পুরোনো শাড়িতে মায়ের গন্ধ খোঁজে
মা হারানো মেয়েটি।
ড্রেসিংটেবিলের ড্রয়ারে রাখা
মায়ের সিটিগোল্ডের দুল, মোটা মোটা হাতের বালা
কিংবা,চশমার বক্স থেকে চশমাটা বের করে
আলতো করে মুছে দেয় কাচ।
অনেকদিন হলো মা’কে আর ছোঁয়া হচ্ছে না,
কি করে হবে?তিনি পরম শান্তিতে ঘুমোচ্ছেন যে।
কাচের গ্লাস,প্লেট হাত থেকে পরে ভেঙে গেলে
সে এখনও ভাবে,এই বুঝি মা রান্নাঘর থেকে এসে
বকাবকি শুরু করলো বলে।
এই বুঝি ডাক দিয়ে বলে,মা এসে দেখ তো তরকারিতে
লবণ ঝাল ঠিকমতো হয়েছে কিনা!
জ্বরসর্দির জন্য স্বাদটা বুঝতে পারছি না’রে,
একটু চেখে দেখ।
এখন আর প্রতিবেলা বাইরে থেকে বাসায় ফিরে,
মা মা বলে ডাক দেবার পর আর সাড়া পাই না।
উষ্ক চুলে জোরপূর্বক তেল দিয়ে দেয় না কেউ,
কেউ বলে না, এদিক আয় তো, চুলে বিনুনি করে দিচ্ছি।
গোসলের পর ভেজা গামছাটা মায়ের বিছানায়
রেখে দেবার জন্য আর বকুনিও খাওয়া হয় না।
প্রতিরাতে তোমাকে জড়িয়ে ঘুমোনোর সময়গুলো
ভীষণ ভাবে তাড়া করে বেড়ায়,মা।
রোজ রাতে তোমার বালিশ বুকে নিয়ে
ঘুমোতে যাই।
তোমার গন্ধ মাখা কাথায় নিজেকে জড়িয়ে ভাবি,
কি এমন করেছিলাম যে,চলেই যেতে হলো।
মা, ভালো থাকো – তোমার মেয়ে নিজেকে সামলে নিতে
শিখে গেছে।
এখন আর কাঁদেনা।
একটা গানের লাইন মনে পরছে,
‘যদি কাঁদো এভাবে তার ঘুম ভেঙে যাবে
তুমি ভেঙে পড়োনা এ রাতে’
কই তোমার ঘুম তো ভাঙে না মা।
© Farhan Noor Shanto