একটা আমার আমির প্রয়োজন ছিল,
মন খারাপে কিছুটা কেঁদে ফেলার ছিল।
পুরো পৃথিবীর মানুষকে অযাচিত ঘোষনা করে
বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে বলার ছিল,
ফিরে পেয়েছি নিজেকে
তোদের সঙ্গতা নিপাত যাক।
হাসি খুশি কিংবা বিষণ্ণতায় বেজে উঠুক
নজরুলের গান,
যে গান রোজ শোনার পরও, হঠাৎ বেজে উঠলে
যেন হাত ছড়িয়ে বিছানায় শুয়ে থাকা যায়।
আয়নাতে রোজ চেনা আমিকে যেন নতুন করে
ভালোবাসতে শেখায়,
হ্যাঁ তুমিই আমার।
বুক চাপড়ে নিজেকে বলি, ব্যাটা পাক্কা অভিনেতা তুই।
এইতো নিজেকে গড়ে নিয়েছিস।

একটা সময়ের প্রয়োজন ছিল,
কিছু বিভৎস রাতের পর যখন
একাকীত্বের দাসত্ব ছেড়ে দিতে পারছিলাম না
ঠিক তখনই, নিজের চিৎকার ফিরে পাবার ছিল।
নিজের রাগ, দেয়ালে স্বজোরে ঘুশি
কিংবা কপাল ঠুকে রক্তাক্ত হবার ছিল।
যে অন্ধকার নিবিড় চলাচল ছিল
সে অন্ধকারে নিজের ছাঁয়াকে ঘুম পাড়িয়ে
চলে আসার ছিল।
বাঁ দিকের দেয়ালটা ভেঙে
গোটা জায়গাটাকে উন্মুক্ত জানালা ঘোষনা করার ছিল।
অট্টহাসিতে একটা চিৎকার বেরিয়ে আসার ছিল।

একটা সকালের জন্য বসে আছি।
হীম ঠান্ডার কাঁপুনির পর
গায়ের চাদর যতখানি দরকার
ঠিক ততখানি।
রাত্রীর কুয়াশার ভিড়ে
মাফলার খুঁজে বেড়াচ্ছে একটা গলাকে।
দূর অন্ধকারে আগুণের শিখা
খুঁজে বেড়াচ্ছে কয়েক জোড়া হাত।
খেঁজুর গাছে, রসের হাড়িটা খুঁজে বেড়াচ্ছে পাখিকে,
ধোয়া ওঠা ভাপা পিঠে অপেক্ষায়,
শিশুর তুলতুলে ছোট্ট এক জোড়া হাতের।
শুধু একটা সকাল হলেই ওসব হয়ে যাবে।

একটা উপন্যাস লেখার ছিল,
ভোর শীত কিংবা রাত্রীর মাঝে লুকিয়ে থাকা
কিছু মানুষের কথা তুলে ধরার ছিল।
মৃত্যুর মতন সত্যি কিছু জীবনের কথা বলার ছিল।
কেউ স্বেচ্ছাবিসর্জনে পাড়ি দেয় একেকটা রাত
কেউ বা রাত জেগে পাহারা দেয়
সন্তানের অনাগত ভবিষ্যৎ এর গল্প লিখবে বলে।
অর্থের কাছে নশ্বর সবকিছু,
গোটা দুনিয়া তো তাই আঙ্গুল নাড়িয়ে দেখায়।
যেখানে জন্ম হতে শিক্ষা,কর্মজীবন
এমনকি মৃতদেহ নিয়ে অবধি অর্থের সাথে যুদ্ধ চলে।
অথচ মৃতদেহর চেয়ে কফিনের দাম বেশি!  
এসব ভাবনা উপন্যাসে ঠেসে জাপটে ধরে
এঁটে দেয়ার ছিল।

একটা সমাপ্তি দেখার ছিল,
আধপড়া কোনো গল্প কবিতার শেষটুকু পড়ার ছিল।
অসমাপ্ত আড্ডাটুকু শেষ করার ছিল।
যত বড় বড় গবেষণা স্থগিত,
যত লেখা আটকে গেছে লেখকের মৃত্যুতে
সেসব শেষ করার জন্য তারা ফিরে আসুক
লিখে যাক সমাপ্তির গান।
কথায় আছে,
শেষ থেকে শুরু।
এই সমাপ্তির শুরুটা শেষ হোক তবে খুব করে।
যেন সমাপ্তি শব্দটার সমাপ্তি দেখে যেতে পারি।