চলে যেতে চাই অনেক দূরে
বিবেকহীন রাজনীতি থেকে।
মানুষ তাড়াবার, মানুষ কামড়াবার নীতিহীন রাজনীতি
গন্ডিবগদ্ধ ভূগোল একে অপরে করে কাঁদা ছুঁড়াছুঁড়ি।
নিষ্ঠুরতার নানা আয়োজন ভয়াবহ মিথ্যার পঙক্তিমালা
জনপদে বহুরূপী ভয়ঙ্কর নরখাদক করছে খেলা।
সারাক্ষণ চলে মিল অমিলের বিবাদ
দেশ গঠনের উদ্যোগ যাক নিপাত।
তত্ত্ব কথার তুবড়িতে সবাই মত্ত
আসল কথা বুঝা হয়েছে শক্ত।
দেখ না দুর্নীতির পথ গেছে দূরে বহুদূরে
কেঁপে কেঁপে চারিদিকে বিষাদের নিষাণ ওড়ে।
প্রতিশ্রুতি স্মৃতি হয়ে হারিয়ে গেছে
কাল অহঙ্কারীকে মহাকাল গিলেছে ।
গোপনে স্বার্থের পকেটে তারা চালায় ছুরি
দিকভ্রষ্ট, পথভ্রষ্ট আত্ম সমর্পিত বর্ণচোরা তুমি।
তোমারে তুমি নিজেই বন্দি করেছ নির্জন নিভৃতে
বর্ণচোরা সর্বদাই ভালো থাকে বুদ্ধিহীনের সংসারে।
স্বজনহারা ব্যথা ভুলে যায় লোভের রাজত্বে
গিলে খেলো গুম করে দিল সমস্ত চেতনাকে।
অর্থ বিত্তের লোলুপতার নৃশংসতায়
কখনও খুন হয়ে অকালে প্রাণ হারায়।
কোটি কোটি ডলার উড়ায় তারাই কালের তোতা
কিছু বলতে গেলেই ভেঙ্গে নাক করবে ভোতা।
বিবেক বিচূর্ণ করে লোভের প্রাসাদ গড়ে
বেঈমানীর কালো স্পর্শে বিবর্ণ হয়ে ওঠে।
তোমার মুখে আমাদের রক্ত, মাংস ঘামের আহার
সোচ্চার কণ্ঠে বলি মিথ্যেই করো তুমি অহঙ্কার।
শাসনের নামে বিলাসিতায় কাটায় সুকৌশলে
মানুষকে পরিণত করেছ দাস বিশৃঙ্খলার শৃঙ্খলে।
মূর্খ শাসক তুমি কি ইতিহাস দেখনি
পৃথিবীতে কখনও কারো রাজত্ব টিকেনি।
কালের দাপটে তারা মানুষের ঘৃণার থুঁথুঁতে
দলা পাকিয়ে শুকায় অবহেলায় রোদ্দুরে।
বারে বারে মৃত্যুপুরী থেকে এসেছে মৃতরা
আজ নামি দামি মানুষের অতিথি তারা।
আজ এখনও মহান শহীদের হাত ধরে
জীবিতরা সব কিছু খায় খুঁটে খুঁটে।
অবেলায় গলিতে গলিতে শহীদরা হাঁটছে
কানামাছি খেলা আনমনে নির্লজ্জরা খেলছে।
প্রলয় অনিবার্য যখন মৃতরা কানামাছি খেলে
জীবিতদের স্বপ্ন আহ্লাদ যায় অকাতরে ঝরে।
লুটপাটের দরজা খুলেছে রাজনীতির বাউলরা
এই নিয়ে তারাই করে কতশত মশকরা।
তাদের তামাশায় সন্তান আমাদের ভুগে হতাশায়
কিসের নেশায় দেশ প্রেমিক বিদেশে পাড়ি জমায়?
বিদ্যায় আজ বুদ্ধিহীন, মেধায় যোগ্যতাহীনরা
সকল মানুষের স্বপ্ন দখলে নিয়েছে তারা।
রাজনীতিতে বিশ্বাস অবিশ্বাসে যায় দিন
শ্রেষ্ঠ সন্তানের হাতে কে দিল অস্ত্র-মেশিন?
শিক্ষাঙ্গণে বিষ মিশিয়েছে তরুণের রক্তে
সেই বিষ ক্ষণে ক্ষণে ধেয়ে ওঠে মগজে।
কত নগর পুড়েছে, কত মানুষ মরেছে
কিছু শিকারী মানুষ ও তাদের বর্বরতায়।
নিষ্ঠুর কাক হৃদয় খায় ছিড়ে ছিড়ে
আসন্ন ঝড়ের ইঙ্গিত দেখি ঘরে ঘরে।
দেখনা আমার চারিদিকে ক্লান্ত মানুষ ঘুমায়
তারা তাদের দায়হীন দায়িত্বহীন স্বপ্ন দেখায়।
মধ্যরাতে নাগরিক ঘুমায় ফুটপাতে পথের ধূলায়
ক্ষুধার দেশে দীর্ঘ পথে কেন মধুর স্বপ্ন লুকায়?
যখন কচিমুখগুলো তাকায় করুণ চোখে
কেমনে মুখ ফেরায় মুখে হাসি টেনে?
পৃথিবীতে জনম ভর আমরা অনাহারী
দ্রব্যমূল্যের বিস্ফোরণে লাগাও না দড়ি।
অভাব আছে অভাব আছে এই দেশে
জোর করে জোর করে খাব কেড়ে।
ক্ষুধা শরীরে ক্ষুধার উত্তাপে ভোট চাই না আমি
ভোটের আগে ভাত চাই, চাই একখণ্ড জমি।
দুঃখ দারিদ্রের দাঘ্রিমায় ওরা প্রতিদিন অস্তিত্ব খোঁজে
স্বাধীন দেশে মানবাধিকারের জন্য তারা লড়াই করে?!
খাদ্য, খাদ্য বলে চিৎকার করছে মানুষ
তোমাদের কি হয় না একটুখানি হুঁশ?
রঙ মেখে তোমরা সঙ সেজেছ সঙ
অবাক চোখে দেখছে সবাই ঢঙ।
ভোট দিয়ে কিনেছি স্বাস্থ্য হীনতা
কারা খুবলে খেয়েছে স্বাধীনতা?
মিথ্যে দিয়ে মহৎ কিছু হয় না সাধন
স্বাধীনতা ক্ষয়ে ক্ষয়ে জীর্ণ এখন।
গণতন্ত্র গণতন্ত্র বলে তারা বিদীর্ণ করে আকাশ
বক্তৃতা ভিন্ন হৃদয়-অন্য মানুষের বসবাস।
গণ মানব যতবার তৃপ্তিতে তাকিয়েছে সম্মুখে
বার বার তারা দ্বিধা দ্বন্দ্বে জড়িয়ে মরেছে।
অস্থিরতা কারো কারো সাথী জনম ভর
কারো ঘাড়ে চড়ে পাড়ি দেয় দীর্ঘ প্রহর।
আজীবন বয়ে যায় নিয়তির হীন পরাজয়
চারিদিকে কালো থমথমে অন্ধকার ভয়।
আইন যখন নীরব
আঁধার তখন সরব।
একদিন সব নীরবতা ভেঙ্গে যাবে
গণতন্ত্র গণতন্ত্র গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হলে।
কত কাল কণ্ঠে কণ্ঠ মিলিয়ে বলিনি
বিশ্বাস চাই পরস্পরে
দেহের অস্থি-মজ্জা ধ্বংস করার আগেই
বিশ্বাস চাই অন্তরে অন্তরে ।
মুক্তির জন্য রক্তাক্ত পিন্ডটা টেনে ছিড়েছে
মানুষতো স্বাধীনতা চেয়েছে প্রাণ ভরে।
আমার হৃদয়ের মরুভূমি তুমি হাহাকার ধ্বনি
অন্তরের ধন স্বাধীনতা তোমারে পেয়েছি।
গণ মানব কাঁদে যেভাবে কাঁদে নদী
ভরে গেছে কষ্টের কণ্ঠে সুরহীন পৃথিবী।
আর কোনদিন যদি হত্যা যজ্ঞ চলে
বাংলায় নেমে আসবে প্রলয়
দালাল, শোষক, শাসক, ত্রাসক, প্রতারক, ঠকবাজ
সেদিন তোমার হবেই পরাজয়।
অনেক রক্তের দামে তৈরি আমার দেশ
আমরা প্রাণ দিয়ে বাঁচাতে পারি স্বদেশ।
শোনো বিজ্ঞ জনগণ ছাড়া আর সবাই জঞ্জাল
গগনে মুক্তির সূর্য দেখো টুকটুকে লাল।
দৃষ্টি ফেরাও বন্ধু দৃষ্টি ফেরাও
আলোর দিকে যাও ফিরে যাও ।
কৌতূহলে শিখব হে পৃথিবী দেখব সভ্যতা
জননীর জীর্ণ হাতে উড়ুক চেতনার পতাকা।