রাঙা প্রভাতে বৃক্ষের কাছে দাঁড়িয়ে
মুখ তুলে তাকিয়েছি যখনই,
সব শঙ্খচিলেরা মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে
ফিরিয়ে নিয়েছ তুমিও!
বাধাগ্রস্ত পদে আটকেছো বহুবার,
অপমান করেছ, লাঞ্চনা দিয়েছ সহস্রাধিক
পরিত্যক্ত পোশাকে এ পথ-সে পথে হেটে বেড়িয়েছি তবুও
তোমাকে দেখার ইচ্ছায়,
তোমার কাছে আরেক দফায় অপমানিত হ'বার আশায়।
মোহাচ্ছন্ন বিভরে এর সবই সহ্য করেছি, তবে ভুলে যাই নি।
এভাবেই দীর্ঘদিন হারিয়ে গেছে মূর্ছনায়,
তোমার আড়ালে বয়ে গেছে চারুলতার জল।
এর মাঝে সমুদ্র প্রত্যাখ্যান করেছে নোনতা শৈবালকে;
বিবাগ-প্রচ্ছন্ন শৈবাল নিরুপায় হয়ে
মাঘের সকালে গায়ের ওপর যতটুকু শিশির জমে,
ততটুকু শুষে নিয়ে বেঁচে আছে এতগুলো দিন।
প্রকাশ্য দুঃসময়ে আকাশেও চেনে না আর,
এতে তার কিছু যায়-আসে ও না।
মস্তিস্কে বিভ্রম্রর উৎপাদ,
বোধহয় এভাবে কারোরই হুস ফেরে না
শৈবালে মরে পঁচতে শুরু করলে সে গন্ধে ওদের হুস ফেরে।
"তাই বলে কি সে মরে?
সে জানে,
দেহত্যাগ কখনই কোন সমাধান নয়।"
তোমার কাছে জোনাকির আলো একঘেঁয়ে লেগে গেল,
বিশ্বাস করতে শুরু করলে
জোনাকির আলো একদিন হাঁপিয়ে যাবে
নোংরা অমানিশার পিস্টনের চাপে।
তোমার এ ভ্রান্ত বিশ্বাস হতে মস্তিস্কের স্নায়ুতে বিভ্রমের উৎপাদ
যা যথেষ্ট ছিল ক্ষতের জন্মদানে
একরূপ শিল্পের ক্ষতে একচিমটা আচড় বেয়ে এক আস্ত বহুরূপী খাদ!
কেন জানিনা শ্মশানে জ্বলে ওঠা আলোয় তোমাদের চোখ ধাঁধায়,
তোমরা উচ্ছ্বাসে মেতে ওঠো
শ্মশানের আগুন কামনায় চাঞ্চল্য হয়ে পড়ো।
গুচ্ছতুরিরা আজ পথভ্রষ্ট, সংশয়গ্রস্ত ও বিমূঢ়
তারা কি আর জানে না সে আলো ভুল করেও কামনা করতে নেই?
এরপর,
এরপর উপলব্ধি করলাম,
তোমার ওই আকাশচুম্বী অভিযোগের ইতি টেনে যাচ্ছে ক্রমশ, ক্রমাগত।আর তোমাকে ছোঁবার অধিকার হারিয়ে ফেলেছি সে কবেই, সময় হলে তুমিও হারিয়ে যাবে, অপেক্ষা শুধুমাত্র বৈশাখের কোন এক থুমকো আবওহাওয়ার!
"শুধু আমি আর তুমি নই রূপা, এ শহরের প্রত্যেকটা মানুষ অভিশপ্ত।"
এত বিষাদী মানুষের ভিড়েও হাজারো অনুকূল মুহূর্ত আসবে তোমার কাছে,
তবে পরক্ষণেও ভুলবে না আমায়।
প্রত্যেকটি প্রহরের অন্তরায় মনে পড়বে আমাকে,
খুঁজে পাবে আমাকে স্বর্গীয় কলরবে!
আমার নিতান্তই রসহীন-নিরাভরণ ওইসব শব্দের মোহে লুফে যাবে তোমার মন,
নিমেষে উপ্রে যাবে তোমার তুচ্ছ অলীক অহংকার,
জাদুঘরে তুলে রাখা বিবেগেরা ধরা দেবে চোখের আশ্বিনে,
বুঝে যাবে মহাকাশ আর শুকনো ঘাসের প্রাচীরঘেরা প্রভেদ।
যদি কখনো তিক্ত দে'য়ালে মিলেমিশে কিছুটে খেয়ালে হয় তোমার মনভাব,
মনে করিও,
"আকাশ সমান অভিমান জমিয়ে আমার কাছে এসেছিলে,
অদ্রির পাদদেশে টানা সারাংশে দাঁড়িয়ে তোমাকে বুঝিয়েছি
- "ভালোবাসি"
বুঝিয়েছি একতোড়া ফুল কিনে দেবার সামর্থ্যটুকুও তোমার এ প্রেমিকের নেই,
বড়জোর তোমাকে দ্বিতীয় প্রহরের দুই-তৃতীয়াংশ ক্ষণে
উপমার জালে দুটো কবিতা লিখে দিতে পারবে সে,
তুমি সেসব উপমার খুদ ক্ষমা করে দিও"
"ভালোবাসি" না বলেও ভালোবাসা যায় রূপা,
শুধুমাত্র প্রেমিকাকে খুশি করবার জন্য
নিরীহ ফুলের বিচ্ছেদ ঘটানোর কোন দরকার নেই, আদৌ আছে কি?