আমার হাততালির শব্দে আজ
পায়রাগুলো কাঁধের কাছে এসে ভিড় করেছে।
যে ডানা ঝাপটানোতে চমকে যাওয়া,
ভয় কিংবা উড়ে পালানোর কম্পন লেগে থাকতো,
আজ সে ডানায় স্বস্তি, বিশ্বস্ততার ঠাঁই হয়েছে।
আমায় আর হাত মেলে দানা ছুড়ে দিতে হচ্ছে না।
ওরা কাছে এসে ,
খোলা মুঠো থেকে দানা মুখে তুলে নিচ্ছে।
সেবার যে পায়রাটাকে রাগের মুখে,
ঢিল ছুড়ে মেরেছিলাম
আজও ওর ডানাতে সেই চোট রয়ে গ্যাছে।
আগের মতো আর উড়তে পারে না।
নিজের রাগান্বিত, পাষণ্ড সেই মুহূর্তের কথা ভেবে এখনও
বেশ অপরাধ বোধ কাজ করে।
আমি ওর চোখে চোখ রাখতে পারিনা আজও,
জ্বলজ্বল করে।
ওকে নিলাম, ওর গায়ে হাত বুলিয়ে দিয়েছি আজ।
খানিক চুমুও খেলাম।
ও যেদিন সেরে উঠবে,
আবার আগের মতন আমার হাতাতালির শব্দে ডানা ঝাপটা দিয়ে
আমার চশমার ধুলো উড়িয়ে দেবে সেদিন বুঝবো,
ও আমায় ক্ষমা করে দিয়েছে।
অপেক্ষায় আছি!
আমি ওদের খাঁচায় বন্দি করিনি।
ছাদের সিঁড়ি ঘরের সাথে ছোট্ট একটা বাড়ি বানিয়ে দিয়েছি।
ওতে অনেকগুলো জানালা আছে।
আমার মতো, ওরাও রোদ বৃষ্টি সবকিছুই চাইলে গায়ে মেখে নিতে পারে।
সন্ধ্যের পর আমি যখন ছাদে হাটতে যাই,
ওরা আমার পায়ের আওয়াজ শুনে,
সজোরে ডানা ঝাপটাতে থাকে।
বুঝে গেছি, আমার আসাটা ওরা বুঝে নিয়েছে।
ওরা চায়, ওদের যেন আমি বাহিরে আসতে দেই।
আমি, আমার একলা সময়
ছাদ আর পায়রাগুলো।
এই আমার বেঁচে থাকা
আমাদের বেঁচে থাকার একটা ছোট্ট সংসার।