চাঁদ পৃথিবীর উপগ্রহ।
যাহাকে ছুঁয়ে দেখা স্বপ্ন; সে যে শুধুই চাক্ষুষ।
কিন্তু আমি একজন রক্তে মাংসে গড়া সাধারণ মানুষ।
আমারও কার্য সম্পাদনের জন্য দুইটি হাত রহিয়াছে।
পদচারণার জন্য দুইটি পা রহিয়াছে।
দৃষ্টিপাতের জন্য রহিয়াছে, দুইটি মাত্র চোঁখ।
আমারও ঘ্রান নেবার জন্য নাক রহিয়াছে।
শ্রবনের জন্য দুইটি কান রহিয়াছে।
বলিবার জন্য রহিয়াছে, ছোট্ট একখানা মুখ।
তবে তুমি বলিতে পারো?
তবু কেন আমায় চাঁদ বলিয়া মনে করো?
চেয়ে দেখিয়া লও,
ঐ চাঁদ, তার আলো, সৌন্দর্যতা
সব'ই বিলিয়ে দিতেছে, সকলের তরে।
কিন্তু কই? আমি তো পারিনা,
করিতে সকলের সব হিতকর সাধন।
যে জন যতটুকু চায়, যতটুকু মিনতি করে, সেইটুকুও মেলেনা যথাযথ;
হয় নাকো পূর্ণ, তাহাদের যত্ সামান্য চাহন।
তবে তুমি বলিতে পারো?
তবু কেন আমায় চাঁদ বলিয়া মনে করো?
তুমি তো জানো, ঐ চাঁদ সময় মত আসিয়া পড়ে,
আবার সময় মত চলিয়া যায়।
কিন্তু তুমি কখনও দেখিয়াছ?
সে একটি বারের জন্য ব্যাঘাত ঘটায়?
নিশ্চয় দেখনি; কিন্তু এই আমাকে দেখিয়া লও,
কত মানুষকে প্রতিশ্রুতি দেই,
অথচ রক্ষা করিতে পারিনা।
কত দায়িত্ব, কত কর্তব্য'ই না এড়িয়ে চলি;
যথাযথ রক্ষা করতে পারি না।
তবে তুমি বলিতে পারো?
তবু কেন আমায় চাঁদ বলিয়া মনে করো?
কখনও অনুমান করিয়াছ?
সৌন্দর্য্যতা, আলো, এইসব বিসর্জনের মধ্যে
চাঁদের কোন স্বার্থ থাকে না।
বিনীময়ে শুধুই নিরবে হাসিয়া যায়।
আর কিছুই চাহেনা।
পক্ষান্তরে সে, তুমি, নির্বিশেষে আমিও
কাওকে কিছু দিলে, কিছু পাবার প্রত্যাশা করিয়া থাকি;
বিনীময় না পাইলে কিছুই দিতে চাহিনা।
তবে তুমি বলিতে পারো?
তবু কেন আমায় চাঁদ বলিয়া মনে করো?