বৈদ্যুতিক পাখার অবিরাম বাতাসে
আমি আরাধনা করি নিদ্রাদেবীর।
পিঠের নীচে অচেতন নরম তুলোর গালিচা।
কঠিনতম এঁটেল মাটি পুড়িয়ে
প্রস্তুতকৃত কঠিনতর ইটের দেয়াল
সুরক্ষা, সুসজ্জা আর নিরাপত্তার মুখোশগুলো
হাত না বাড়ালেও ছোঁয়া যায়!
তখন কি বৃষ্টির ফোঁটারাও অনুভব করে
আমার উষ্ণ স্পর্শের নিদারুণ অভাব?
বিরহের অগ্নিস্নান শেষে পারে কি
এক ফোঁটা বিশুদ্ধ বৃষ্টি হয়ে উঠতে?

ঝড়ো হাওয়া সশব্দে বাড়ি খায়
আমার বন্ধ জানালার কপাটে।
সকালে ধ্বংসযজ্ঞ দেখে অনুমান করি
রাতের দূর্যোগের ভয়াবহতা।

কিন্তু আমার পূর্বপুরুষ
এই প্রায় নিঃছিদ্র নিরাপত্তার স্বাদ পায়নি।
তার রাত্রিগুলো কেটেছে হয়তো
প্রাগৈতিহাসিক কোন গুহার অন্ধকারে...
তাঁর চেয়ে হাজার বছরের বয়োজ্যেষ্ঠ
কোন ভালুকের প্রস্তরিত মেরুদন্ডে মাথা রেখেই
হয়তো সে চোখ বুজতো প্রতিদিন।
হয়তো প্রতিটি ভরা পূর্ণিমাই উৎযাপিত হতো
গুহার বাইরে...খোলা আকাশটাকে ছাদ বানিয়ে...
তাঁর চওড়া কাঁধের উপর ছায়া ফেলতো অভিমানী মেঘ।
সেই জোছনার ছায়ায় রূপালী হয়ে উঠতো সমগ্র পৃথিবী...

কালো ভালুকটার রোমহর্ষক গর্জনে ভীত হয়ে
এই গুহাতেই পালিয়ে এসেছিলো কতোদিন!
কিন্তু ওই কালো মেঘটার গগন বিদারী চিৎকার
আর তার তীব্র আলোর স্ফুলিঙ্গ
হৃদপিন্ডের সাথে একই তালে নেচেছিলো সেদিনও...

ক্লান্তিকর দিন শেষে, গুহা মুখে বসেই সে দেখেছে মেঘ।
চাঁদ-তারাদের লুকোচুরি খেলা।
মেঘের গায়েই এঁকেছিলো চিরশত্রু
সেই কালো ভালুকের অবয়ব।
চিহ্নিত করেছে হৃদপিন্ড আর মস্তিষ্ক।
তারপর সে আঘাত করেছে তাঁর সমগ্র সত্ত্বা দিয়ে।
কিন্তু তারপরও কোন অমাবস্যায় তাঁর নির্নিমেষ চোখ
আধো তারালোকিত মেঘবতীদের ছেড়ে যায়নি
এক মুহূর্তের জন্যও না...
মেঘের দলকে নির্বিঘ্নে বাসা বাঁধতে দিয়েছে চোখের কোলে
তারা ডেকে এনেছে আরো অনেক
ভেজা ভেজা নরম কোমল থোকা থোকা মেঘ।
এই চোখ, সেদিনও এমনিভাবে...খোলাই ছিলো...



** আবারো মেতে উঠেছিলাম কবিতা-কবিতা খেলায়...সাথে ছিলো, আগের মতই, Mr. আলোকিত অন্ধকার (ছদ্ম নাম)...অতপর বিশাল এই কবিতার জন্ম...