তুমি ভালো থেকো
মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন

সেদিন ছিল ঘোর বরষা, প্রচন্ড বৃষ্টি -; আমি ছিলাম দোতলার বারানাদায় আর তুমি ছিলে নিচ তলার দরজায় ; আমারী চোঁখের সামনে তুমি আমারি সন্তানদেন হত্যা করেছিলে ; একটি নয়, দুইটি নয়, দশ দশটি সন্তান ; শুধু তাতেই ক্ষান্ত থাকনি ; দস্যুর মত ছিড়ে ছিড়ে বৃষ্টির জলে উঠোনের মধ্যে ভাঁসিয়ে দিয়েছিলে আমারী সামনে ।

আমি সেদিন তোমায় কিছু বলতে পারিনি ; শুধু বাক-রুদ্ধ ভাবে ম্লান হাসি নিয়ে তাকিয়ে ছিলাম তোমার ছলনা দৃপ্ত চেহারার পানে ; ভাবছিলাম, যে কিনা আমার পায়ের আওয়াজ শুনে দৌড়ে চলে আসতো জানালায় , সে কিনা আজ আমার সন্তানদের ধ্বংস করছ । যে প্রত্যেহ পরীক্ষা দিয়ে এসে প্রশ্ন দেখানোর ছলে , নাওয়া খাওয়া ছেড়ে গল্পে মশগুল থাকতো সে আজ এমন হলো কি করে ! ঈদের দিনে সমস্ত আনন্দ ছেড়ে দিয়ে যে একান্তই আমার হাত ধরে পাড়ার বন-বাদারে নদীর ধারে ঘুরে বেড়াতো সে কি করে এতটা বদলে যেতে পারে !! কত রাত জেগে সেল ফোনে কতইনা বলে ছিলে - তোমায় ভালোবাসি ; আর আজ সে ভালোবাসা নিজ হাতে ভাসিয়ে দিলে উঠানের জলে ।!!

ভাবনার দেয়ালটা চুপি চুপি ভেঙ্গে যায় এক সময় ।

কিছু দিন পর দেখতে পাই, যে হাত দু'টো একান্তই আমার জন্য ছিল, সে হাতে আজ অন্য কারো হাত ; শুনেছি তুমি নাকি বিয়েও করেছ ; তাহলে সাথে যে পুরুষ ছিল সে'ই হয়তবা তোমার বর ;; তাও আবার বলি কি করে , এ রকম অনেকেইতো ছিল তোমার ।

শুনেছি এখন নাকি তুমি বেশ রিষ্ট পুষ্ট হয়েছ ; তোমার কপল, তোমার গ্রীবা, স্তন যুগোল, কোমর সব কিছুর মধ্যেই নাকি আরো আকর্ষনীয়তা এসেছে ; ;

কিন্তু আমি একবার দেখেছিলাম , তবে ওদের বর্ণনার ঠিক বিপরীত ;  তোমার কপলের উপর কপল উঠেছে , গ্রীবা বন্য মহিষের গ্রীবার মত আর দাঁতগুলো মুখ থেকে অদ্ভূত পরিমান বেড়ুনো ; হাতের নঁখগুলো রাক্ষুসির মত ; ঠিক আরব্য রজনীর মালেকা হামিরা - বাহিরে প্রবোল আকর্ষন আর ভেতরে রক্ত খেকো ডাইনি রাক্ষুসী ।

জানি এখন তুমি সুখেই আছো ; প্রার্থনা করি সুখেই থাকো ;; কিন্তু যখনি মনে পড়ে , আমার কতটা রাত্রি জেগে থেকে কাগজে কলমে যে সন্তান প্রসব করেছিলাম, তাদের তুমি আমারী সামনে ধ্বংস করেছিলে ; তখন যে তোমায় আমি ক্ষমা করতে পারিনা ।

তারপরও মন থেকে নয় মুখ থেকে বলি - তুমি ভালো থেকো ......... !!