শেষ সূর্যাস্ত
বয়স এখন আটষট্টি, সন্ধ্যার সময়,
মাগরিবের আজান ভাসে দূর নীরবতায়।
বারান্দার চেয়ারে হেলান দিয়ে একা বসে,
দেখি সূর্য ডুবছে ধীরে দিগন্তের কোণে।
নীল আকাশ লালিমায় মাখে,
পাখিদের ডানায় ঘরে ফেরার তাড়া।
ঝিঁঝিঁ পোকার সুরে ভরে যায় সন্ধ্যা,
কিশোরেরা মাঠ ছাড়ে ঘর্মাক্ত দেহে,
সূর্যের আলোয় তা মুক্তর মতো জ্বলে।
শহরজুড়ে ক্লান্ত দিনের রেশ,
চায়ের টেবিলে তরুণের ভিড় জমে।
নবদম্পতির হাতে হাত, চোখে স্বপ্ন,
ঠোঁটে ঠোট রেখে প্রেমের ছবি আঁকে।
মা রান্নাঘরে সন্তানের কথা ভেবে,
হরেক রকম পদ তার হাতে সাজে।
দম্পতিরা মেশে খুনসুটি আর কথায়,
পৃথিবী চলে তার চিরচেনা গতিতে।
এত কিছুর মাঝে বসে আছি একা,
জীবনের শেষ প্রান্তে, শান্তির খুঁজে।
ভাবি—না আছে প্রেম, না ভালোবাসা,
শুধু আছে এক ঘর স্মৃতি আর
তোমার দেয়া সেই বিড়ালছানা।
তোমার ছোয়া,ভাবনাগুলো রয়ে গেছে
কিন্তু তুমি নেই,তবু আছো স্মৃতির গভীরে
ছোট্ট বিড়াল ছানা শুয়ে আমার পাশে,
এভাবেই কাটে জীবন একাকীত্বের মাঝে।
আজকের সূর্যাস্ত হয়তো আমার শেষ,
তবু মনে হয়, তুমি যেন আমার পাশে।
তোমার কোমল হাতে স্পর্শের আশ্বাস,
সূর্যাস্তের আলো ম্লান হয়ে আসে।
রঙিন পৃথিবী নিভু নিভু আলোয় মেশে,
শেষ প্রহরে এক অদ্ভুত শান্তি—
যেনো তুমি আমায় ছুঁয়ে আছো,
আমার শেষ সূর্যাস্তে।