সেদিন হঠাৎ দুই চোখের কোণে
জমে গেল দু ফোটা ক্ষীণ জল,
তাতেই যে ভিজে গেল মন
তবুও রাখছি নিজেকে ধীরস্থির ও অটল।
এটা নাকি ছ্যাকা খাওয়ার গল্প
শুনতেই কিরকম জাগে করুণা বা দুঃখের অনুভূতি,
সেদিন গুলিতে আসলেই ছিলনা করার কিছু
আমি ছিলাম অসহায় এক দর্শনার্থী।
ধাক্কা খেয়েছি জীবনে বারংবার
তবুও ভুলিনি আজও সেই ছ্যাকা,
মেয়েটির নাম ধরে ইচ্ছে করে দিতে গালি
কেমন এটা করতে পারলে তুমি জুলেখা।
একদিন পুরান ঢাকারএক সরু রাস্তায় সামনাসামনি দেখা
পাশ ফিরতে গিয়ে আবার চোখাচোখি,
মেয়েটিকে মনে হল বড্ড ন্যাকা।
দিন গেল আসলো গভীর রাত
আচমকা পড়ল মনে মেয়েটির চেহারা হঠাৎ।
হিসেব বুঝে সময়ক্ষণ মেনে
টহল দিলাম আমি পরদিন,
বন্ধুমহলের আন্তরিক সহযোগিতার
পেয়ে গেলাম জুলেখার খোজ সেদিন।
এক কোচিং সেন্টারে আসত সে নিয়ম করে
আমি তখন ঠায় দাড়িয়ে পাক্কা দু ঘন্টা,
রাস্তার খুটি গুলো ধরে ধরে।
ক্লাস শেষে মেয়ে যখন ফিরে বাড়ির পথে
আমি তখন নিই পিছু তার সাথে সাথে।
প্রতিদিন যেতাম তার পিছনে
এক তীব্র আনন্দ নিয়ে,
ভেবেই নিলাম এই মেয়েকেই চাই
করতে হবে তাকে বিয়ে।
তখনো আমার হয়নি শেষ পড়াশুনা
মেয়েটিই রয়ে গেছিল খুব অজানা।
তাই একদিন অনেকটা সাহস করে
বলে ফেললাম জুলেখাকে
খুব পছন্দ করি তারে।
মেয়েটি তখন এক বৈদ্যুতিক শকের মতো
বসিয়ে দিল জোরে আমার গালে তার হাতের ছাপ,
সেদিন যে মামা বুঝে গেছি আমি
করে ফেলেছি না জানি কত বড় পাপ।
তারপর ও আমি আশায় ছিলাম তার
পিছু নেওয়া ছেড়েছিলাম ওইদিন থেকে,
জীবনে নতুন মোড়ের প্রত্যাশায়
শুরু করেছিলাম পড়াশুনা ভারী অন্যকিছু না দেখে।
গল্পের শেষটা হতে পারতো দারুণ বেদনার
কারণ আচমকা দেড় বছর পর
বিয়ে হয়ে যায় মেয়েটার
এক ধনীর দুলালের সাথে জুলেখা
শুরু করে দেয় তার সুখের সংসার।
কিন্তু এতদিন দেখে চিনেও
মেয়েটি কিছু বলেনি আমায়,
শুধু এড়িয়ে যাওয়ার করে ভান
জায়গা দিতে চায়নি তার মনের জানালায়।
আমি মেনে নিয়েছিলাম তা বেশকিছুদিন পর
ছ্যাকা পরোটা খেয়ে প্রেমের প্রস্তাবে
হুশ ফিরে এসেছিল কঠিন বাস্তবে।
তারপর শুরু হল আমার নতুন জীবন
ধুমধাম করে পাস করে মাস্টার্স,
পেয়ে গেলাম এক বাহারি চাকরি
লাইফে ফিরল তখন সুখের মাস।
জুলেখারা ছিল যমজ দুটি বোন
আরেকটির নাম ছিল সুলেখা,
দেখতেও সে সুন্দর ভারী
একদিন আমাকে চমকে দিয়ে করল সে দেখা।
সুলেখা বলতে থাকে সব কথা
"আমার বোন দিয়েছে ছ্যাকা আপনাকে,
আমি নই জুলেখার মতো ন্যাকা
ভালোবেসে গেছি আপনাকে আড়ালে জীবনের নানা বাকে।
বোন যখন আসত বাড়িতে,
বারান্দার জানালা দিয়ে শুধু দেখে গেছি আপনাকে।
আমি তো স্তম্ভিত শুনে সুলেখার কথা
বুঝে গেলাম দিতে হবে শিক্ষা তার বড় বোনটিকে,
তাই সরাসরি কয়েকদিন বাদে
সুলেখার বাড়ি পৌছে আসলাম বিবাহ প্রস্তাব রেখে।
জমকালো আমার আর সুলেখার সেই বিয়েতে
দাওয়াত পড়ল নিষ্ঠুর জুলেখা বানুর,
আমায় দেখে বর বেশে চমকে গিয়ে সে
ক্ষমা চেয়ে নিল সাথে সাথে বারবার।
আবেগ আর বাস্তবতার চৌকোন পেরিয়ে
খেয়েছিলাম একসময় জুলেখা থেকে ভয়ংকর এক ছ্যাক,
আজ বেশ কয়েক বছর বাদে
ফিরিয়ে দিলাম সেই কষ্ট সুলেখার বড় বোনটিকে অনেক।
বুঝিয়ে দিলাম জুলেখাকে সরাসরি
ছ্যাকার বিপরীত ম্যাজিক।