আমারে ভুইলা যাইবা?
যা-ও! কতটুডুই-বা আর ভুলতে পারবা।

আমারে ভুইলা যাওয়া লইগা,
যেই নীরব নদির ধারে যাইবা।
সেই নদির ধারের ছলাৎ ছলাৎ শব্দটা মনে করাইবো আমারে।
নদীর শব্দটাও চিনাইছিলাম আমি।

নদীর ধারের বাতাসের সুরটা মনে করাইয়া দিবো আমার কথা।
বাতাসে খোলা চুল মুখের উপর থেইকা সরাইতে গেলেও মনে পরবো আমারে।
মুখের উপর থেইকা চুল এগুলারে কানে  পিছনে গুইজা দিতাম আমি।

তাও-  ভুইলা যাইবা?
যাও!

গভীর রাইতে দূর আকাশে যে চাঁন,  তারও যে আমারে ছাড়া একলা লাগে,  তা ভুলবা কি কইরা?
ওই জোছনার আলো তোমার গায়ে মাখাইয়া দিতাম আমি, তা ভুলবা কি কইরা,
চাঁন যহন খোজবো আমারে, তারে বুঝাইবা কি কইয়া?

আমারে ভুইলা যাইবা?
যা-ও! কতটুডুই-বা আর ভুলতে পারবা।

এই গায়ের প্রতিডা পথে, আমরা হাটছিলাম এক-লগে।
 তুমি একলা একলা সেই পথে হাঁইটা গেলে,  একবারো মনে কি পরবো না  আমারে?
এই গেরামের চেনা অচেনা পথ তরজমা কইরা শুনাইতাম আমি।

আমার ছোয়া লাগা প্রতিডা ফুলের গন্দো তোমার কাছে গেলেও কি, তখন আমারে ভুইলা থাকবা?
প্রতিদিনের রোদ আর বৃষ্টির মাঝে যেই সময়গুলা কাটাইছিলাম, সেই সময়গুলারে ভুলবা কেমনে?
তুমি যখন তোমার প্রিয় গানের সুর ধরবা, সেই সুরেও তো আমার ছোয়া লাইগা আছে ।
গান গাইতে গাইতে আমার কথা মনে পরলে, কেমন কইরা গাইবা সেই গান?

আমারে ভুইলা যাওয়ার আর কত চেষ্টা করবা?
কিন্তু জানি, তুমি যতই চেষ্টা করো, আমার স্মৃতিগুলা তোমার হৃদয়ে অমলিন হইয়া থাকবো।
তুমি ভুইলা গেলে, স্মৃতিরা ঠিকই তোমারে মনে করাইয়া দিবো আমার কথা।
তুমি কি সেই স্মৃতিগুলা ভুইলা যাইতে পারবা?

এই গেরামে চলতে চলতে খালি মনে পরবো আমারে।
কেডা আমারে নদীর ধরে বাতাসে নিয়া যাইবো?
কেডা আমারে জোছনা মাখাইয়া দিবো?
কেডা  আমার ফুলের সুবাস ছরাইয়া,  নতুন গানের সুর ধরবো?

ডাকবা, খুজবা, পাইবানা আমারে-
আমিও তোমার লগে আড়ি দিয়া,  মসজিদের পাশেই চুপটি কইরা শুইয়া থাকমু,  একটু শব্দও করমু না।

ভুইলা যাইবা?
যা-ও! কতটুডুই-বা আর ভুলতে পারবা!