তোমার গা থেইকা মাটির গন্ধ পাইতাছি না,
তোমার নখ,পায়ের আঙুল,গোড়ালিতে
জইমা থাকা শুকনা মাটির কোনো গন্ধ নাই।
তোমার ঐ শরীর থেইকা মুখ ফিরায় নিতাসে
রক্তচোষা জোঁক।
তোমার ভেতর নাকি তোমার অস্তিত্ব নাই,
তুমি নাকি খোলস জড়াইরা রাখছো।
তোমারে ঘিইরা ধরছে আধুনিকতা,
তোমার নাকি অস্বস্তিবোধ হয় মাটির কথা কইলে।
যে কাদা লাইগা গেলে তুমি পরপর কয়েক বার কইরা
গা হাত পা,কাপড় ধুইতে তড়িঘড়ি লাগায় দেও,
সেই মাটি দিয়া যে তোমারে গড়া হইসে,
তুমি সেইটা ভুইলা গেছো।
তোমার গা থেইকা আমি ভেজা গাছের গন্ধ পাইতাছি না,
ভিইজা একাকার হওয়া একটা খোলা মাঠের তীব্র গন্ধ পাইতাছি না।
ব্যাঙ ডাকার শব্দ শুইনা, তুমি বুঝতে শিখলা না
খানিক বাদে বৃষ্টি শুরু হইবো, ঝড় শুরু হইবো।
দূর থেইকা হাঁস,
গরু বাছুরের দল দৌড়ায়া আসলেও
তুমি বুঝতে শিখলা না,
এই ছুইটা বেড়ানোতে কতখানি উন্মাদনা,
কতখানি প্রশান্তি।
ঝড়ের থেইকা ভয়ংকর সুন্দর কিছু আর হইতে পারে না।
আকাশ চমকানোর ঝলকানিতে,
মাটির বাড়ির ছোট্ট জানালার ধারে,
জড়সড় হইয়া বইসা থাকা
একটা বাচ্চা চোখ বন্ধ কইরা আছে।
বজ্রপাতের শব্দটা কানে আসলেই ফের চোখ খুইলা বৃষ্টি দেখতে দেখতে,
হুট কইরা জানলা দিয়া হাত বাড়ায়া বৃষ্টি ছুঁইয়া নিলো।
এই ভেজার গন্ধটা তোমার গায়ে পাই না আমি।
তুমি হাতছাড়া করছো
তোমার নিজের গন্ধটা, তোমার থেইকা দূরে সইরা গেছে।
দমকা হাওয়া বইয়া গেলে, সেই হাওয়ায়
তোমার গন্ধটা আর আমারে,
তোমার কথা জানান দিতে আসে না।
© Farhan Noor Shanto