আজ ভারাক্রান্ত হৃদয়ে, খুব কষ্টের সাথে পোষ্টটা লিখতেছি, হাত চলতে চাচ্ছে না তবু সবার প্রার্থনা পাওয়ার আশায় লিখতেছি, মানুষের জীবন বড় বিচিত্র! কখন কি হয় কেউ বলতে পারবেনা। এবং তাই হয়েছে, আমাদের “বাংলা কবিতা ডট কম” কবি মালিহা খান আর আমাদের মাঝে নেই, না ফেরার দেশে চলে গেছে, গত বৃহস্পতিবার মস্তিষ্কে প্রচুর রক্তক্ষরণের নেদারল্যান্ডে মৃত্যু বরণ করেন।(ইনাল্লিলাহি ওয়া ইন্নাইলাইহি রাজিউন) আসরের সকল কবি পাঠকের নিকট আমার আকুল আবেদন মালিহা খান এর জন্য প্রাণ ভরে দোয়া করবেন।
নীড় হারা পাখি
মালিহা খান
মাঝে মাঝে নিজেকে মনে হয়, আমি যেন স্রোতহীন নদী,
নেই উত্তাল তরঙ্গ।
অসীম সমুদ্রের মধ্যে হালবিহীন,অসহায় নৌকার মাঝি।
আকাশে উড়ন্ত নীড় হারা এক পাখি,
নীল আকাশের মধ্যে জমে থাকা একগুচ্ছ কালো মেঘ।
মানুষ হয়ে জন্মে , স্বপ্ন-সুখের আশায়
জীবন নদীর তীরে বাসা বেধেছিলাম ভালবাসায়
নিয়তির ঝড়-ঝন্টায় জন্ম-জন্মান্তরের বাঁধন,
ছিন্ন করে আমায় একা ফেলে কেন তুমি গেলে?
নিয়ে গেলে ভালবাসার ঘরের খড়-কুটা সব আঁকড়ে ধরে ।
আমি পড়ে আছি একা
আমার সাথে রয়েছে স্বজন হারানোর হাজারো স্মৃতি।
এই স্মৃতিগুলোই রাতে শীতের কাথা হয়ে
আমাকে জড়িয়ে ধরে থাকে চির-অম্লানভাবে।
আবার সকালে ঘুম থেকে উঠে
ব্যথার স্মৃতির গাঁথা মালা গলায়
পড়েই আমাকে যাযাবর হয়ে ঘুরতে হয় সারাদিন।
সন্ধ্যার পূর্বে মহুর্তে পাখিদের মত নিজ
গৃহে ফিরে মনে হয়ঃ
যে জীবনে আশা নেই?
যে সংসারে সবাই থেকেও নেই,
এ কেমন জীবন-সংসার আমার?
জানি বিধাতার করুনায় বেঁছে আছি।
নিয়তির কাছে আমি বড় অসহায়,
জীবন ও সময় এ কেমন খেলা খেলছে আমাকে নিয়ে?
কেউ কি বলতে পার?
আমার যতোটুকু মনে পড়ে এই কবিতাটা ছিল শেষ কবিতা (ফেইজবুকে)
বিঃদ্র-ছোটবেলায় চোখের সামনে সড়ক দুর্ঘটনা বাবা-মা দুই জনকে হারায়, তখন শ্বাস নালী খারাপ হয়ে যায় আর কথা বলতে পারেনি, দাদার কাছে মানুষ হয়,
এখন সবাইকে ছেড়ে পিতা-মাতার নিকট চলে গেল।
প্রাণের আকুতি
মালিহা খান
আমার প্রাণের আকুতি শুনিবেনা কেহ
পৃথিবী বড় বদলে গেছে,
মনের মাঝে একরাশ ভয় করেছে বাসা
মিছে হয়ে যাবে কি মা আমার ভালবাসা?
শত স্বপনে ভরা আমার এ আঁখি
ছানিতে গেছে যে ঢেঁকে।
হৃদয়ের ফ্রেমে বন্দি যে ছবি
যাবে কি সে মুছে?
বেদনার জালে আঁটকে যে গেছি
আসিবেনা কেহ আমায় ছাড়াতে
মাগো আজ আমি বড় অসহায়,
তোমার কাছে এসে লুকাতে মন চায়।
পৃথিবী বড় বদলে গেছে মা
কেহ ভালবসিতে চায় না
ছলনায় রেখে যায় আমায় একলা করে,
আজ আমি মিলিয়ে গেছি মা আমাবস্যার আঁধারে ।