একলা বদ্ধ ঘরে
নীরবতা হানা দিলে, অন্ধকার বড্ড আপন লাগে।
ওপাশ থেকে কেউ ডাক দিলে, সাড়া দিতে
ইচ্ছে করে না।
হুট করে জ্বেলে দেয়া বাতি,খুলে দেয়া দরজা
খুব বেশি বিরক্ত লাগে তখন।
একলা নিজের বুকের ধুকপুকানি শুনবো সেও
করতে পারা যায় না।
জানালায় উঁকি মারে দু চোখ
রাস্তায় ল্যাম্পপোস্ট, ঝুলে থাকা ঘুড়ি,
দেয়ালের পোস্টার, পড়াতে চাই - বিজ্ঞাপন
ওদেরকে খুব বেশি নিজের মনে হয় তখন।
গলির মাথায় ছোট্ট দোকানের একটা বাতি,
না ওকে বিরক্ত লাগছে না।
শুধু পাখি এসে বসছে নড়েচড়ে যায় ওটা
তখন একটু বিদঘুটে লাগে।
ফাঁকা রাস্তা, নেই গাড়ির আওয়াজ
দূর থেকে ভেসে আসা বেড়ালের ঝগড়া, কুকুরের ঘেউ ঘেউ,
ফুটপাতে প্রলাপ বকতে থাকা পাগল।
কতো মিল আমাদের।
চার দেয়ালের অন্ধকার রুমে,
সবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে
একলা আছি।
আর ওরা,
গাছপালা ল্যাম্পপোস্ট, ফুটপাত জলের কল
মশাদের ভনভন, ধুলোয় ঝাপসা হয়ে আসা চোখে,
ওরাও একলা।
আমার ঘরে, নিত্যদিন বায়স্কোপ দেখি আমি,
খিড়কিতে।
পাশের বাড়ির ছাদে,
রোজ বিকেলে ছেলে বুড়ো মিলে ঘুড়ি ওড়ায়,
গাছে জল দেয়।
ঝড় বৃষ্টি এলে,
ছুটোছুটি শুরু হয়ে যায়, কাপড় নেয়ার জন্য।
রান্নাঘর থেকে ভেসে আসে,ঝাঁঝালো পেঁয়াজের গন্ধ
উথলে পড়া দুধের ঘ্রাণ।
আমি দেখি,
ছোট্ট বাচ্চাটা চিঠি লিখে বেলুনে করে বেঁধে
আকাশে উড়িয়ে দেয়
অপেক্ষায় থাকে,
জবাবের।
আরেক পাশে,
বাবা তার সন্তানকে খেলতে খেলতে,
হাওয়ায় ছুড়ে আবার বুকে জাপটে নেয়।
ভেসে আসে ,
সে শিশুর বাধ ভাঙা হাসির শব্দ।
ওগুলোই আলো ছড়ায় আমার ঘরে।