একটা দিন কাটানোর ছিল,
হ্যাঁ একটা দিন।
মাঝরাত্রিরে আঁধার আর চাঁদকে ঘুম পাড়িয়ে,
নিজে ঘুমোনো।
ঘুম থেকে ওঠার পর, আবার ঘুমিয়ে পড়া অবদি।
একলা একটা বারান্দায় দাঁড়ানোর ছিল।
কখনও ছাদের ঘরে, সাজানোর সিঁড়ির ধাপে
কিংবা ছাদের এক কোণে,যেখানে রোজ শৈশব ঘুড়ি
ওড়াতো।
কিংবা আধশোয়া অবস্থায় জানালার পাশে,
আবার আয়নার সামনে।
একটা দিন কাটানোর ছিল,
হ্যাঁ একটা দিন।
একলা পুকুর ঘাটে, বর্শি হাতে বসে থাকা
শ্যাওলার গা ঘেষে মাছেদের চলাচল, পুকুরে
নারকেল গাছ, বাঁশঝাড়ের ছায়ায় ঘেরা একটা দিন।
কিংবা মরা কাঠের টুকরোয় বাঁধানো ঘাটে,
পা ডুবিয়ে বসে থাকা।
পাশে কল পাড়ের আওয়াজ, থালাবাসন কলসির শব্দ।
একটা দিন কাটানোর ছিল,
হ্যাঁ একটা দিন।
স্কুলের ঘন্টা শুনে, এক ছুটে দৌড়ে যাওয়া
কিন্তু সে’কি! স্কুল বন্ধ।
ফাঁকা ক্লাসরুম, সাড়ি সাড়ি বেঞ্চ
চক ডাস্টার, ছেড়া নাম ডাকার খাতাটা।
ব্ল্যাকবোর্ডের এক কোণে –
তারিখ,শ্রেণী,বিষয়,উপস্থিত,অনুপস্থিত লেখা।
ভেতরটা মোচড় দিয়ে উঠলো।
এরকম দিন তো চাইনি।
একটা দিন হ্যাঁ একটা দিন।
আমার আধশোয়ার খাট,জানালা, একটা বারান্দা,
সিঁড়িঘর, ছাদের কোণ
কিংবা রোজ নিজেকে দেখা আয়না
ওসব সবই পড়ে থাকবে।
একদিন সব ছেড়ে যেতে হবে, সব।
শুধু পড়ে থাকবে পুকুর ঘাট, কলপাড়
আমার মাছ ধরার বর্শি।
ক্লাসরুম, ফাঁকা সাড়ি সাড়ি বেঞ্চ,
চক ডাস্টার, স্কুলের ঘন্টা।
একটা দিন, হ্যাঁ সেই দিন
যখন ছেড়ে চলে যাবো,
আমায় মনে রাখবে কি ?
© Farhan Noor Shanto