রাণ হারানো মনির
শুনেছিল ভালো থেকো।
ভালো থাকার বাণী আজ তাদের কাছে মিথ্যা।
ভালো থাকার জন্য, স্রেফ ভালো থাকার জন্যই
রানা প্লাজা থেকে বেরিয়ে আসে হাজার দেহ,
নিথর, প্রাণশূন্য। তবুও কারো ভালো থাকা হয় না।
মহারথীদের রতিক্রিয়ায় যে রমণী হারায় সর্বস্ব,
চলন্ত বাসে, নির্জন রাস্তায়, রূপসী দালানের আড়ালে
তাকেও কেউ শুনিয়ে ছিলো ভালো থেকো।
ভালো থাকার জন্য কত মিছিল, মিটিং হয়,
হয় আমরণ অনশন, অবরোধ, ধর্মঘট
আমাদের ভালো থাকাই কেবল হয়ে উঠেনা।
আমাদের ভালো রাখার জন্য
রাজনৈতিক নেতারা দেন হরতাল
সন্ত্রাসীদের হাতে দেন ককটেল, রিভলভার
নির্মোহ পুলিশের হাতেও থাকে রাইফেল,
ফুল হাতে থাকা আমরা তাতেও ভালো থাকিনা।
আমরা বলি ভালো থেকো, আমরা চাই ভালো থেকো
শরতের মেঘের মতো, শিউলি ফুলের মতো।
কিন্তু আমাদের ভালো থাকা শীতের কুয়াশার মতো
যা সূর্যের তেজের কাছে কেবলই হারিয়ে যায়।
-২৪ নভেম্বর/১৩