হিম মাখা কাক ভোরে সোনালি আবছায়া অস্পষ্টতা;
ঘুমভাঙ্গা চোখে চেয়ে থাকে নিঝুম প্রহর, শিশিরের টুপটাপ খসে পড়া।
খেজুর রসের গন্ধে মাতাল চিরচেনা সেই পথে বহুদিন বাদে ফের দেখা;
লাগামহীন সময়ের ঘোড়ার অবাধ্য জিনে মুষ্টিবদ্ধ দু’হাত।
তবুও দু’হাতের ফোকর গলে বেরিয়ে এসেছে অনেকটা সময়।
কুয়াশার মাদকতা পিছ ছাড়েনা যদিও,
দূর পথে ঘোর লাগে অচেনার, থমকে চাওয়া পেছন ফিরে...
কে যায়? ঐ যে ঐ?
পথের ক্লান্তিতে ভুল দেখা বুঝি,
শাল জড়ানো চেনা উষ্ণতার মাঝে অচেনা প্রতিবিম্বের মরিচীকা।
এই পথেই কত শত ক্লান্ত প্রহর, সকাল-সাঁঝে ধেয়ে চলা--
বিলের জলে ডুবসাঁতার,
শাপলা মুকুট মাথায় তুলে রাজকণ্যা সেজে বসা, কল্পিত কোন এক আরাধ্য নগরীর।
কখনোবা নিকোনো উঠোনে পা ছড়িয়ে বসা শীতের দুপুরে,
ওমের আদর চিপে চিপে ছিবড়ে করে দেওয়া সূর্যটাকে বিদায় দিয়ে
ঝুপ করে নেমে আসা সন্ধ্যের কাছে গল্প শোনা।
চেনা চেনা মুখগুলো হারিয়ে গেছে কতদূরে...
কেমন ছিল মার মুখখানা? কতদিন ভেবেছি মনে মনে...
কল্পনায় ছুঁয়ে দিয়েছি কত
মুখের চারপাশে জুড়ে থাকা চেনা চেনা রেখাগুলো।
আঁচলের খুব প্রিয় গন্ধটাকে গায়ে মেখে ‘মা’ বলে ছুটে যাইনি কতদিন
উদাত্ত দু’বাহুর আলিঙ্গনে।
....................................
আমার কিছু মুহূর্তের অসতর্ক প্রলোভনেই
প্রতিচ্ছায়া হেঁটে যায় অনেকটা পথ, গন্তব্যের কাছাকাছি।
দূর থেকে ঢুকতে দেখি চেনা দুয়ারে।
বুকের মাঝে তীব্র গুঞ্জরণে শোরগোল লেগে যায় যেন;
এত কাছে দাঁড়িয়ে তবু...ছোঁয়া যায়না কেন হাত বাড়ালেই!
সব দ্বিধা ঝেড়ে ফেলে এগিয়ে যাই দৃপ্ত পায়ে,
এক ঝটকায় সরিয়ে ফেলি সময়ের আলগা নিকাব।
নিমেষেই হারিয়ে যায় সবকিছু...
সাদা কালো ক্যানভাসে আবারো বিমূর্ত রঙিন বর্তমান।
রঙিন, তবু বিবর্ণ...হিমশীতল...।