তোমায় ছুঁতে চাইতে গেলে
তুমি আরও দু পা পিছিয়ে যাও।
তাই তোমায় ছোয়ার সাহসটুকু করিনা।

তোমার ভেতর দিয়ে বয়ে চলে এক সরু গলি,
রোজ হেটে হেটে চলো তুমি,
এক চেনা ফুটপাতে বসো – চা’য়ের কাপ হাতে।
ঠিক আমার পাশেই, কখনও সামনে।

আলোটা দিক ঠিক করে দেয় তোমার,
আলোর রঙ পাল্টায়, নেভে জ্বলে
তোমার বদল হয় না।

তোমার সাথে আমার বেশ সখ্যতা,
চা’য়ের বিলটা আমিই দিয়ে দিই।

আমার চলার আওয়াজ আসে কানে,
চটি জোড়া মাটির বুক ঘেঁষে এঁকে চলে নিজের ছাপ।

তোমার চলার ধ্বনি নেই,
তুমি নীরব।

আমি আদরে পা ঢেকে হাটি, তুমি তবুও আছো।
তুমি একটা সময়ের জন্য দুম করে হারিয়ে যাও,
আবার হুট করেই ফিরে আসো।

মাঝে মাঝে মনে হয়,
তোমায় নিয়ে নিখোঁজ বিজ্ঞপ্তি দেই।
তুমি সে সুযোগটা অবদি আমায় দাও না।

রাতের বাসস্টপেজে হেলান দিয়ে যখন দাঁড়িয়ে থাকি,
অনেকখানি মন খারাপে মাথা নীচু করে বসে থাকি যখন,
তুমি খুব কাছে আসো তখন।

আকাশে তাকালে তোমায় দেখা যায় না।
আমি যেমনি মাটির মানুষ মাটিতে গড়া,
তোমায় সেই মাটিতে তাকালেই ফিরে পাই, খুঁজে পাই।

পৃথিবীর যাবতীয় ক্লান্তি ছেড়ে তুমি আমায় সঙ্গ দাও ফের,
যে ক্লান্তি নিয়ে আমি বাড়ি ফিরি,
চেনা সে গলির পথ ধরে।

তুমি সেই ক্লান্তিতে কাবু হও না,
প্রতিবার বলার আগেই তুমি হাজির।

আমাদের মাঝে যেটুকু দূরত্ব, তা খুব সামান্য
তবুও আমরা সে দূরত্ব ভেদ করে মিশে যেতে পারিনা।

আমাদের আশপাশে কেউ না থাকলেও
আমরা লজ্জা, জড়তা ভেদ করে একে অপরকে জড়াতে পারিনা।

রাতের একলা অবসাদে,
আমরা স্বল্প দূরত্বে অনেক কাছাকাছি থাকি।

এত কৌতূহল, তবুও স্পর্ধাটুকু আসেনা
তোমায় ভেদ করি।

তোমায় ছুঁতে গেলেই তুমি দু পা পিছিয়ে যাও,
নিজেকে নিজে ছোঁয়া গেলেও,তুমি হাতছাড়া হয়ে থাকো।

তুমি ছায়া,
আমারই।
যাকে আমি পৃথিবীর সব থেকে বেশি চিনি, জানি।

আমি নিজেই নিজের বিপরীত।

তোমার সাথে
ছোঁয়াছুঁয়ি খেলবো একদিন।

যদি ছুঁতে দাও!