তোমাকে যখন সামনে পেলাম
তুমি তখন মৃত।
আমার আঁকার ঘরটাতে তোমায় শুয়িয়ে রাখা হয়েছে।
সামনে কাগজ
তুলিগুলোও ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে।
মারা যাওয়ার পর তোমায় বেশিই জীবন্ত লাগছে
শুধু তোমার চোখ দুটো একটু গর্তে ঢুকে গেছে
পেটটা নীচু হয়ে গেছে
নিস্তেজ এ শরীর।
তুলিগুলো কুড়িয়ে এনে, আঁকতে বসলাম।
তোমার ডেবে যাওয়া দুচোখে, কালো রঙ মেশালাম
একটু একটু করে রঙ নিয়ে আঁকছি।
জানিনা কি হচ্ছে ঠিক!
চোখের কোণ দিয়ে নেমে আসা জলে তুলির রঙটা
আরেকটু হালকা করে নিয়ে, আবার আঁকায় মন দিলাম।
তোমার ভেজা চুল, মুঠো বন্দি করে
তুলির বানালাম।
ছোট তুলিতে হচ্ছিলো না কিছুতেই।
তোমার পেট, নাভিতে বাহারি রঙ মিশিয়ে
তোমার অবয়ব এঁকে নেবার চেষ্টায় মগ্ন আমি।
আঁকার জন্য এত রঙ রাখার জায়গা ছিল না এত
তোমার শরীরটাই আজ রঙ রাখার জায়গা করে দিলো।
লাল রঙটা কম পড়ে গেলো
ভেবেছিলাম একটু রক্ত হলে বেশ হতো।
রক্তে ছবি পূর্ণতা পেত খুব
বেমানানও লাগতো।
এতো সব রঙের মাঝে রক্ত, খাপ খেত না ঠিকঠাক।
তোমার পিঠের ভাঁজের মতো আঁকার কাগজটা কুচকে গেল
বাতাসে।
কি বিচ্ছিরি ব্যাপার।
অদক্ষ হাত তো, তাই এমন হলো।
আমার আঁকার জন্য তোমার দেহখানি কতই না কাজে এলো
তুমি তবু কিচ্ছু বললে না, অভিযোগও করলে না,
ছবিতে নিজেকে দেখে।
হয়তো প্রাণ নেই ছবিতে, কিন্তু তুমি খুশী
আমার ভাবনায়, হাতের স্পর্শে তুলিতে তোমায় কি
অদ্ভুত ভাবে বাঁচিয়ে তুলেছি কাগজে।
তুমি মারা যাবার তোমার দেহ তোমার নয়,
ওটার দাবিদার মাটি, রূহ খোদার
আর তোমার অস্তিত্ব, মন ওসবই কেবল আমার।
হ্যাঁ আমারই।