তুমি চোখটা বন্ধ করলে নিভে যায় আলো,
মিলিয়ে পড়ে তোমার কাজলে।
তুমি হাসলে অভ্রনীলে রংধনুর রং ছুটে আসে,
আনন্দরা মুখ লুকায় শুভ্র আঁচলে।
দুপুরে তোমার হাতের ঘামে ভেজা দিঘল ফোনটায়,
যখন একমুঠ সংবাদ পাঠিয়ে দিতাম বিবশ হয়ে,
অধীর আগ্রহ চিত্তে সাগ্রহে বসে রইতাম।
এইতো মেসেজের উত্তর আসলো বলে।
" হ্যাঁ" অথবা "না" এর ভিড়ে,
অভিমানী তুমি আটকে দিতে শব্দ, নিশ্চুপ স্তব্ধতায়।
দূরে থেকেও শিকল বাঁধতে আমার ব্যাকুল মনটায় ডেল কার্নেগীর বইয়ের পাতা ছিড়ে ছিড়ে,
একটুখানি মটিবেশন সংগ্রহে রাখতাম।
সপ্রতিভ হয়ে ব্রীড়ানত মুখে বলবো বলে কিছু কথা।
কিন্তু তোমার ফোনের উত্তর মধ্যরাতেই আসে,
হঠাৎ করে; হাবিব ভাইয়ের মত নোটিশ না দিয়ে।
ফোনে ধপ করে সাইরেন বেজে ওঠল একদিন ।
ভাগ্যিস, সেদিনের পর থেকে,
সাইলেন্ট করে রাখি আটপৌরে ফোনটা।
কিন্তু সাইরেন বেজে ওঠে হৃদয়ের কোয়াড্রেটে।
আচমকা, যখনই তোমার ফোনটা আসে।
কিন্তু ফোন শেষ হতেই মিলিয়ে পড়ে কিছু স্বপ্ন,
অব্যক্ত কথা, অনুভূতি, অরুণ স্মৃতি, ধূসর বিস্মৃতি।
ফোনের আড়ালে বহুবার বিহ্বল হয়ে বলেছি,
"আমি তোমাকে ভালবাসি।"
কিন্তু মুখোমুখি কেনো জানি শব্দরা লুটিয়ে পড়ে,
বলা হয়ে উঠে না প্রপেলার মুখো তিনটি শব্দ।
কি আশ্চর্য রকমের মাদকতা এই তিনটি শব্দে!
তোমার পিংক ভ্যানিটি ব্যাগটা জানে,
অনিকেত প্রান্তরের লিলুয়া বাতাস জানে,
মধ্য রাতে বাদরে মুখ লুকোনো চন্দ্রিমা জানে,
হৈমন্তী সন্ধ্যায় মর্ত তারা জোনাকি জানে,
আমি তোমাকে ভালবাসি ; অথচ জানো না তুমি!
বলতে পারিনি কথার খই ফুটিয়ে, মনের রঙিন খাতায়।
পুরুষ মানুষেরা আজন্ম বোকা, নারীর তরে চির খোকা,
ব্যতিক্রম নই আমিও। একটু ও না, একটুখানি ও না।
তবে সেদিন থেকে সাইরেন বাজছে না ফোনে,
মধ্যরাত পেরিয়ে সকাল, আলুথালু অসংযত আমি।
ফোনটা না হয় সাইলেন্ট করে রাখা যায়, কিন্তু মনটা!
মনটাকে যে কেউ কোনদিন রাখতে পারেনি।
তাহলে আমি কিভাবে পারি, পারিনি আমিও।
পুরনো সাঁকো ধরে একাই ছুটে এসেছি তোমার তরে ,
একটুখানি চোখ বুলিয়ে দেখব অতৃপ্ত মনটা ভরে।
কিন্তু এ-কি! এ-কি হবার ছিল কখনও, কল্পনাতীত।
শব্দের ঝড়ে শুনেছি খুব অসুস্থ তুমি, খুব খুব খুব।
বলো তুমি অসুস্থ হলে আমি কি করে রই বদ্ধ ঘরে,
তুমি হীনতায় সূর্য আমার ডুবে গেছে অচেনা অন্ধকারে।
নিজেকে আর পারিনি রাখতে সংযত ,
ছুটে এসেছি তোমার নির্ঘুমতার ঘুম হয়ে,
তুমি খুব রাগি, অভিমানী। কিন্তু রোগের বিরুদ্ধে কি,
চলে এসব, আজগুবি সব। এবার একটু ঘুমু-ও।
মধ্যরাতের ফোন, তুমি আর বেজ না।
একটু ঘুমুতে দাও ওকে, বিভাবরী জাগবো আমি।
এখন না ঘুমলে সকালে ও ঔষধ খাবে কিভাবে!
ও একটু ঘুমাক; আমি না হয় রইলাম আড়ালে,
তবুও তোমার কাছে আমার একটাই অনুরোধ,
মধ্যরাতের ফোন তুমি আর বেজ না।
মধ্যরাতের ফোন তুমি আর বেজ না।