আমাদের জীবনে কখনো কখনো রং নাম্বার থেকে
ফোন আসাটা জরুরী।

নিয়ম মাফিক সেই ধরাবাধা কাজকর্ম,
রোজ ভোরে ঘুম থেকে ওঠা,
যে যার কাজে বেরিয়ে পরা
কিংবা প্রচন্ড রকমের অলস যারা,
ওরা ওদের আলসেমিতে মেতে থাকে।
চলে বিছানায় এ’পাশ ও’পাশ নড়াচড়া,
আর সে আলসেমি দুপুরে নিজের গুডমর্নিং শুরু করা।

ধরুন রোজকার রুটিন ভেঙে,
রং নাম্বার থেকে কারোর ফোন পেয়ে ঘুম ভাঙলো।

হয়তো ঘুম নষ্ট হলো,
কিন্তু ঐ অলস ছেলে/মেয়েটার
ভোরের আলো আর মৃদু প্রকৃতির স্পর্শটা ছুঁয়ে নেবার সুযোগ করে দিলো রং নাম্বার থেকে আসা ফোনটা।

কিংবা ধরুন না,যে মানুষটা গম্ভীর,
কথা বলে না তেমন!
না ঘরের লোকেদের সাথে,না বাইরের লোকেদের সাথে।
হঠাৎ করে চলে আসা ফোনে,
সে একটু,
এই একটু কথা বললো – হয়তো বিরক্ত হয়েই।
তবুও, সে’তো কথা বললো।

কিংবা যে ছেলেটা বহুদিন ধরে তার লেখার খাতায়
নতুন চরিত্রের সন্ধান দিতে পারছে না,
মিলছে না কবিতার অন্তমিল।
কে জানে! সেই রং নাম্বার’ই হয়তো তার খুঁজে বেড়ানো চরিত্রের খোঁজটা দিতেই আচমকা ফোন দিয়ে বসেছে।

এইতো,এত্তো এত্তো নম্বর কন্ট্রাক্টে সেভ করা।
কই, ওরা তো ছেলেটাকে সাহায্য করেনি কখনো,
না প্রয়োজন ছাড়া কখনো ফোন দিয়েছে।

কিংবা, যে মেয়েটা রোজ নিয়ম করে বারান্দায় বসে
নিজের একলা একটা জীবন পার করে।
নিজের জন্য সাজে,আয়নাতে দেখে মুখ লুকোয়।
যার বউ সাজার প্রচন্ড ইচ্ছে, হয়তো অানমনে মাথায়
ঘোমটাও দিয়ে ফেলে।
সেই মেয়েটার রোজ কোনো না কোনো রং নম্বর থেকে ফোন
আসে।
সেও হাঁপিয়ে গেছে।

কিন্তু ধরুন, ওপাশ থেকে হুট করে কেউ বলে বসলো
‘শুনছো – তুমি যে রোজ সেজে বারান্দায় বসে থাকো
আমি অফিসে যাবার সময় রোজই দেখি।
তবে সবুজ টিপ’এ
তোমায় কিস্তু মানায় না,লাল টিপ দিও কাল
কেমন? ‘
মেয়েটা হাসে, ফোনটা বুকের কাছে জাপটে ধরে হাসে।

এই যে ধরুন না, আমি
লিখছি।
লিখছি বলতে, চেষ্টা করছি লেখার জন্য।
সেই ছোট্ট বেলায়, চতুর্থ শ্রেণীতে পড়ি যখন
তখন প্রথম কবিতা লিখেছিলাম। হ্যাঁ
আম্মাকে নিয়ে!
তখন আমার নিজের কোনো ফোন ছিলো না,
না থাকাই স্বাভাবিক।

কতোদিন কতো বার যে কতো রং নম্বরের ফোন রিসিভ করেছি।
‘না এটা তাঁর নম্বর নয় ‘ ‘আপনি ভুল নম্বরে ফোন করেছেন’
এই তো, এসব বলেই রেখে দিতাম।

এখন আমার ফোনে শতসহস্র নম্বর,অনেক
তবুও হাতে গোণা দু চারটে নম্বর ছাড়া কেউ ফোন করে না।
হয়তো প্রয়োজন নেই,নয়তো তাদের কোনো কাজে আসবো না আমি,সে জন্য!
কিংবা ব্যস্ততার ছদ্মবেশ।

এমনি করে,হয়তো আমার ফোনেও একদিন বহু কল আসবে।
চেনা, অচেনা!

হয়তো সেদিন এ পাশ থেকে ‘স্যরি রং নাম্বার’ বলার জন্য
আমি আর থাকবো না।
হ্যাঁ থাকবো না।

© Farhan Noor Shanto