আমি মাকে নিয়ে কখনোই কিছু লিখিনা,
আমি লিখতে বসলেই আমাকে এসে জড়িয়ে ধরে অন্য মায়ের মেয়ে।
আমি মায়ের সাথে খুব বেশী কথা বলিনা,
আমার সকল কথা জুড়ে থাকে কেবলই অন্য মায়ের মেয়ে।
আমি মায়ের কথা তেমন ভাবিনা,
আমার সকল ভাবনায় থাকে সেই অন্য মায়ের মেয়ে।
আমি মাকে খুশী করতে চেষ্টা করিনা
আমার সকল ধ্যানে কি করলে খুশী হবে অন্য মায়ের মেয়ে।
আমার লেখার হাজার হাজার স্বার্থ-বাদী “প্রিয়তমা” শব্দের আড়ালে
ঢাকা পড়ে থাকে একটি নিঃস্বার্থ শব্দ “মা”।
অন্য মায়ের মেয়েকে চার অক্ষরের “প্রিয়তমা” শব্দে ডাকলেও খুশী হয়না
অথচ আমার মাকে এক অক্ষরে “মা” বলে ডাকলেই তিনি ছুটে আসেন।
অন্য মায়ের মেয়ের জন্য শত শত কবিতা লিখলেও সে খুশী হয়না,
অথচ আমার মায়ের জন্য একটি লাইন লিখলেই তিনি সবাইকে তা পড়ে শোনান।
অন্য মায়ের মেয়ের শত চাওয়া পূরণ করতে করতে ক্লান্ত হতে হয়,
অথচ আমার মা চান একটু সন্তানের সান্নিধ্য, একবার “মা” ডাক।
আমার মা আমাকে কখনোই জানতে দেননি
আমার সুস্থতার জন্য তিনি কতকাল নির্ঘুম,
আমার মা আমাকে কখনোই জানতে দেননি
আমাকে ক্ষুধার কষ্ট বুঝতে না দিয়ে তিনি কতদিন অভুক্ত,
আমার মা আমাকে কখনোই জানতে দেননি
আমার মানুষ করতে গিয়ে তিনি কতটুকু ক্লান্ত,
আমার মা আমাকে কখনোই জানতে দেননি
উনার দীঘল কালো চুল কেন সাদা হওয়ার পথে,
আমার মা আমাকে কখনোই জানতে দেননি
উনার চেহারা কেন আজ এত মলিন।
আজ মায়ের ভালোবাসার প্রতিধন্ধি হয়ে উঠে অন্য মায়ের মেয়ে,
প্রিয়তমার মিথ্যে ভালোবাসায় ভালোবাসা হারায় মা
সন্তান জন্মদানের অপরাধে মায়ের নিবাস হয় বৃদ্ধাশ্রম নামক কারাগার।
হে অন্য মায়ের মেয়ে, তুমিও একদিন মা হবে
সেদিন মাতৃত্বের কষ্টে তুমি কেঁদো না।