মেঘলা দিন, বৃষ্টির হুশিয়ারি
বাতাসের শাসন চলে।
দূরে দেখি,বাতাসে তোপের মুখে,
ভেসে যায় নৌকা।
শক্ত হাতে একাই সামলে নিচ্ছেন মাঝি।
ওপাড়ে ছোট্ট গ্রাম,
বৃষ্টি এলে, খড়কুটোর একটা বাড়ির দোরের সামনে
দাঁড়িয়ে থাকেন বয়স্ক মা।
ছেলে তার হাটে মাছ বেচতে গেছে।
বৃষ্টির জন্য মাছ ক'টা বেচতে পারলো কিনা
কে জানে!
উঠোন ভেজা, স্যাঁতস্যাঁতে,
চটি জোড়া ভিজে আছে।
টিনের চাল থেকে ঝরে যাওয়া বৃষ্টির ফোঁটাগুলো
মাটিতে ছোট ছোট গর্ত করে দিয়েছে ।
পাশেই মেঠোপথ,
মাথায় তালপাতা নিয়ে হেটে যায় ছোট্ট শিশু।
বৃষ্টি হলে নাকি ক্ষেতের আশপাশে হাঁসেদের ডিম পাওয়া যায়।
গা ভিজে চুপচুপে হয়ে আছে,
হাফপ্যান্টের পকেটে ক'টা ডিম।
ভেজা শরীরে তালপাতা নিয়ে কোনোমতে বাড়ির দিকে ছোটা,
মা বকবে নিশ্চিত।
বকলে বকুক, ডিম পেয়েছে
সে'কি কম খুশীর ব্যাপার নাকি।
কাদামাটিতে শিশুদের,
মাটির হাড়িপাতিল বানানো,
হাত মুখ গাল জুড়ে কাদায় লেপ্টে থাকা।
পুকুরে বৃষ্টির ফোঁটাগুলো বেশ বড় বড় দেখায়,
তবে,কচুরিপানা থাকায়
খানিক আড়ালে চলে যাচ্ছে বৃষ্টির ফোঁটাগুলো।
পানিতে ভেজা,পচা পাটের গন্ধ,,
কে জানতো আজ ওমন বৃষ্টি নামবে।
দু চারটে দিন শুকনো ছিলো আর,
সামনের বুধবার হাটে নিয়ে বেচে দেয়ার কথা।
রাস্তার দু পাশে ,
সারিবদ্ধ ভাবে মেলে দেয়া পাটগুলো
দড়ি পাকানো হবে কিছু,
বাকিটা খদ্দেরদের জন্য।
এই বর্ষায় প্রতিটা গ্রামেই চেনা এ দৃশ্যগুলো ঘটতে থাকে।
ভেজা মাটি, কাদা, স্যাঁতস্যাঁতে পথ,
মানুষের ছুটে চলা।
এইতো জীবন,
চোখ বন্ধ করে এক দৌড়ে চলে যেতে ইচ্ছে করে আমার।
(২০১৮)