আমরাও হেঁটে-টেটে গেছি
জীবনানন্দের মতো মিছেমিছি
সহস্র বছর না হোক
সত্যিসত্যি হ্রস্বদূর
বাতাবিলেবুর ফুল
হয়ে ফোটে আমাদের হাঁটক-দুপুর
সুগন্ধদুপুর-ঘাস খেয়ে চিৎ চারপেয়ে রোদ-শাবকেরা।
মনে পড়ে হাঁটাপথে
বুদ্ধমতো মোরগের দিন
মাথার খোয়াড় খুলে দিলে
পালিয়ে গিয়েছে যারা
পিতৃস্বত্বা এক নিয়ে অভিনব
সময়ের দীর্ঘ পুরোটাতে
সমস্ত মোরগ-পাশে
কখনো দেখিনি ঘোরে ছা’রা
আমাদের ‘হুশ’ শুনে
এসেছিলো তেড়ে মুরগিই
মোরগের কোনো কিছু যেয়ে আসেনাই !
আমরা হেঁটে গেছি ব্লিচিংপাউডারগন্ধী জোৎস্নায়
মায়ের নামাজের কাপড়-জোৎস্না
আদিগন্ত দড়িতে কেউ শুকোতে দিয়েছে
আমরা তার ভেতরে
বারবার খেয়ে গেছি পাক
শিশুমত সারারাত, রে কল্প দি টাইম মেশিন !
স্পষ্ট মায়ের শোক দানাদার মটরের থোকা
দিয়ে গেছি অচেনাকে,
দিন এনে তারা দিন খায় !
আরো মানবিক-হেঁটে
আমরা আরো গেছি অনবদ্য বনে
বন্দুকের দুধ খেয়ে
দুর্দান্ত বাড়ে সেথা বাঘছানাগুলো
বুড়িগঙ্গা ধরে যায় সেই দুধ, চুরি করে খেয়ে
ঘুমিয়েছি নির্ভার,
ফাটিয়েছি শিমুলফল-মাথা
কি’যে ঘোর আনন্দ আছে তুলা ওড়ানোতে !
ওরকম ঘোর-শোরে হেঁটে গেছি আরো আরো দূরে
চায়ের দোকান মেখে খেয়ে ফেলে স্লাইস স্লাইস রাত
খাবার মধ্যখানে রমণীয় দু’টো-একটি চুল-
মুখে আটকালে তুলে বোনপ্লেটে করেছি বেহাত
বাদুড়ের সাদা-ঘুমও আমরা শুয়েছি আড়াআড়ি-
তারপর উর্বর বীজতলা দেখি গেছি হয়ে
আমাদের বুক চিরে গজিয়েছে আ্যমোনিয়াফুল
ফুলের বর্ণবাদে আলোচনা নেই তবু আমাদের লয়ে
আলোচনা হলেও যে আমাদের ছেঁড়া যেত কিছু
উঁহু, তাও নয়। তবে কেন চাওয়া এতো ?
ক্রুদ্ধ চোখের নিচে কতগুলো ঈমানদার ক্ষেত-
রুটিগন্ধা ট্রেন হয়ে রওনায়, জানা হয়ে যেত !
হেঁটে গেছি আমরাও
জীবনানন্দের মতো
কথার কথা সহস্র বছর না-হোক
মোদ্দাকথাদূর তো নিশ্চয়ই
বৃষ্টির স্তন ফোলা
আমাদের পদক্ষেপ জমে
যে-দিকে হাঁ-করে আছো
ঘোড়ামত স্তন্যপায়ী কাঠ
আমারও গর্ব হয়
ঘোর কাঠপিস দেখা নিয়ে !
আমরাও হেঁটে-টেটে গেছি
যেতে যেতে দু’চোখে মেখেছি
মানুষেরা উহ্য লেবু-চা— বালিমাটিতে এসেছে শুকিয়ে
পাখিরা ছদ্মনামে করে ওড়াউড়ি
প্রেম মাঝেমাঝে আসে সেইন নদী দিয়ে-
ভেসে ভেসে প্লাস্টিক বোতলের মতো !
হেঁটে গেছি আমরাও
একদিন আমরা গিয়ে পৌঁছালাম
এক দ্বিধান্বিত সকালে—
সেখানে মাই-গড ঈশ্বর
উদিত সূর্যের মিঠে-লাল
তামাদি পূর্বের ব্যাবিলন
নাকি-বা এক্সট্রাটেরেস্ট্রিয়াল
কারা যে প্রধানত কুম্ভীর
ভাষাতে স্বর্গীয় পাতা-সুর
হাসিতে আমোদের তুকতাক-
ভিজিয়ে খেতে দেন কর্পূর
সমাধা নীল-মাছি উড়ছে
আলতো ঠোঁটে নিয়ে রোববার
আবার কুলি করে বলছে
ও-হ্যালো, মোবারক জুম্মার
এভাবে খুলে বেড়ে যাচ্ছেই
দেখিকি শত হোলি-পৃষ্ঠা
হরফ-ব্ল্যাকহোলে ঘুরছে
এক আপেল-সকালের নিষ্ঠা
আপেলে আমি বড় আবেগী
মাছিও প্রেমী সেই চোস্তের
যদিও মাছিদের মহাড়ৎ-
নকশী-কাটা স্থানে গোস্তের !
হেঁটে গেছি আমরাও
আমরা মূলত এসব ভেবে যাইনি যে—
আমাদের করতে হবে
ভিটেমাটির খোঁজ
কোথাও আমফুলের বুক থেকে
দরজা খুলে বেরিয়ে আসবেন আম্মা
রাঁধবেন শুকতারা-চালের ভাত
নাগরিক দেয়াললিখন থেকে
অমরত্ব-ফেরজন্মমাছ
আমাদের উপর লাফিয়ে পড়লে
আমরা দাঁড়িয়ে হেসে নিয়েছি ঠা-ঠা করে
আমাদের সামনে
বেহালাবাদকের ঘ্রাণের ওপর বসেছিলো
একটি চুপচাপ প্রজাপতি
আমরা যাকে উড়িয়ে দিয়েছি তার রঙমিস্ত্রি দোষে
আমরা সুখী ছিলাম ?
ছিলাম দুখী ?
বাজে কথা, আমরা ছিলাম না কিছুই
বা নেই !
হেঁটে গেছি আমরাও
আমরা মানে— আমি আর পথ
নির্বাণের কাক এক
আমাদের সামনে ওইতো
আধভেজা ব্রেসিয়ার শোঁকে ।