আমাদের জন্মদিনে আমরা বয়সের মাপে পাউন্ড সাজিয়ে কেক কাটিনা, আমাদের মায়েরা ১৬ কোটি মুখে খাবার তুলে দিতে দিতে ভুলেই যান তাদের সন্তানের জন্মদিনের কথা। ইচ্ছা থাকলেও তখন তারা আর মোরগ পোলাও রান্না করে সন্তানকে খাওয়াতে পারেনা।
আমাদের জন্মদিনে হলুদ রঙের তৈলাক্ত পত্রিকাগুলো ছাপায়না বিশেষ ক্রোড়পত্র। সরকারী, বিরোধী-দলীয় নেতা কিংবা রাষ্ট্রপতি তাতে ছাপায়না মুখস্থ বাণী। আমাদের আপন সঞ্জননে জন্মদিন পালন নিয়ে কভু হয়না রক্তারক্তি, সংঘাতে হয়না কারো প্রাণহানি।
আমাদের জন্মদিনের সাথে পার্থক্য থাকেনা তার আগের দিনের কিংবা তারও আগের দিনের কিংবা তার পরের দিনের। এই দিনটি জাতীয় দিবস হয়ে সরকারী ছুটি ঘোষিত হয়না। রাস্তার মোড়ে মোড়ে কলঙ্কিত বাক্য সজ্জিত ব্যানারে শোভা পায়না আমাদের জন্য কারো শুভেচ্ছা-বাণী।
আমাদের জন্মদিনের সংখ্যা নিয়ে উত্তাল হয়ে উঠেনা ফেসবুক, কিংবা ব্লগ মিডিয়া। রাস্তার পাশের চায়ের টং ঘরগুলোয় চা খেতে খেতে তর্ক যুদ্ধে মাতেনা কেউ কেক এর ওজন নিয়ে। প্রশ্ন করেনা এই দিনেই কেন জন্ম নিতে হবে?
কুশলী কুশীলবগণ বিজ্ঞাপন নির্ভর টিভির পর্দায় এই দিন ফুটায় না আমাদের নিয়ে কথার ফুল। সেখানে প্রচারিত হয়না দিনব্যাপী অনুষ্ঠান। এই দিনে ফুল হাতে অপেক্ষায় থাকেনা আমাদের প্রেমিকারা। তাদের স্মরণ করিয়ে দিতে হয় আজ কারো জন্মদিন। একান্ত কাছের না হলে এই দিনে আমাদের উৎসর্গ করে কেউ লিখেনা কোন ক্ষুদে বার্তা।
দিনের পর দিন মাড়িয়ে আমরা এক জনমের দায় মেটাতে গিয়ে ভুলে যাই জন্মদিন একটি উৎসবের নাম। আমরা বারোমাসি পাবলিকের কাছে জন্মদিন পালন মানে কতিপয় শব্দের অপচয় ছাড়া আর কিছু নয়।