দুচোখ দিয়া যাহা দেখো ভাই
তাহা, সদা সত্য নয়।
আসল সত্য দেখিতে হলে
আরেক চক্ষুর প্রয়োজন হয়।
মাগো,কেমন আছো?
গহীন রাতে নির্জন নিরালায়
একা বসে কি ভাবো?
অশ্রুভেজা আখি,কুমারী কহিল
যাও দেখি বাপু, তোমরা মানুষ
মানুষ নও কো
পশুর চেয়েও নগন্য তোমরা
তোমরা হিংস্র সর্বগ্রাসী।

পথিক তাহার মস্তকখানা
নিম্নমুখী করিয়া
কহিল-মাগো,হৃদয়ের যত ঘৃণার বোঝা
ছুড়িয়া দাও ফেলি
আগাগোড়া সব খুলিয়া কও দেখি
এ পিতৃতুল্য অভাগারে।
কুমারী কহিল; সালার বেটা সমশের আলী
চাকুরির নাম করে,
বেচিয়া দিয়াছে শহরে আনিয়া
দেহপল্লীতে মোরে।

এই পৃথিবীতে অঢেল মানব,
নেই কোনো মানবতা
অর্থলোভী,স্বার্থলোভী আর
শুধু নৃশংসতা।
অহে বণ্য মানব,অরণ্যে যা
ছাড়ি এ সভ্যালয়।
এ সভ্য প্রাসাদ তোমাগোর নয়
ছাড়ো দেখি এ প্রাসাদ খানা,
তোমরা আছো বলিয়া'ই আজ
কলঙ্কিত রাজা।

রাত্রি আধারে পথ চলিতে লাগিল;
পথিক ও কুমারী
পথিক কহিল; চল দেখি মা
অভিযোগ খানা লিখিয়া আসি
বিচারপতিরে।
কুমারী কহিল; অভিযোগ করিয়া
লাভ নেই কো বাপু, সে চেষ্টা
করিনি বুঝি ক্ষনে
যাইয়া দেখি সমশের বেটা
মদ গিলিতেছে বিচারপতির সনে।

এ জগতে যারা জগৎ রক্ষার
বহিতেছে কাঁধে ভার,
তাহারাই ডোবাচ্ছে এ জগৎ সংসার
তাইতো তাহারা উৎসাহীত আজ
উৎসাহীত তাহাদের উদ্ভট কর্মভার।

এ সমাজে তারা ভালোর মুখোশ
পড়িয়া বেড়ায় ঘুরি
উচ্চ শিক্ষিত নয়'কো তাহারা।
অহে মুর্খের দল!
কাহাদের তুমি সালাম ঠুকো?
সত্য চক্ষু খুলিয়া দেখো
তাহাদের স্থান নিম্ন এ পদতল।

যেদিন তোমাদের সত্য চক্ষু
খুলিয়া যাইবে ভাই,
সেদিন দেখিবে এ তৃ-ভুবনে
তাহাদের থেকে হিংস্র নরপশু আর নাই।