আমার একজন প্রিয় মানুষ ছিলেন।
সবারই থাকে এমন।
হঠাৎ করেই একদিন ফোন পেলাম তার
পরিচিত প্রিয় কণ্ঠ শুনতে পাচ্ছি
ভারী কণ্ঠ শুনে বুঝে গিয়েছিলাম
তুলোর মত নরম মানুষটা ভীষণ কষ্টে আছেন
আগে মানুষটার কষ্টের কারণ ছিলাম আমি।
আর আজ অন্য কেউ।
আগে আমার কারণে কাঁদতো
এখন কাঁদে অন্য কারো কষ্টে
এ কথা থেকে ওকথা
চলে এলো আমাদের একসাথে কাটানো,
পুরোনো দিনগুলোর স্মৃতি।
তাঁর কণ্ঠের ভার যেনো আরও কয়েকগুণ বেড়ে গেলো।
প্রবল হচ্ছে নিঃশ্বাস, থেমে থেমে আসছে শব্দ
আমাদের প্রথম দেখা,
আমার নীল সোয়েটার, তাঁর গোলাপী শাড়ি
তাকে সেদিন অপরূপ দেখাচ্ছিলো
শহরের লেক ফেব্রুয়ারির নরম কুয়াশায় ঢাকা
প্রথম দেখাতেই প্রেম, আচমকা যখন কাঁধে মাথাটা রাখলো
আমার বুকের মধ্য দিয়ে হাজার হাজার যুদ্ধবিমান ছুটে যাচ্ছিলো
আমি অনুভব করলাম তাঁর নিদারুণ উষ্ণতা, তাঁর কোমল হাতের স্পর্শ
তারপর কত রাত নির্ঘুম কেটেছে আমাদের
তাকে বললাম, আমি এখনো রাত জাগি
নির্ঘুম কেটে যাচ্ছে দিনের পর দিন, মাসের পর মাস
আমাদের শেষ যেদিন দেখা,
আমাকে জাপটে ধরেছিলো সে।
কেনো ধরেছিলো, কি ভেবে ধরেছিলো আমি কখনো জানতে চাইনি
দীর্ঘদিন ধরেই তাকে প্রশ্নটা করবো করবো করেও
সেদিন আর জিজ্ঞেস করতে পারলাম না।
সুকান্তের সাথে বসে
আমার প্রিয় মানুষ নিয়ে কথা বললে
সে সবসময়ই খুব মন দিয়ে শুনতো
সুকান্তও চলে গেছে,
তেমন নিবিড়ভাবে এখন আর কেউ শোনেনা আমার কথা
সুকান্ত বলতো, প্রাক্তনের কথা চিন্তা করে মন খারাপ করবেন না দাদা।
আমি তাকে থামিয়ে দিয়ে একবারই বলেছিলাম,
“প্রিয় মানুষেরা কখনো প্রাক্তন হয়না!”
তারপর সে আর কোনোদিন প্রাক্তন শব্দটা মুখে আনে নি।
আমি এখনো নির্ঘুম কাটাই রাতের পর রাত
ঘোরের মধ্যে কত বিচিত্র ঘটনা চোখের সামনে দিয়ে দৌড়াতে থাকে
বুকের মধ্যে যুদ্ধবিমানের বদলে কামানের ধাক্কা এসে লাগে
তখন আমার প্রচুর কষ্ট হয়। আমার খুব দম বন্ধ লাগে।