বহুদিন আগে
কোন যুদ্ধবিধ্বস্ত পুরুষ যুদ্ধ শেষে ঘরে ফেরবার ক্ষণ,
তাকে বীভৎস ভুষণে দেখে এক মহীয়সীর মায়া জন্মালো তার প্রতি।

সে যে কোথা থেকে এলো কর্পূরের সাথে ভেসে ভেসে
আর হুট করে উড়ে বসে লেগে গেল যোদ্ধার প্লটের মাঝে।
যুদ্ধ, রক্ত, লাশ আর হাহাকার-আর্তনাদে বুজে থাকা
সেই যোদ্ধার মস্তিস্কেও অন্যবদ্য এক অনুভূতির সঞ্চার ঘটলো
ক্রমশ মিশে যেতে লাগলো সমস্ত রুক্ষতা।
চূর্ণ হয়ে যাওয়া সেই যোদ্ধাও জোড়া লাগতে শুরু করলো
নোরা হৃদয় মুড়ে গেল সোনায়
যেন এ নারী ছিল এক পরশ পাথর!

সে পুরুষের
ওই নারীর প্রতি মায়া জন্মালো
আবেগ জড়ালো,
স্বপ্নে সে নারীর ছিল এক বিরহী নাম।
কোনদিন কেউ তাকে যে মুল্যটুকুও দেয়নি, সে মহীয়সী দিয়েছেন তাকে অনেকগুণ।

অগ্রহায়ণের উষ্ণ বাষ্পের স্পর্শে দিন কাটছিল অসাধারণ, একসঙ্গে স্বপ্ন বুনেছিল বহু।
স্মৃতিস্বারকে রেণুসুবাসের জলছাপ, আর এত্তগুলো প্রফুল্লতা।
আর এভাবেই কোনদিন,
আবারো জীবনে আরেক যুদ্ধের ডাক
শত পিছুটানের অবসান ঘটিয়ে যেতে হবে আবারো যুদ্ধে
রটে যেতে সেই কুৎসিত নির্মম আধারে আরো একবার

তবে,
এবার জন্মালো মৃত্যুর ভয়, "যদি তোমার দেখা ফের না পাই?"
...

মেঘবালিকা,
তোমায় এখন লিখতে ইচ্ছে করে না আর - তবুও লিখি।
কি জানি, এক অসুস্থ প্রশান্তি পাই নিজের মাঝে।

তুমি,
এমনভাবে এমন সময়ে মহাকালের মুদ্রাপিঠ উল্টিয়ে
পলকের ছায়ায় কাছে চলে আসবে
ভাবিও নি
কেন যে ভাবলাম না
কেন যে তোমায় কাছে ডাকলাম না
কেন যে তুমি দূরে পালিয়ে গেলে আমার থেকে
জানিনা!

আমারই বা কি করার ছিল বলো মেঘ,
জানালার পাশে চুপচাপ বসে থাকা
সে মেয়েটার মতো কারোর সাথে আমার পরিচয় হয়নি যে
যাকে বিশ্বাস করে বলা যাবে
"আমায় তুমি বাঁচিয়ে রেখো তোমার প্রতিটি নিঃশ্বাসে"

তোমাকে ছাড়া আমার প্রতিটি ক্ষণ মরীচিকার অভিশপ্ত দৃঢ় প্রত্যয়ের ন্যায়।
আমায় বেঁচে থাকতে হয়, তাই বেঁচে আছি।

মেঘবালিকা,
আমার মাঝে কেমন জানি এখন এক অনুশোচনার হুঙ্কার;
এ জীবন তো আমাকে দিয়েছে তোমার স্পর্শ, যা চাই নি কোনদিন।
তারপর একসময়ে তোমার করুণা আমার অধিকারবোধে রূপ নিল,
তোমাকে চাইতে শুরু করলাম অনুপ্রভার অগ্রসরে
যে জীবন দিয়েছে আমায় পৃথিবীর বুকে ইন্দ্রালয়ের ছোঁয়া,
তবে সে জীবনে কেন এত বিচ্ছেদ
কেন এত হাহাকার?

মেঘ, তুমি জানো?
আমায় এখন আর মেঘেরা ডাকে না কাছে
আমাকে ফাঁকা নির্জন মাঠের বুকে
কুড়ে কুড়ে শেষ করে দেয় উত্তপ্ত রৌদ্র।
তারা বলে, মেঘদলে নাকি আর বৃষ্টি ঝড়াবে না আমার ওপর।
উপহাস করে বলে,
"যে মানুষরে বৃষ্টি চেনে না, তারে আর কি মেঘের সান্নিধ্যে মানায়?"

এ সময়,
হঠাৎ এক অনুপুযুক্ত মানুষকে বয়ে এনেছিল তোমার কাছাকাছি
তার মায়া জন্মেছিল তোমার প্রতি, আর তোমারও জন্মে তাই।
এরপর,
দানবের গোগ্রাসে এপিটাফ পূর্ণ হয়ে যায় ফাটল ধরা গোলাপের লাশে।
এখানে আছে শুধু এক অপ্রাপ্তিকা নারীর প্রতি
এক প্রভাতের অপূর্ণ অনুরক্তি।

আহা,
যদি সে আকাশে উড়ে বেড়াতে পারতাম
যে আকাশে আমার প্রেয়সী ইন্দ্রালয় হতে সুবাস ছড়াবে, আমার জন্য।

মেঘবালিকা,
আমায় আজ ভাসাও তোমার মাঝে
পৌছাও আমার স্পর্শ রংধনুর সাতচূড়া পেরিয়ে
যেখানে সূর্য অস্ত নামে আরেক সূর্যের অগোচরে!