কিছু অপ্রস্তুত মুহূর্ত ভালোবাসি সদা।
মনের ভেতর,স্মৃতিচারণ হতে থাকে সেসব
গোপনে ভাবতে ভালো লাগে।
সহসা নাড়িয়ে দেখা যায় না ওসব।
এসব অপ্রস্তুত মুহূর্ত, কিছু কাজ - অকাজ
হোক না ভালোমন্দ,
হিসেব করে কি হবে তাতে!
এক ঢিলে প্রথম ফল পাড়ার সে মুহূর্ত,
কিংবা ছোট্ট নুড়ি পাথরের টুকরোতে বন্ধুর মাথা বরাবর
ছুড়ে মারার খানিক আনন্দ,
তার তেড়ে আসা, এক অদ্ভুত ভালো লাগা।
সে'কি আমি তো চাইনি
নুড়ি পাথর টা ওর মাথায় লাগুক,
দৃষ্টি স্থির করে ওসব কাজ করা আমার দ্বারা হয় না।
হলে তো তীরন্দাজ হয়ে যেতুম কবেই!
কিছু অপ্রস্তুত মুহূর্ত ভালোবাসি সদা।
যেদিন ক্লাসরুমে বসে স্কুলের মাঠের দিকে তাকিয়ে,টিফিন পিরিয়ডের ঘন্টার অপেক্ষায় তাকিয়ে ছিলাম,
স্যারের আচমকা প্রশ্নের উত্তরটা ওভাবে বাইরের দিকে
তাকিয়েই দিতে পেরেছিলাম
সেদিন ভীষণ রকম ভালো লেগেছিলো,
তবুও বাড়ি ফিরে সেটা খেয়াল করেছি ।
টিফিন পিরিয়ডের ঘন্টা,
সে'তো সবচেয়ে আনন্দের মুহূর্ত ছিলো।
স্কুলের মাঠে ক্ষুধা পেটে ক্রিকেট খেলার সময়,
বাহিরের ভাজা সিঙ্গারা সমুচার গন্ধে অন্যমনস্ক হয়েছিলাম,
সে মুহূর্তেই ক্রিকেট বলটা তালুবন্দি করেছিলাম,
ম্যাচটাও জেতা সেই সাথে,
তখন আর ক্ষুধার কথা মনেই ছিলো না।
কিছু অপ্রস্তুত মুহূর্ত ভালোবাসি সদা।
প্রথম চা খেতে গিয়ে পুড়িয়ে ফেলা ঠোঁট,
জিহ্বাও খানিক পুড়েছিলো।
বুঝতাম না,
ফুঁ দেয়ার সাথে চুমুকের কতটা সামঞ্জস্যতা থাকলে
খুব সহজেই চা ঠোঁট ছুয়ে গলা অবধি পৌছে দেয়া যায়।
সে'দিন পরে আর পানিই খেতে পারিনি ঠিক করে।
কিছু অপ্রস্তুত মুহূর্ত ভালোবাসি সদা।
রাস্তা দিয়ে হাটার সময়,অলিগলিতে হারিয়ে যাওয়া
আমায় বেশ আনন্দ দেয়।
সরু সরু গলি, এ বাড়ি ও বাড়ি দোকানপাট।
একবার বিকেলে, হাটতে গিয়ে অলিগলির ভেতরে যেতে
যেতে রাস্তা গুলিয়ে ফেলেছিলাম।
একই গলি দিয়ে দুবার ফিরে এসেছিলাম,তবুও রাস্তার
শুরুটা খুঁজে পেতে খানিক কষ্ট হয়েছিলো।
সেদিন বাড়ি ফিরে বেশ বকুনি খেতে হয়েছে।
কিন্তু সে গলি আজও মনে আছে, গুনে গুনে বলে
দিতে পারবো ওখানে কতগুলো মোড় আছে, ক'টা ল্যাম্পপোস্ট।
কিছু অপ্রস্তুত মুহূর্ত ভালোবাসি সদা।
কারণ অপ্রস্তুত মুহূর্তে অনেক কিছুই বলে ফেলা যায়।